রোমান্টিক হাসির স্ট্যাটাস | রোমান্টিক ফানি স্ট্যাটাস

 হঠাৎ বিয়ের রোমান্টিক গল্প

হঠাৎ বিয়ের রোমান্টিক গল্প

গল্পঃ_তুমি_লিজেন্ড 🙊✌️

বাসর রাতে খাট ভাঙার গল্প😁


লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল। 


আম্মুকে বিয়ের আগেই বলেছিলাম,বাবাকে বলার জন্য 

আমার রুমের খাট টা চেঞ্জ করে দিতে। খাট টা অনেক পুরোনো হয়ে গেছে,, আর তাছাড়া খাট টা একটু ছোট,, যার কারনে এই খাটে দুজন থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। 


আম্মু বাবাকে কথাটা ঠিকই বলেছিলেন। কিন্তু ঝামেলা বাঁধায় আমার শ্বশুর মশাই। উনি নাকি আমাদেরকে নতুন ফার্নিচার দিবে৷ তাই আমরা লোভে পড়ে আর খাট কিনি নাই😁😁। সমাজে কেউ যদি শ্বশুর বাড়ির খাট বা আসবাবপত্রের লোভে পড়ে এমন পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই অবশ্যই আমার গল্পটা পড়ে সতর্ক হোন। নয়তো আবার পরে বিপদে পড়বেন। 


বিশেষ দিক বিবেচনা করে ২০২৩ সালে সকল পাঠক ও পাঠিকাদের সর্তকতার জন্য এই গল্পটা নিয়ে আসলাম।


ফার্নিচারের কাজ এখনো কমপ্লিট হয় নাই🙁 তাই তিনি বলেছিলেন তোমরা কয়েকদিন একটু কষ্ট করে থাকো।

ফার্নিচার বানানোর কাজ কমপ্লিট হলে আমি তোমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিবো। 


সকল ছেলেদেরকে বলতেছি,ভাই বিয়ে করবেন আপনি খাট ভালো কিনা খারাপ সেটা দেখার দায়িত্ব সম্পুর্ন আপনার। লোভে পড়বেন না, সর্বনাশ আমার মতো ঢেকে আনবেন না। তাই অবশ্যই বিয়ের আগে আপনার ব্যাবহারকৃত খাট টা চেক করে নিন☺️☺️ 


আদেশক্রমে আবদুল্লাহ আল শাহজালাল😁😁


শ্বশুর মশাই যদি বিয়ের আগে ফার্নিচার দিতেন তাহলে আজকে আমাকে এই দিন দেখতে হতো না 🙃


গত রাত ছিলো আমার আর সাদিয়ার বাসর রাত। সাদু তুমি আমাকে বাসর রাতে এই কি দেখাইলা জাদু😁😁


বিঃদ্রঃ সাদিয়া সেটা হলো একবচন, বহুবচনে সাদু, তাই তো সে সব সময় দেখায় আমায় জাদু🤣🤣 

কে জানতো বাসর ঘরে সাদু আমায় করে দিবে কাবু🙉


সাদিয়া হলো আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। বাবাই বিয়ে টা ঠিক করেছিলো। আমার কোনো পছন্দের বাবু না থাকার কারনে আমি এই বিয়েতে রাজি হয়ে গেলাম🥰


গত রাতে রুমে ঢুকতেই সদ্য বিবাহ করা বউ আমার পা ধরে সালাম করলো। এরপর চুপচাপ নিজের মতো 

করে বিছানায় বসে রইলো। আমিও কিছু বলার মতো খুঁজে পাচ্ছি না, অপরিচিত একটা মানুষকে কিই বা বলার আছে।। সময় শুধু বেড়ে যাচ্ছে, দুজনে চুপচাপ। 


আমি বলি, বিয়ে করছে সে যদি চুপচাপ থাকে বা বলার কিছু না পায় তাহলে আমার কাছ থেকেই তো একটু পরামর্শ নিতে পারতো 🙃 এটাকে বলে নিজে খাইতে টান টান ভাসুরের জন্য খাটা রাধ☹️ কারন আমি নিজে

জানি না পরামর্শ দিবো কি🤐🤐


তবে বাংলাদেশে থাকার সময় বাড়ির এক দাদাকে প্রায় জিজ্ঞেস করতাম, "দাদা বাসর ঘরে কি করে ☹️। দাদা মাঝে মাঝে বলতো যার আগা তারে জাগাইবো😳 এখন কিছু জানতে হবে না😇 আগে বিয়ে কর 

তারপর😎 এজন্যই তো জানা হলো না 🤐🤐। সুতরাং আমার কাছে টিপস চাহিয়া লজ্জা দিবেন না🤗🤗


অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর আমি সাদিয়াকে বললাম....


বিঃদ্রঃ দাদার কথাই তো সত্যি, যার আগা তারে জাগায়🙈🙈


আমিঃ সাদিয়া নামটা খুব সুন্দর।


সাদিয়াঃ ধন্যবাদ, আপনার নামটাও অনেক সুন্দর।


আমিঃ মিথ্যা প্রশংসা করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ছেলেদের দুর্বলতা কিসে আপনি জানেন?


সাদিয়াঃ হ্যা জানি।


আমিঃ কিসে?


সাদিয়াঃ মেয়েদের শরীরে।


আমিঃ আমার ক্ষেত্রে তা সম্পুর্ণ ভিন্ন ম্যাডাম।


সাদিয়াঃ যেমন?


আমিঃ আমার দুর্বলতা আপনার এই মেহেদী দেওয়া দুইটা হাতে, আমার দুর্বলতা আপনার হাসিতে, আর আমার সবচেয়ে বেশি দুর্বলতা কোথায় জানেন? আপনার কাজল দেওয়া দুটি অপরুপ সুন্দর চোখে। 


সাদিয়া হয়তো এমন কিছু শুনার জন্য প্রস্তুত ছিলো না।

সে লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে রইলো। 


হঠাৎ করে বারান্দার দিকে তাকিয়ে দেখি রুমের ভিতরে প্রবেশ করছে চাঁদের মিষ্টি আলো। চাঁদের মিষ্টি আলোটাও আমাদের বিশেষ রাতের সাক্ষী হয়ে থাকতে চাইছে। সাদিয়াকে বললাম......... 


আমিঃ চাঁদের আলো আপনার পছন্দ?


সাদিয়াঃ অনেক বেশি।


আমিঃ চাঁদের সাথে কখনো একা একা কথা বলেছেন?


সাদিয়াঃ নাহ তা বলিনি কখনো। চলুন বারান্দায় যাই, চাঁদের আলোর সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসি।


আমিঃ হুমম চলেন।


আমি বারান্দায় চলে আসলাম।। সাদিয়া কিছুক্ষণ পরে ভয়ে ভয়ে আমার পিছনে এসে দাড়ালো। বারান্দায় দুটি চেয়ার, একটাতে ওকে বসতে বললাম, এরপর আমিও বসলাম। মেয়েটা খুবই শান্ত স্বভাবের, কথা কম বলে, হয়তো ভয়ে নয়তো লজ্জায়, তা জানা নেই আমার। অনেক টা সময় দুজন এক সাথে চাঁদ দেখার পর রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে সাদিয়া বললো........


সাদিয়াঃ আমি একটু ওয়াশ রুমে যাবো?


আমার রুমে এটাচ ওয়াশ রুম।।আমি সাদিয়াকে ওয়াশ রুম দেখিয়ে খাটে এসে শুইলাম। ঠিক তখনই সাদিয়া চিৎকার দিয়ে এসে এক লাফে খাটের উপর পড়লো। খুব জোরে ঠাসস করে একটা শব্দ হলো। তারপর তাকিয়ে দেখলাম আমি আর আমার বউ বিছানা ভেঙে নিচে পড়ে আছি। বউয়ের চিৎকার আর খাট ভাঙার শব্দ শুনে বিয়ে বাড়ির সবাই এসে আমাদের রুমের 

দরজায় খট খটট আর জিজ্ঞেস করতেছে কি হয়েছে? তখন আমি বললাম........


আমিঃ সাদিয়া কোমরে ব্যাথা পেয়েছে।


সাদিয়াঃ ওরে বাবা ব্যাথায় মরে গেলাম। কোমর টা ভেঙে গেছে।


এসব বলে সাদিয়া চিৎকার করতেছে।।আমিও কোমরে ব্যাথা পেয়েছি, তাও উঠে গিয়ে দরজা খুললাম। দরজা খুলতেই একে একে সবাই এসে রুমে ঢুকে পড়লো। কিভাবে এমন হলো তা জিজ্ঞেস না করে সবাই মিটমিট করে হাসছে। এটা দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। 


এসবের ভিতরে হঠাৎ করেই চোখ গেলো বাবার দিকে।তাকিয়ে দেখি বাবা আমার দিকে রাগী একটা লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমার চোখ বাবার চোখে পড়তেই বাবা বললো........


বাবাঃ রাম ছাগল একটা।


কথাটা বলে বাবা এখান থেকে চলে গেলো।বাবার সাথে 

মা ও চলে গেলো। কিন্তু মা কিছুই বলেনি। ঠিক তখনই আমার বড় দুলাভাই,, "মানে আমার বড় আপুর জামাই কানে কানে এসে বললো.......


বড় দুলাভাইঃ সবকিছু রয়েসয়ে করতে হয়। তাড়াহুড়ো করলে এমনই হয়?


যাহহ বাবা আমি আবার কি করলাম। বড় দুলাভাই বলে শেষ করতে না করতেই ছোট দুলাভাই বললো.......


ছোট দুলাভাইঃ এটা কি করলা? প্রথম দিনেই খাট ভেঙে দিলা। এটা কি ক্রিকেট খেলা নাকি, যে যত গতিতে ইচ্ছা তত গতিতে বল করবা।


এই খানে ক্রিকেট খেলার কথা আসলো কোথায় থেকে৷ উনার কথা আমি কিছুই বুঝলাম না৷ সবাই চলে যেতেই বিছানা ফ্লোরে করলাম। আজকে রাত নিচেই থাকবো। 

ছোট বোন বলেছিলো তার রুমে চলে যেতে। সে মায়ের সাথে থাকবে, কিন্তু আমি যাইনি৷। বিছানা করে শুতেই সাদিয়া আবার বললো.........


সাদিয়াঃ আমি ওয়াশ রুমে যাবো।


আমিঃ না, ওয়াশ রুমে যাওয়ার দরকার নেই। 


সাদিয়াঃ কেনো?


আমিঃ একবার ওয়াশ রুমে গিয়ে এই অবস্থা হয়েছে। আবার গেলে যে কি হবে ওটা আমি কল্পনাও করতে চাই না।


সাদিয়াঃ তাই বলে আমি ওয়াশ রুমে যাবো না?


আমিঃ তা তো ঠিকই, ওয়াশ রুমে যাওয়া ছাড়া থাকা যায় নাকি! ওকে যাও তাহলে। 


সাদিয়া ওয়াশ রুমে যেতেই আমি কানে হেডফোন গুজে দিয়ে আমার পছন্দের গানটা শুনতে শুরু করলাম। গানটা এক এক করে চারবার শুনলাম। কিন্তু বউ তো এখনো বের হচ্ছে না। বিছানা থেকে উঠে গিয়ে ওয়াশ রুমের দরজায় নক করতেই ভিতর থেকে সাদিয়া বলে উঠলো......


সাদিয়াঃ দুই মিনিট আসতেছি।


সাদিয়া আসার পর ওকে জিজ্ঞেস করলাম....... 


আমিঃ আগের বার এমন করলেন কেনো?


সাদিয়াঃ কেমন করেছি?


আমিঃ ওয়াশ রুমে গিয়েই দৌড়ে এসে এক লাফে 

খাটে উঠলেন কেনো?


সাদিয়াঃ তখন তো আমি ভয় পেয়েছিলাম। 


আমিঃ এখানে তো কেউ নেই তাহলে কাকে দেখে 

ভয় পেয়েছিলেন?


সাদিয়াঃ ছিলো তো।


আমিঃ কে? 


সাদিয়াঃ তেলাপোকা। 


আমিঃ কিহ আপনি তেইল্লাছোড়া দেখে ডরান?


সাদিয়াঃ আমি তেলাপোকা দেখলে খুব ভয় পাই।


সব মেয়েরা ন্যাকা😁😁 আমার বাবুটা না জানি ভয় পায় কিনা🙈🙈🙉🙉


আমিঃ তেলাপোকা কে ভয় পান ভালো কথা, তাই বলে এক লাফে খাট ভেঙে ফেলবেন?


সাদিয়াঃ আমি কি ইচ্ছে করে লাফ দিছি নাকি।


আমিঃ লাফ দেওয়ার আগে একবার চিন্তা করে 

তারপর লাফ দিতেন।


সাদিয়াঃ কি চিন্তা করবো?


আমিঃ আমি যে লাফ দিয়ে এই খাটে উঠবো এই খাট টা আমার ভার সামলাতে পারবে কি না।


সাদিয়াঃ এতো ভাবাভাবির সময় পাইনি তখন। আর আপনার এই খাটের তো আত্মা নেই। আজকে না ভাঙলেও দুদিন পর এমনিতেই ভেঙে যেতো।


আমিঃ হইছে এখন ঘুমান।


সাদিয়াঃ নিচে ঘুমাবো?


আমিঃ কিছু করার নেই! আজকে নিচেই ঘুমাতে হবে।


খাটের জন্য আমার খুব কষ্ট হচ্ছে 🙉 কত বছর যে এই খাটে ঘুমিয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। খাট টার প্রতি এক ধরনের মায়া জন্মে গেছে 😩। খাটের কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি। 


সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠার পর যার সাথে দেখা হচ্ছে সেই আমার দিকে তাকিয়ে কেমন জানি মুচকি মুচকি হাসছে।এই হাসির কোনো কারন খুঁজে পাচ্ছি না আমি। 


যাইহোক বাড়িতে আর বেশিক্ষণ থাকিনি! চলে গেলাম বন্ধুদের কাছে। সেখানে যেতেই সবাই আমাকে অভিনন্দন জানালো৷ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার এক পর্যায়ে রনি বলে উঠলো........


রনিঃ ভাই তুই তো লিজেন্ড 😁😁


আমিঃ কেনো! কি করেছি আমি?


রনিঃ কাল রাতে তুই নাকি ক্রিকেট খেলে খাট ভেঙে ফেলেছিস😁😁


রনি কথাটা বলতেই সবাই হাহাহাহা করে হেসে উঠলো।

এখন সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে। ধুরর এদের কথা বার্তা শুনে মেজাজ গরম হয়ে গেলো। এরা সবাই আমার বন্ধু নাকি শত্রু এটা নিয়ে ডাউট আছে। 


রাতের বেলায় বাড়ি ফিরে রুমে ঢুকতেই চোখে পড়লো একটা নতুন খাট। সাদিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ওকে কেমন জানি খুশি খুশি লাগছে। তাই ওকে বললাম...... 


আমিঃ খাট দেখে এতো খুশি হওয়ার কি আছে? 


সাদিয়াঃ আজ থেকে আর নিচে শুতে হবে না।


আমিঃ ওহহ এই ব্যাপার! কিন্তু আমাদের রুমে নতুন খাট আসলো কোথায় থেকে?


সাদিয়াঃ আমাদের গত কাল রাতের খাট ভাঙার কথা শুনে বাবা আজকে নতুন খাট পাঠিয়ে দিছে ।


আমিঃ আপনি গতকাল রাতের কথা আপনার বাবাকে বলে দিছেন? 


সাদিয়াঃ আমি বাবাকে এই ব্যাপারে কিছুই বলিনি। বাবা কার কাছে থেকে যেনো শুনলো। 


অবশেষে এই খাট ভাঙার গল্প আমার শ্বশুর বাড়ি পর্যন্ত চলে গেলো। মানুষের যা স্বভাব? কে পৌঁছালো এই কথাটা? আমার আর মান সম্মান বলে কিছু রইলো না।


আমিঃ ওই সাদিয়া কোথায় যাচ্ছেন? 


সাদিয়াঃ ওয়াশ রুমে।


আমিঃ দাঁড়ান, দাঁড়ান। 


সাদিয়াঃ কেনো? 


আমিঃ আমি আগে ভিতরে গিয়ে দেখে আসি।


সাদিয়াঃ কি দেখবেন?


আমিঃ ভিতরে কোনো তেলাপোকা আছে কি না।


সাদিয়াঃ আজকে তেলাপোকা থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। আজকে নতুন খাট, লাফ দিলেও ভাঙবে না।


আমিঃ আমি আর কোনো ধরনের রিস্ক নিতে চাই না। 

একবার খাট ভেঙে যে বিরম্বনায় আমি পড়েছি। সে রকম বিরম্বনায় আমি আর পরতে চাই না। 


এইযে পাঠক/পাঠিকা কোথায় যাচ্ছেন? নিয়মিত সুন্দর 

সুন্দর গল্প পড়তে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ধন্যবাদ


________________সমাপ্ত_____________


এমন আরও সুন্দর সুন্দর গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post