ব্যর্থ ভালোবাসার কষ্টের গল্প
রাত তোমার পায়ে পরি যেয়ো না রাত। প্লিজ যেয়ো না। আমি ম*রে জাবো। রাত প্লিজ এমন করো না।
হাউমাউ করে কাদছে আর কথা গুলো বলছে সিয়াম।
-এখনো তুমি বেকার। কোন মেয়ের বাবা চায় তার মেয়েকে একটা বেকার ছেলের হাতে তুলে দিতে বলো? দেখো তুমি যদি আমাকে সত্যি ভালোবাসো তাহলে প্লিজ ছাড়ো আমার দেরী হয়ে জাচ্ছে।(রাত)
-রাত আমাকে আর কিছু দিন সময় দাও। আমি তোমাকে তোমার বাবার কাছে ভিক্ষে চাইবো।(সিয়াম)
-শোনো, তুমি তো বলো আমাকে সত্যি ভালোবাসো। তাহলে আমাকে মুক্তি দিও। আর বাবা যেই ছেলেটাকে দেখেছে, ছেলেটা দেখতে খুব সুন্দর। বেশ বড়োলোক। তাদেরও আমাকে পছন্দ হয়েছে এমন ভালো পাত্র আমি না করতে পারি নাই। মাফ করে দিয়ো ভালো থেকে। তুমি আমার থেকেও ভালো মেয়ে পাবে। বায়। (রাত)
সিয়াম হাটু গেরে বসে এখনো কাদছে। বাচ্চার মতো কাদছে সিয়াম।
দুরে দারিয়ে সব দেখে সিফাত তারাতাড়ি এসে সিয়াম কে ধরে। সিয়ামের বাসায় নিয়ে গেলে ওর বাবা মা দেখলে ঝামেলা হবে। সব কিছু ভেবে সিফাত সিয়ামকে আড্ডা খানায় নিয়ে জায়।
আড্ডা খানায় রাকিব সোহাগ, হোসেন এই অবস্থা দেখে সিয়ামকে তারাতাড়ি ধরাধরি করে ভিতরে নিয়ে জায়।
সিফাতের থেকে সব সুনে প্রচুর খারাপ লাগছে সবার।
তিন বছরের রিলেশন। সিয়াম সবটা করেছে রাতের জন্য। ওকে একটু খুশি করার জন্য নিজের সব জমানো টাকা দিয়ে রাতের পছন্দের জিনিস কিনে রাতকে দিয়েছে।
আর আজ সেই রাত এমনটা করতে পারলো।
আসলে কিছু কিছু ভালোবাসা থাকে সুন্দর কিন্তু টাকার কাছে হেরে যায়। টাকা পাহাড় সমান ভালোবাসা কিনে নেয়।
সিফাত আর বাকিরা সিয়ামের বাবা মা কে অনেক ভালো ভাবে বুঝিয়ে বলে। তারা ছেলের কথা বিবেচনা করে সিয়ামকে গ্রাম থেকে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়।
পুরো পাচঁটা বছর লেগেছে সিয়ামের সব গুছিয়ে নিতে।
কলেজ লাইফ থেকেই সিয়ামকে খুব পছন্দ করে সারা।
এই মেয়েটা অন্য রকম পাগল। কেমন সিয়ামকে দেখলেই ঘোরে চলে চায় সে।
অনেক বার বলেছে। কিন্তু সিয়ামের মনে যে রাত তখনো বসত করে।
_________ পাচঁ বছর পর হঠাৎ আজ রাতের ছোট মেয়েটা নিয়ে সিয়ামের স্কুলে রাতের আগমন।
পিচ্চি মেয়েটা সিয়ামের কাছে এসে সালাম দিয়ে দৌড়ে ভিতরে চলে জায়। তারপরই রাতের চোখে চোখ পরে সিয়ামের।
-কেমন আছো?(রাত)
-আল্লাহ অনেক ভালো রেখেছে। ওটা তোমার মেয়ে?(সিয়াম)
-হ্যা। আমার সুহা।(রাত)
-তো স্বামী কেমন আছে? বাচ্চা কী এই একটাই?(সিয়াম)
-হ্যাঁ। আচ্ছা একবার জিগ্যেস করলেও না কেমন আছি।(রাত)
-কেমন আছো সেটা তো আমি জানি জিগ্যেস করবো কেনো। (সিয়াম)
- মানে! কীভাবে জানো? কী জানো?(রাত)
- ভালো থাকার জন্যই তো বেকার ছেলেটাকে ছেড়ে গেছিলে। নিশ্চিই ভালো আছো। তাই জিগ্যেস করিনি।(সিয়াম)
- এখনো অভিমান করে আছো?(রাত)
- এইসব অভিমান রাগ করার সময়ই হয় না এখন।।
ওহ্ বললে না তো স্বামী কেমন আছে?(সিয়াম)
- স্বামী !! হুহ, সে তো কবেই চলে গেছে।(রাত)
-মানে! কোথায় গেছে?(সিয়াম)
-আমার স্বামী ছিলো মেয়েদের দে* হ লো* ভী।হা'জ'র মে'য়ে'র ছো'য়া ছিলো তার দেহে। বাবা মায়ের বড়োলোক সন্তান হাজারো মেয়ের ই*জ্জ*ত নষ্ট করার পরেও টাকার জোরে ছাড়া পেয়ে জেতো। বিয়ের প্রথম দিকে আমি বা আমার পরিবার কিছুই জানতাম না। আর সব ঠিক ছিলো। যখন আমার দে*হে*র গন্ধ নেওয়া শেষ তার তখন থেকেই শুরু হলো তৃীব্র যন্ত্রণা।
রাগ করে বাবার বাড়ি চলে এসেছিলাম। আমার কাবিন নামা ৮ লাখ টাকা ধরা হয়েছিলো। ওদের কাছে এই টাকা কিছুই না সব টাকা দিয়ে আমাকে ডিভোর্স দেয়। ডিভোর্সের সব ঝামেলা শেষ হওয়ার পাঁচ দিন পর সুহা আমার পেটে আসে আমি জানি।
কি করবো তখন বুঝতে পারছিলাম না।
আম্মু বলে বাচ্চা ন* ষ্ট করে ফেলতে। কিন্তু আমার জে মা হওয়ার খুব ইচ্ছে ছিলো। তাই পারিনি নষ্ট করতে।
দেখতে দেখতে কীভাবে জে মেয়েটা চার বছর পারি দিলো বুঝতেই পারলাম না। (কথা গুলো শেষ করে রাত দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নিলো)
সিয়াম হা করে সবটা সুনছিলো।
-এখন কোথায় আছে সে?(সিয়াম)
-জানিনা। সুনেছি বিয়ে করেছিলো আবার। তবে ওই বউয়ের বাবার বাড়িতে ওদের থেকে বেশি টাকা পয়সা ছিলো। বউকে নি" র্যা" ত ন করায় অনেক মা'র'ধো'র করেছে ওকে।(রাত)
-তুমি বিয়ে করোনি?(রাত)
সিয়াম অনেক খন চুপ থেকে মাথা উঠিয়ে বললো-না করিনি কিছু দিন পর করবো।।
-বাহ্। মেয়ে কী করে?(রাত)
সারা ছোট বোন নিয়ে স্কুল থেকে বের হবে এমন সময় সিয়ামের ডাক।
-সারা এদিকে এসো।(হাত ইশারা করে ডাকলো সিয়াম)
- হ্যাঁ বলো(সারা)
সব টা দেখছে রাত।
-এইজে এই হলো মেয়ে। ওর সাথেই কিছু দিন পর আমার বিয়ে হচ্ছে।(সিয়াম সারাকে দেখিয়ে বললো কথা টা)
সারা রিতিমত অবাক। জেই দিনটার জন্য সে ৪ বছর অপেক্ষা করেছে সেই দিন টা আজ। অবাক হয়ে দারিয়ে আছে সারা।
-যাক ভালো। খুব সুন্দর তোমার হবু বউ। তোমরা সুখি হও। তাহলে আসি আজ (রাত)
-হ্যা এসো। দেখা হবে আবার।(সিয়াম)
রাত চলে গেলো। সিয়াম এখন সারার হাতটা শক্ত করে ধরে আছে। এই হাত আর ছারবে না সিয়াম কখনো ছারবে না।
.........সমাপ্তি.........