স্বামী স্ত্রীর রোমান্টিক গল্প | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

 স্বামী স্ত্রীর রোম্যান্টিক ঝগড়া

স্বামী স্ত্রীর রোম্যান্টিক ঝগড়া

গতকাল বাজার থেকে একটা মুরগী কিনেছিলাম। 


সেটা আজকে রান্না হওয়ার কথা। 


কিন্তু দুপুরে খেতে বসে মুরগীর কোনো নামগন্ধই পেলাম না। 


টেবিলে দেখলাম কচু শাক, আর ডিমের তরকারি ঢেকে রাখা। 


স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম, কি ব্যাপার মুরগী কিনলাম কালকে। মুরগী কই? 


ও বললো, গতকাল মুরগী কিনলে আজকেই খেতে হবে এমন কোনো কথা আছে নাকি? যা রান্না হয়েছে তাই দিয়ে খেয়ে চুপচাপ উঠে পড়ো। 


কথাটা আমার খুব গায়ে লাগলো। মুরগী রাঁধবে না ভালো কথা। কিন্তু আরেকটু সুন্দর করেও তো বলা যায়, নাকি! 


দুই পিস ডিম পেটে চালান করে দিয়ে খাওয়া শেষ করলাম। 


মনে মনে ভাবলাম এর একটা উচিত জবাব দেয়া দরকার! 


তবে মৌখিক ঝগড়ায় এখন আর আমি বিশ্বাসী না। বাঁকা কথার উত্তর বাঁকা কাজ দিয়ে দিতে হবে। 


বাঁকা কাজ করার জন্য ওয়েট করলাম। তবে স্ত্রীকে কিছুই বুঝতে দিলাম না। ওর সাথে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখলাম। ওর এক্সট্রা কেয়ার নিলাম। 


ওকে বললাম, শোনো, সামনে তো তোমার জন্মদিন। তোমার একত্রিশতম জন্মদিনে আমি তোমাকে একটা সোনার ব্রেসলেট কিনে দিতে চাই। 


স্ত্রী রেগে গেলো। খবরদার আমার বয়স বাড়াবে না। আমার বয়স পঁচিশ। 


আমি আর তর্কে গেলাম না। গত পাঁচ বছর ধরেই যার বয়স পঁচিশ তাকে ম্যাথ শেখাতে যাওয়া বোকামি। 


বললাম, ঠিক আছে, তাহলে তোমার ছাব্বিশতম জন্মদিনে আমি তোমাকে একটা গোল্ডের ব্রেসলেট গিফট করতে চাই। তুমি না করতে পারবে না কিন্তু।


ওর চোখ মুখ খুশিতে ভরে গেলো। আর মুখে বললো, ছাব্বিশ না, পঁচিশ। 


প্রশ্ন আসতে পারে, এতো কিছু থাকতে ব্রেসলেট কেনো? 


কারণ, যে যাই বলেন ভাই, নারী আটকায় সোনায় - এইটা আমি ভালো ভাবেই বুঝে গেছি। 


আর ব্রেসলেট নিয়ে আমার স্ত্রী একটা নিনজা টেকনিক খেলার ট্রাই করেছে আমার সাথে। 


ও বেশ কয়েকবার আমার মোবাইল নিয়ে ব্রেসলেট লিখে সার্চ করেছে, ইচ্ছা করেই। এতে করে ও যেটা চেয়েছিল সেটাই হয়েছে।


আমার ফেসবুক, গুগল সব ব্রেসলেটের অ্যাড দিয়ে ভরে গেছে। উঠতে বসতে এখন খালি ব্রেসলেট দেখছি। 


কিন্তু আমার স্ত্রী তো জানে না যে ওর নিনজা টেকনিকের বিপরীতে আমারও একটা কাউন্টার নিনজা টেকনিক আছে। যার মাধ্যমে আমি সোনা দিয়ে কাঁটা তুলবো। মুহাহাহা, আসো খেলা হবে। 


রাতে শুয়ে ব্রেসলেটের একটা ছবি দেখিয়ে বললাম, শোনো নেক্সট মাসে বেতন পেয়েই তোমাকে এই ব্রেসলেটটা কিনে দেবো। আর মাত্র দশ দিন। 


ও খুশি হয়ে আমার পাশে এসে শুলো। 


পরের দিন বললাম আর মাত্র নয় দিন। 


তার পরের দিন বললাম এইতো আর আট দিন। 


আর এক সপ্তাহ। 


আর জাস্ট ছয় দিন। 


এরকম নয় ছয় করতে করতে সাত তারিখে আমার এ্যাকাউন্টে স্যালারি ঢুকলো। আট তারিখে বউয়ের জন্মদিন। 


যথারীতি ঐদিন অফিস শেষে বাসায় ফিরলাম।


একবার কলিং বেল বাজার সাথে সাথেই বউ দরজা খুলে দিলো। তারপর কেক কাটা হলো। খাওয়া দাওয়া হলো। 


আম্মা ওকে একটা জামা গিফট করলো। আব্বা দিলেন একটা প্রেশার মাপার যন্ত্র। 


আমার বোন দিলো একটা মেকাপ বক্স। 


এবার আমার পালা। আমি বললাম, সবার সামনে আমি গিফট দিবো না। পরে। 


রাতে রুমে ঢুকে খুব রোমান্টিক সুরে বললো, এবার তোমার গিফটটা দাও। 


আমি বললাম, শোনো একটা ঝামেলা হয়ে গেছে। তোমার গিফট আনতে পারি নাই। 


কিন্তু কেনো? তুমি যে বললে আমার জন্মদিনে গিফট করবে! 


বললাম তো, ঝামেলা হয়ে গেছে। কিনতে পারি নাই। 


কি ঝামেলা? তুমি তো কালকেই স্যালারি পেয়েছো! 


আমি এই সময়ের জন্যই ওয়েট করছিলাম। 


আমি খুব ধীরে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বললাম, গতকাল স্যালারি পেলে আজকেই ব্রেসলেট কিনতে হবে এমন কোনো কথা আছে নাকি?

Previous Post Next Post