রহস্যময় ঘটনা
বিয়ের পরদিন সকালেই স্বামীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় বাসর ঘরে।
গায়ের কোথাও কোনো স্পট পাওয়া যায়না।
পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে ধরা পড়ে প্রচুর ভয়ের কারনে কলিজার রক্ত ক্ষরণ হয়ে মারা যায় ও।
মেয়েটা একা একা কাঁদে।
রহস্য কি কেউ জানেনা।
একে একে সাতটি বিয়ে হয় প্রীতিকার।
জমিদারের একমাত্র মেয়ে সে।
টাকা-কড়ির অভাব নেই তার বাবার।
রুপ লাবণ্যেও নেই তার জুড়ি।
যতবারই তাকে বিয়ে দেয় ততোবারই বরকে অনেক অর্থ-কড়ি দিয়ে কিনে নেয়া হয়।
কারন এলাকার সবাই জানে সে একটা অপয়া অভিশপ্ত নারী,তার সাথে বিয়ে হওয়া মানে নিজের জীবনের সমাপ্তি টেনে আনা।
এই পর্যন্ত যতগুলো ছেলের সাথে তার বিয়ে হয়েছে বাসর রাতেই সবাইকে জান হারাতে হয়েছে।
মেয়েটা অবশ্য জানেনা কেন এমনটা হয়।
সে নিজহাতে কোন স্বামীকে মারেনি আর সে জানেওনা বাসর রাতে তার সাথে কি এমন হয় যার কারনে তার স্বামী মারা যায়।
বাসর রাতের শুরুটাই তার মনে থাকে।
এরপর তার কোন হুস থাকেনা।
সকালে যখন তার হুস আসে তখন সে দেখে তার স্বামী মৃত!
এসব ভেবে ভেবে দিনরাত চোখের অশ্রু বিসর্জন দেয় সে।
কিন্তু কি সেই ঘটনা যার জন্য প্রতিবারই এমন হয়!
এইবার জমিদার খুবই রাগান্বিত হন মেয়ের উপর।
মেয়েকে রাগে অনেক শাস্তি দেন তিনি।
আর কারো বিবাহ দেবেন না অপয়া এই মেয়ের সাথে বলে তিনি সিদ্ধান্ত নেন।
একে একে সাতটা ছেলের জীবন এভাবে নষ্ট করেছে সে।
এখন জমিদারের নিজেরই নিজের প্রতি খারাপ লাগে কারন সবার পরিবারের কাছে তার সন্তানের মূল্য অনেক।
তার মেয়ের সুখের জন্য সে অন্যের পরিবারকে এভাবে কষ্ট দিতে পারবেনা।
এভাবেই চলে গেলো অনেক দিন।
একদিন জমিদার স্বপ্নে দেখলো অদৃশ্য একটা কন্ঠ তাকে বলছে তার মেয়েকে যেন এক মায়ের এক ছেলের সাথে বিয়ে দেয়।
যার বয়স ঠিক ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে এমন, তাহলে তার মেয়েকে আর বিধবা হতে হবেনা।
জমিদার অনেক খোঁজাখুজির পর একটা কাঠুরিয়ার ছেলেকে পায়, যার আর কোনে ভাই বোন নেই আর তার বয়স মাত্র ১৮ পূর্ণ হলো।
জমিদার সেই কাঠুরিয়ার কাছে তার ছেলের জন্য আবদার করলো।
কাঠুরিয়া রাজি হতে চাইলোনা এরপর অনেক কষ্টে শত অনুনয় করে কাঠুরিয়ার ছেলের সাথে জমিদারের মেয়ের বিয়ে ঠিক হলো।
চন্দ্র মাসের প্রথম রজনীতে ওদের বিয়ে।
বিয়ের রাতটা ছিলো অমাবস্যার পূর্ণিমার রাত।
এত বছর বাসর রাতে কেন ছেলেগুলো মারা যেতো সেই রহস্য ভেদ হবে আজ!
অবশেষে কাঠুরিয়ার ছেলের সাথে জদিমারের মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক হলো।
চ/ন্দ্র মাসের প্রথম রজনীতে ওদের বিয়ে।
বিয়ের রাতটা ছিলো অমাবস্যার রাত।
এত বছর বাসর রাতে কেন এতগুলো ছেলে মা/রা যেতো সেই রহস্য ভেদ হবে আজ।
জমিদার এই বিয়েতে তেমন কোন জাক জমক আয়োজন করেন নি।
কেননা, তিনি জানতেন এবারো হয়তো আবারো শোকের ছায়া নেমে আসতে পারে।
তবে এইবার জমিদারের প্ল্যান ছিলো বাসর রাতে কি হয় তা দেখার।
এই ভেবে তারা দুটো স্পাই ক্যামেরা লুকিয়ে লাগিয়ে দেয় ফুলের আড়ালে।
যেহেতু অনেক ফুল দিয়ে বাসর ঘরটা সাজানো ছিলো সেহেতু ফুলের ভাজের ভেতর লুকিয়ে দুইটা স্পাই ক্যামেরা লাগিয়ে দেয়াটা সহজ ছিলো।
অবশেষে ওদের বিয়ের কাজটা সম্পন্ন হয়ে গেলো।
রাত ১০/১১ টা নাগাদ সবার খাওয়াদাওয়া সম্পূর্ণ হবার পর ওদেরকে বাসর ঘরে এনে দিয়ে যায় জমিদারের আত্মীয়রা।
কাঠুরিয়া তার ছেলেকে অনেক ভালবাসতো।
একটিই মাত্র ছেলে তার।
সারাদিন বাবার সাথেই সে কাজ করেছে সংসারের জন্য।
তার মা অনেক কান্নাকাটি করছে তার জন্য, না জানি তার বুকের ধনকে আজ হারাতে হয়!
বিয়ের পর থেকে তার মা আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে ছেলের জীবন ভিক্ষা চাইতে ছিলো।
অবশেষে তার মা ও বাবা তাকে দোয়া কালাম পড়ে সাহস দিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বউ কাছে যেতে দেয়। আর বাসর ঘরে যাবার আগে তার মা তার গলাই আল্লাহর নামের একটা লকেট লাগিয়ে দিয়েছিলো।
যাইহোক এগুলো ছিল ওদের বাসর ঘরে ঢুকার আগের কাহিনী।
এবার চলে যাওয়া যাক মূলপর্বে বাসর ঘরের ভেতরের গল্পে।
বাসর ঘরে স্বামী স্ত্রী দুজন কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে, আরো যা যা নিয়ম রয়েছে সেসব সম্পন্ন করে একে অন্যকে আ/লি/ঙ্গ/ন করলো।
তারপর মধ্যরাতের দিকে দুজন যখন একে অন্যকে আদর সোহাগ করছিলো, এক পর্যায়ে ছেলেটাকে মেয়েটা নিচে ফেলে ওর বুকে শুয়ে তাকে চুমু খাচ্ছিলো।
মেয়েটা ছেলেটাকে দীর্ঘ সময় ধরে জোরপূর্বক চুমু খেতে থাকায় এক সময় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যে অজ্ঞান হয়ে যায়।
এরপর আচানকভাবেই মেয়েটা মেয়ে থেকে আস্তে আস্তে একটা সাপে পরিনত হয়।
এরপর তার আর নিজের কোন সেন্স থাকেনা।
তার শরীর আস্তে আস্তে অর্ধেক সাপ আর অর্ধেক মেয়ে হয়ে যায়।
সাপ হয়ে মুখ বড় করে ছেলেটাকে গিলে ফেলবে এমন ভাব নিয়ে তার মাথার কাছে আসতেই ছেলেটার গলাই থাকা আল্লাহর লকেটের কারনে সাপটি আবার মেয়ে হয়ে যায়।
এইবার কোন আক্রমণ করতে না পেরে সাপটি একেবারেই এই মেয়েকে ছেড়ে চলে যায়, সাথে সাথেই একটা বিকট আওয়াজ হয় আর সারা বাড়িতে একটা ক/ম্প/ন সৃষ্টি হয়।
এরপর মেয়েটার জ্ঞান ফিরে আসে আর দেখে তার স্বামী অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে বিছানায়।
এরপর মেয়েটি একটু পানি নিয়ে ছেলেটির মুখে ছিটিয়ে দেয়।
কিছুক্ষণের মধ্যে ছেলেটির ও জ্ঞান ফিরে আসে।
এরপর দুজন দুজনকে বুকে জড়িয়ে নেয়।
সারারাত আদর সোহাগ করে কাটিয়ে দেয় ওরা।
এরপর থেকে আর কখনো মেয়েটি সাপ হয়নি, স্বামীর সাথে চলতে থাকে তার মধুর সংসার।
🥰 সমাপ্ত 🥰