হঠাৎ বিয়ের রোমান্টিক গল্প | রোমান্টিক স্ট্যাটাস

রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প

রোমান্টিক লাভ স্টোরি গল্প

 ---কিরে মাম্মা শেষমেশ বিয়েটা করেই ফেললি বল..!?আমার কিন্তু ট্রিট চাই নয়তো তোর সাথে কথা বলবো না এই বলে দিলাম..!?😌 


নিজের বিয়ের দিন বাসর ঘরে এসে নিজের বউয়ের মুখে এমন কথা শুনে বাকরুদ্ধ ভাবে দারিয়ে ফেলফেল নয়নে সাফার দিকে তাকিয়ে আছে অয়ন,, কি বলবে আর কি করবে বুঝতে পারছে না..পারিবারিক ভাবে বিয়েটা হলেও ওরা আগে থেকেই একে অপরকে চেনে..শুধু চেনেই না খুব ভালো করে চেনে,, 


সাফা আর অয়ন হচ্ছে কলেজ লাইফ থেকে বেস্ট ফ্রেন্ড,,তবে অয়ন সাফার থেকে বয়সে কিছুটা বড়,, দুজনে একসাথে পড়াশোনা শেষ করে অয়ন সাথে সাথে বাবার ব্যবসায় ঢুকে পরে আর কিছুদিনের মাথায় সাফাকে বিয়েও করে ফেলে,, আসলে অয়ন সাফাকে অনেক ভালোবাসে আর সাফাও অয়নকে ভালোবাসে,,আবার সাফাকে অয়নের আম্মুর ও খুব পছন্দ তাই অয়নের বাবা-মা সাফাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে সাফার বাবা-মাও আর অমত করে না 


---কিরে এমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো..!?🤨( অয়নের মুখের সামনে হাত নেরে নেরে জিজ্ঞেস করলো সাফা )

---এমনি একটা কথা ভাবছিলাম..!!🙂( অয়ন )

---ওহ্ আচ্ছা,, তা কি কথা আমিও একটু শুনি..!!😃( সাফা )

---না ভাবছিলাম যে কোন জন্মে কি কি পাপ করেছি তার কথা আর কি..!!🙂

---কেনো কেনো হটাৎ পাপের কথা ভাবছিস কেনো..!?এই তোর মতলবটা কি বলতো..!?🙄

---মতলব আবার কি..!?😒


---তাহলে পাপের কথা ভাবছিস যে..!?🤨

---ভাববো না,,বিয়ের দিন বাসর ঘরে ঢুকতে না ঢুকতেই বউ বিয়ের জন্য ট্রিট চাচ্ছে আর সাথে তুইতোকারিও করছে..!!🫡

---তো কি করবো তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তুই বিয়ে করেছিস আমাকে ট্রিট দিবি না.!? আর তোকে আমি তুমি বা আপনি করে বলতে পারবো না sorry..!!🙎‍♀


---আব্বে ঐ আমি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলাম এখন আর নই,,আর বিয়ে কি তর নানিকে করেছি নাকি যে তোকে ট্রিট দেবো..!!😑

---তাহলে এখন তুই আমার কি হশ আর নানিকে বিয়ে করলেই বুঝি ট্রিট দিতে হয়..!!🙄

---হে আল্লাহ তুমি বাচাও আমারে এই মাইয়া কয়কি,, আরেএএএএএ আমি তোর জামাই হই জামাই,, নিজের জামাইর কাছে কি কেউ কহনো নিজের বিয়ার ট্রিট চায় ব!জ্জা"ত ছেমরি..!!😕


---আমি এতো কিছু জানি না,, আমাকে ট্রিট না দিলে আমি তোর সাথে কোনো কথা বলবো না এটাই ফাইনাল..!!😒

---আচ্ছা ঠিক আছে কালকে দেবো ট্রি,, এখন আমি খুব ক্লান্ত একটু ঘুমাতে'দে শান্তি'তে..!!


অয়ন যখনই খাটে শুতে যাবে ঠিক তখনই সাফা অয়ন কে পেছনের দিকে লা!-!ত্থি দিয়ে খাট থেকে নিচে ফেলেদেয় তখন অয়ন ব্যথায় চিৎকার দিয়ে ওঠে.. 


---আআআআআ ওওওওওও বাবা গোওওওও মা গোওওওওওও আমার মাজাটা বুঝি গেলো গোওওওওও এই তুই আমাকে ফেলে দিলি কেনো...!!😩

---খবরদার বলছি একদম আমার পাশে শোয়ার চেষ্টা করবি না সোফাতে গিয়ে শুয়ে পর নয়তো আরো একটা দেবো বলে দিলাম...!!😠


দুঃখে কষ্টে অয়নের ইচ্ছে করছিলো নিজের কপাল নিজেই দেওয়ালে বা!রি দিতে,,নিজেকে কন্ট্রোল করে আর কথা না বাড়িয়ে সোফাতে গিয়ে শুয়ে পরে,, কারণ অয়ন যানে সাফা কি ধরনের মেয়ে,, সে একবার যা বলে তা করেই ছাড়ে... 


------------------------------------ 


পরের দিন সকালে সাফা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে যায় আর একেবারে গোসল করে নেয়..অয়ন তখনো সোফায় ঘুমোচ্ছে,, ভেজা চুল মুছতে মুছতে সাফার হটাৎ তার ভাবির বলা কথা মনে পরলো..!! 


---অয়ন,, অয়ন,, এই অয়নের বাচ্চা,,ওঠ বলছি ( পেছনে লা*-*ত্থি দিয়ে..)

---কে কে কে,, চোর চোর ডাকাত ডাকাত..!!( ঘুমের মধ্যেই চেচিয়ে বলতে থাকে অয়ন )

---আব্বে শা* আমি তোর বউ সাফা কোনো চোর বা ডাকাত নাই..!!


---oh thank god..by the way তুই ও কি চোর ডাকাতের থেকে কোনো অংশে কম নাকি'বে.. সকাল সকাল স্বামীর পেছনে লা*-*ত্থি দিচ্ছিস..

---আমি কি ইচ্ছে করে দিয়েছি না-কি তোকে কতোবার ডাকলাম কিন্তু তুই শুনছিলি না তাই বাধ্য হয়ে...

---তাই বাধ্য হয়ে আপনি আমাকে লা*-*ত্থি দিয়েছেন তাই তো...

---হ্যা ঠিক তাই..আচ্ছা শোন যেটা বলতে চাচ্ছিলাম..


---আগে তুই শোন,, আমাদের এখন বিয়ে হয়েছে তাই এমন করে তুই তোকারি করা বন্ধ কর..

---না ওটা সম্ভব না...

---প্লিজ,, রাজি হয়ে যা না নিজের রুমে যা খুশি তাই বলিস,, অন্তত মায়ের সামনে বলিস না...প্লিজ প্লিজ..

---আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু কি বলে ডাকবো সেটা তো বল...ঐ হ্যা গো শুনছো না-কি ও গো শুনছো...এগুলো বলতে পারবো না,, তবে ভাইয়া বলতে পারবো,, চলবে..!?

---হ্যা আর কি করার আপাতত এটাই চলবে..এবার বল কি বলবি বলছিলি জানি..

---বলছিলাম যে ভাইয়া, শোনেন..!!


'ভাইয়া' ডাকটা শুনে দুঃখে অয়নের কলিজা ফেটে কিডনিতে গিয়ে লাগল। জন্ম থেকে এই পর্যন্ত যতটা মেয়ের প্রতি ক্রাশ খেয়েছে, সবগুলো মেয়েই ওকে 'ভাইয়া' ডেকে প্রপোজ করাতে পানি ঢেলে দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নিজের বউও ভাইয়া ডাকাটা বাদ দিলো না৷ এ জীবন রেখে কী লাভ! ইচ্ছে হচ্ছে ওকে ২০ খাইয়ে নিজেই সু!ই!সা!ই!ড করে নিতে,,নিজেকে সামলে অয়ন সাড়া দিয়ে বললো..


---হ্যাঁ, বলো বইনা৷ "

---একটা বিড়াল এনে দিবেন? "

সাফার মুখে এমন কথা শুনে অবাক হয়ে ওর দিকে মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো.. 


---বিড়াল দিয়ে কী করবি শুনি? "

---ভাবী বলেছিল বাসর রাতে না-কি বিড়াল মারতে হয়...কিন্তু কথাটা কাল আমার মনে ছিলো না তাই আজকে এনে দিতে পারবি..!!

একটা মানুষ কী করে এতোটা গাধীরাম হতে পারে চিন্তা করতে লাগলো। চিন্তায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে অয়নের হাতে একটা ধাক্কা দিয়ে সাফা বলল..


---কিরে এনে দিবো তো একটা বিড়াল৷ "

ছলছল নয়নে সাফার দিকে তাকালো অয়ন..!! সাফার চেহারা বেশ মনোমুগ্ধকর, মায়া-মায়া ভাব আছে৷ কিন্তু মাথায় যে ঘিলুর কিছুটা ঘাটতি আছে সেটা অয়নের আর বুঝার বাকি রইল না। অয়ন বললো

---আচ্ছা ঠিক আছে, আফিস থেকে আসার সময় বাজার থেকে একটা বিড়ালের বাচ্চা এনে দিব তোকে। "


নিজের বউয়ের কার্যকলাপ দেখে অয়নের মনে হচ্ছে এই পৃথিবীতে ওর থেকে বড় হতভাগা আর কেউ নেই,,এই বিয়ে আর সাফা কে নিয়ে কতোই না সপ্ন দেখতো অয়ন,,এখন নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড কে বিয়ে করার ঠেলা সামলাচ্ছে,, সব ইচ্ছে মনের মধ্যে ধামাচাপা দিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেলো অয়ন


বউয়ের মুখে ভাইয়া ডাক শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হয়ে গিয়েছে অয়নের। তাই ছুটি থাকা সত্ত্বেও অয়ন বেরিয়ে পরলো অফিসের উদ্দেশ্যে। কিছুক্ষণ পরপর সাফা কল দিচ্ছে অয়নকে। রিসিভ করতেই বলছে, 


---" বাসায় কখন আসবি ভাইয়া? বাসার ফেরার পথে বিড়াল আনতে ভুলবি না কিন্তু! আজকে যে করেই হোক বিড়াল মারতেই হবে হুম। "

কথায় কথায় ভাইয়া বলাটা অয়নের বুকে তিরের মতো বিধছে,, তখন ওর মনে পরলো হয়তো ওর আম্মু আসে পাশে আছে তাই সাফা ওকে ভাইয়া বলে ডাকছে...সাথে তুইও বলছে তবে একটা সাফার বদ অভ্যাস.. 


কিছু বলার সাহস হচ্ছিলো না কোনোবারই। শুধুমাত্র "হ্যাঁ" বলেই কল কেটে দিচ্ছে প্রতিবার। 

বিকেলে অয়ন যখন ক্যান্টিনে খাওয়াদাওয়া করে বিশ্রাম নিচ্ছিলো,, অয়নের আম্মু তখন কল করে.. রিসিভ করতেই বললেন, " বাবা, সাফা আমাকে শুধুশুধু প্রশ্ন করছে, ভাইয়া আসবে কখন? আসার পথে সাফার ভাইয়াকে কল দিয়ে নিয়ে আসিস তো। "


আবেগে দুচোখ বেয়ে আঁড়াই ফোটা জল গড়িয়ে পড়ল। " ঠিক আছে৷ " বলে কল কেটে দিলো অয়ন। 


একটা খাঁচাতে বিড়ালের বাচ্চা নিয়ে বাসার কলিংবেলে হাত চাপলো৷ দেখলো সাফা দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। অয়নকে দেখেই সাফা জোরে বলতে লাগল,...


---ভাইয়া তুই এসেছিস৷ "

হাত থেকে বিড়ালের খাঁচাটা রেখে সাফার মুখ চেপে ধরলো অয়ন। সে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে চোখগুলো এদিক-সেদিক ঘুরাছে৷ কিছু বলার চেষ্টাও করছে। মুখ চেপে ধরে টেনেহিঁচড়ে অয়ন সাফাকে রুমে নিয়ে গেলো৷ আর বললো 


---এসেছি তা তো দেখতেই পাচ্ছিস এমন করে চেচাচ্ছিস কেনো হাঁদারাম কোথাকার..!!

---কেনো! কী হয়েছে..!?

---না কিছু হয় নি..এইনে তোর বিড়াল..( খাঁচাটা সাফার সামনে এগিয়ে দিয়ে ) 


সাফা শান্তভাবে অয়নের পাশে বসে বিড়ালটা নিয়ে খেলা করছে। কিছুক্ষণ পর সাফা বলল, 


---" দেখ অয়ন বিড়ালটা খুব কিউট, তাই না রে এটাকে আমি আর মারবো না। আদর করবো। " 


অয়ন আর কিছু বললো না। 


---অয়ন প্রথমবার যখন শশুরবাড়িতে গেলে। তখন সে লক্ষ্য করো ভাবির সাথে বসে সাফা কী যেন গুঁজুর-গুঁজুর করছে। আঁড়ি পেতে শোনার চেষ্টা করলো অয়ন। ভাবি বলছে, 


--- " কিরে! বিড়াল মারলি? 


সাফা উত্তর দিলো, 


---"অয়ন বিড়াল কিনে এনে দিয়েছিলো, কিন্তু বিড়ালের বাচ্চাটা দেখে খুব মায়া হলো তাই এটাকে বাসাতেই রেখে দিয়েছি। " 


দুঃখে অয়নের মইরা যাইতে ইচ্ছা করলো,,আর লক্ষ্য করলো ভাবি মিটিমিটি হাসছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে ওদের সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠতায় পৌঁছালো৷ কিন্তু এখন আর সাফার মুখ থেকে ভাইয়া ডাকটা সরাতে পারলো না অয়ন ৷ যাইহোক, বেচারা ব্যাচেলর লাইফ থেকে তো মুক্তি পেলো। তবে সাফা যে এখন অয়নকে ছাড়া কিছু বুঝে না,, সেটা বুঝতে আর বাকি নেই অয়নের,, সবসময় পিঁছু পড়েই থাকে। 


বিয়ের পাঁচ/ছয় মাস যেতেই অয়ন লক্ষ্য করলো সাফা ঘনঘন বমি করছে৷ অয়নের আম্মুও কেমন জানি দুষ্টূমির নজরে ওর দিকে তাকায়৷ বেশ হাসিখুশি পরিবারের সবাই, কিন্তু কেমন জানি সবাই এড়িয়ে চলছে অয়নকে৷ রাত হতে সাফাকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলো অয়ন, 


---আচ্ছা, সবাই আমাকে এভাবে এড়িয়ে চলছে কেন? "

---বিশ্বাস করেন রাসেল ভাই, এরপর অয়ন যা শুনলো তার জন্য সে ৭ জন্মেও প্রস্তুত ছিলো না। সাফা মিটিমিটি হাসলো, আর অয়নের বুকে মুখ লুকিয়ে। আস্তে করে বলল, "তুই মামা হতে চলেছিস"।🫣😇 এই কথা শুনে অয়ন বেহুশ 🫢🥲


---------------***THE END***-----------


গল্প : ডেঞ্জারাস বেস্টি


এমন আরও অনেক মজার মজার রোম্যান্টিক গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post