অনেক কষ্টের ভালোবাসা | বেস্ট ফ্রেন্ড হারানোর কষ্ট

 বেস্ট ফ্রেন্ড নিয়ে গল্প

বেস্ট ফ্রেন্ড নিয়ে গল্প

😢 😢  পুরো গল্পটা পড়বেন😢 😢 


ওই তুই কি পারোস বলবি???

- খাইতে পারি।

-মুটকি জীবনে ঠিক হইলিনা,,ওই খাওয়া ছাড়া কি

পারোস?

- খাইতে পারি

- দূর হো মুটকি

- ওই ফুসকা খাবো টাকা দে আমি চলে যাচ্ছি।

- একটা উষ্ঠা মারবো মুটকি,,, নিজের টাকায় খাইতে

পারিস না???

-কে বলছে পারিনা??? পারি তো

- তাইলে যা খা,,,আমার কাছ থেকে দূরে যাহ।

- আহারে আমার কাছে টাকা থাকলে কি আমি তোর

কাছে খুজি ফইন্নি

- টাকা নাই মানে??? আন্টি আজকে আমার সামনে

তোরে ৫০০ টাকার নোট দিছে আর তুই বলছিস

টাকা নাই???

- খাইয়া ফেলছি রে,, তুই বল ৫০০ টাকায় কি ক্ষুদা

মিটে?? (মন খারাপ করে)

-দূর হো মুটকি...তোরে কোটি টাকা দিলেও

তোর ক্ষুদা মিটবেনা (রেগে)

-আচ্ছা থাক লাগবে না বাই (অভিমানের সূরে)

এই বলে অহনা চলে যায়,, কিছুক্ষন পর আবির ও ওর

পিছু পিছু যায় তা দেখে অহনা বলে খবর দার আমার

কাছে আসবি না বেয়াদ্দপ।

- হুহ বয়েই গেছে তোর কাছে আসতে,আমি

ফুসকা খেতে যাচ্ছি মুটকি।

এই বলে আবির কলেজ থেকে বের হয়ে

ফুসকার দোকানে গেলো সাথে অহনাও।

দুই জন দুই প্লেট ফুসকা অর্ডার দিলো, কিছুক্ষন

পর একটা পিচ্চি এসে ওদের হাতে ফুসকা দিয়ে

চলে গেল,অহনা ফুসকা খেয়ে চলে যায়, আর

দোকানী কে কি জেন বলে যায়।যাই হোক

আবির ফুসকা খেয়ে যখন নিজের টাকা দিতে

যাচ্ছিলো তখন দোকানী তাকে বললো

- কি ব্যাপার ভাই,,,এক প্লেটের দাম ক্যান দিছেন??

-তো আমি কি আসে পাশের সবার প্লেটের দাম

দিব নাকি??

- আরে তা না মশাই,,ওউ ম্যাডাম এর প্লেটের টাকা

দেন

- আমি ক্যান দিবো?? ওটা কি আমি অর্ডার করছি???

- আরে ম্যাডাম তো বললো আপনি টাকা দিবেন।

এছাড়া আপনারা দুজন সব সময় তো একসাথেই খান

আর এক সাথেই টাক দেন তাহলে???

- আরে আজকে তো.....

-দেহেন আমার টাকা দেন নয়ত খবর আছে,,,

- দূরো মিয়া,আপনার দোকানে আর খাবোই না

এই নিন টাকা।

এই বলে আবির দৌড়ে অহনার কাছে যায়

এবং ওর চুল ধরে টান দেয় পিছন থেকে, সাথে

সাথে অহনা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে

- ওই কুত্তা তোরে না কইছি আর যাই করিস আমার

চুলে হাত দিবি নাহ (প্রচন্ড রেগে)

- একশ বার দিবো মুটকি। তুই ফুসকার দোকানে

ক্যান বললি আমি টাকা দিব তোর প্লেটের????

- টাকা সমস্যা তো?? ওয়েট আমি তোর টাকা দিয়ে

দিচ্ছি যাষ্ট 5 মিনিট ওকে??

এই বলে অহনা চলে যায়। আবির বুঝতে পারে

অহনা খুব রেগে গেছে কারন এই পাগলি টাকে

যতই বকুক কাটুক তাতে ওর কিচ্ছু হয়না শুধু ওর চুল

ধরে টান দিলেই রেগেই যায় মেয়েটা। ছোট

থেকেই ও ওর এই চুল নিয়ে খুব খুত খুতে,,,ও সব

সহ্য করতে পারে কিন্তু নিজের চুল নিয়ে কেউ

কিছু করলে পুরা আগুন হয়ে যায়।

আর তাই ছোট থেকে কিছু হলেই আবির ওর চুল

টানে আর অহনা প্রচন্ড রেগে যায় আর

আজকেও গিয়েছে কারন অহনা এই পর্যন্ত

অনেক টাকা আবিরের কাছ থেকে খেয়েছে

কখনো তা দেয়নি আর আবির ও চায়নি কারন এটা

চাওয়ার ব্যাপার না,শুধু অহনা খেয়েছে বললে ভুল

হবে আবির ও অনেক সময় অহনার কাছ থেকে

খেয়েছে। কিছুক্ষন পর অহনা আবির এর কাছে

এসে ৫০০ টাকার একটা নোট দেয় আর বলে

- এই নে তোর টাকা,,খবর দার আমার চুলে আর

কোন দিন হাত দিবিনা বলে দিলাম।

- আমি তো ৭০ টাকা পাই তোর কাছে তাহলে ৫০০

দিলি কেন???

-আগের সব টাকা দিয়েছি,,আরো পাবি বাসায় গেলে

দিয়ে দিব,এখন আর পারবো না বাই

অহনা চলে যায়,,,আবির পিছন থেকে তাকিয়ে

আছে, কারন এখন কিছু বলেও লাভ নেই, খুব

রেগে গেছে অহনা। মেয়েটা চুল নিয়ে এত

কেন খুত খুত করে আবির জানে না,তবে হ্যা

অহনার চুল খুব সুন্দর ক্লাসে ওর মত এত সুন্দর চুল

আর কারোর নেই।

.

রাতে ডিনার করে ল্যাপটপ নিয়ে ফেইসবুকে

বসেছে আবির, অহনার আইডির পাশে সবুজ

আলো জ্বলছে তাই ম্যাসেজ দিলো

- মুটকি এত রাগলি কেন বলতো??? কি এমন করেছি

আমি??

-...

- কথা বলো জান্টুস

-....

-আচ্ছা শুন মুটকি তোর সাথে কথা বলার ইচ্ছে

নাই,,কালকে আমি আর তিথি চাইনিজ এ যাবো

খেতে তুই যাবি???

অনেক্ষন হলো অহনা রিপ্লে দিচ্ছেনা তার মানে

খুব রাগ করেছে,,,,এই জন্য অহনা কে ফোন

দিলো কিন্তু রিসিব করছে না অহনা,,,

আবির জানে এখন কিভাবে রাগ ভাঙাতে হবে

ওকে,,তাই আর দেরি না করে এই ঠান্ডায় বেরিয়ে

পড়লো অহনার বাসায়, বাসার কাছে গিয়ে ম্যাসেজ

দিলো ওই মুটকি তোর বাসার সামনে তোর প্রিয়

জিনিস টা নিয়ে দাড়িয়ে আছি নিচে একটু আসবি??

কিছুক্ষন পর গেট খোলার শব্দ শুনলো আবির

তার মানে আসছে,,,

- কিরে মুটকি এত রাগ ক্যান করলি??

- কথা কম বল, তাড়াতাড়ি দে

- কি??

- ন্যাকামো কম কর আইস্ক্রিম দে।

- আমি আইস্ক্রিম আনছি তোরে কে বললো??

- বারে তুই যে বললি প্রিয় জিনিস এনেছিস??

- হেহ তোর প্রিয় জিনিস কি শুধু আইস্ক্রিম নাকি??

আমিও তো তোর প্রিয় তাই না??.

- হুহ বয়েই গেছে তুই আমার প্রিয় জিনিস হতে।

এখন দিবি নাকি চলে যাবো??

- দিবো কিন্তু এক শর্তে,

- কি শর্ত??

- এই খালি রাস্তায় আমি আর তুই এক সাথে আইস্ক্রিম

খেতে খেতে হাটবো ওকে??

- আচ্ছা চল,কিন্তু তোর তো ঠান্ডার সমস্যা

আছে,,যদি প্রবলেম হয়??

-ধুর আমি আমার মুটকির জন্য এই টুকু করতে

পারবো না?? চলতো।

এক সাথে দুজন হাটছে, আবির একটু পর পর হাচচিঁ

দিচ্ছে আর তা দেখে অহনা হাসতেছে। আর

আবির সেই হাসি দেখছে,,

আবির একটা কথা বলার ছিলো

- হু বল,,, হে, হেচচুঁ

- কিরে তোর ঠান্ডা কমে নাই??

- কমছে,,কি বলবি বল।

- আমার বিয়ে ঠিক হইছে।

- জোক অফ দা ইয়ার হা হা হা

- আই এম সিরিয়াস আবির

- শুন মুটকি তোরে যে বিয়ে করবে না তার

কোটি কোটি থাকা লাগবে নাহলে...

- নাহলে কি??

-কিছুনা, আচ্ছা শুন এসব ফালতু কথা বলিস না,তোর

বিয়ে এটা পৃথিবীরর নবম আশ্চর্য হবে

- স্টপ ইয়ার,বাই

- আরে পাগলি দাড়া, শুন

অহনা রেগে চলে যায়,,আবির টা সত্যিই কেমন জানি

সারাদিন অহনার পিছনে লেগে থাকে।আর অহনাও

রেগে যায়,আবার সেই রাগ আবির ভাঙায় এভাবেইই

ওদের সম্পর্ক চলতে থাকে।

ইদানিং অহনা আবির এর সাথে কথা কম বলছে সব

সময় ওর চোখ ফুলে থাকে, আবির ওর পিছু

লাগলেও তেমন রেগে যায় না।আবির এর ব্যাপার টা

খুব খারাপ লাগে, কারন অহনা রেগে গেলেই

তো আবিরের ভালো লাগে,ওই পাগলি টার বকা না

খেলে যে ওর দিন যায় -ই না,,,....

- আবির আমি যদি অনেক দূরে চলে যাই তাহলে

তুই তখন কার পিছু নিবি??? কাকে বিরক্ত করবি?? কাকে

মুটকি বলবি?? কার চুল ধরে টানবি??

- শুন কথা কম বল।কই যাবি তুই আমায় ছেড়ে??

- বারে, আমার বিয়ে হয়ে গেলে তো আমি

চলে যাবো।

-দূর কি যে বলিস না,,,

- আমি ঠিকি বলছি, এই দেখ বিয়ের কার্ড.

এই বলে অহনা বিয়ের কার্ড টা আবিরের হাতে

দিলো,,তখন আবিরের মুখ টা পুরো কালো হয়ে

গেলো হঠাৎ করে আবির হাটু গেড়ে অহনা কে

প্রপজ করলো

-আই লাভ ইউ অহনা

-.........

- আমি তোকে খুব ভালিবাসি রে, ইউ লাভ মি??

- তু.তুই সত্যি ব...

কথাটা শেষ হওয়ার আগেই আবির হা হা হা করে

হাসতে থাকে আর বলে মুটকি আমি বাসবো

ভালো তোকে??? সত্যি তুই খুব বোকা রে কথা

টা বিশ্বাস করে ফেললি হা হা হা আমি তো যাষ্ট

দেখলাম এটা বললে তোর মুখের কি অবস্থা হয়

কথা গুলো বলতে বলতে আবির হাসছে

যেনো আজ তার খুব খুশির দিন। আর অহনার

চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,অহনা কিছু না বলে দৌড়ে

চলে যায়,,,

আজকে অহনার বিয়ে,সবাই খুব আনন্দ করছে।

আবির ও প্রচুর মজা করছে আর অহনা তা দেখছে

আর মনে মনে ভাবছে তার ধারনা ভুল কেননা

তাদের সম্পর্ক টা আবির শুধু বন্ধুত্ত হিসেবেই

নিয়েছে,

বিয়ে সম্পুন্য হয়ে যায়,,অহনা তার পরিবার থেকে

বিদায় নেয়,,আবির খুব যত্ন সহকারে ওদের

গাড়িতে উঠিয়ে দেয়,,গাড়িটা যখন ছাড়ে আবিরের

বুক টা কেপেঁ উঠে,,তার এখন কেন জানি খুব খারাপ

লাগছে হয়তো মুটকি টাকে আর জ্বলাতে পারবে

না বলে।

আবির কলেজে যায় প্রত্যেক দিন কিন্তু তার

ভালো লাগে না,,,অহনা যে নেই। সব কিছু কেমন

জানি প্রানহীন মনে হচ্ছে তার তাহলে কি সেও

অহনা কে ভালবেসে ফেলেছে??

নিজেই নিজেকে কয়েক টা গালি দিল আবির, কি সব

ভাবছে সে,

সে অহনা কে কেন ভালবাসবে?? ওরা তো যাষ্ট

ফ্রেন্ড। কিন্তু আবির অহনা কে খুব মিস করছে

খুব। হঠাৎ আবির এর কাছে অহনার ফ্রেন্ড মাইশা

এসে আবিরের হাতে একটা চিরকুট দিলো আর

বললো

- আবির অহনা বলেছে তুই যখন ওকে খুব মিস

করবি তখন এই চিরকুট টা তোকে দিতে,আমার

কেন জানি মনে হচ্ছে তুই আজকে ওকে একটু

বেশিই মিস করছিস,এই নে।বাই।

চিরকুট টা দিয়ে মাইশা চলে যায়, আবির দ্রুত চিঠিটা

পড়ে

-. কিরে কেমন আছিস এই মুটকি টাকে ছাড়া??

ভালোই নিশ্চয়?? জানিস আমি ভালো নেই কারন

আমার সব ভাললাগা তো তোকে জুড়ে,সেই তুই

যখন নেই তখন কিভাবে ভাল থাকি বল?? আমি

তোকে খুব ভালবাসি রে,,কিন্তু বুঝতে পারলাম তুই

কখনো ই আমাকে নিয়ে এসব ভাবিস নি। জানিস

এখন আর আমার রাগ আসে না,,ইচ্ছে করে না

রাগতে কারন রাগ ভাঙানোর মানুষ নেই তো আর।

এখন আর হয়তো কেউ আমার জন্য মাঝ রাতে

আইস্ক্রিম আনবেনা,কেউ হয়তো আর আমার

চুলে টান দিবেনা,,,জানিস চুল গুলো এখন কেমন

জানি হয়ে গেছে কারন ওদের টানার মত মানুষ যে

নেই আর,এখন আর ওসব চুলের প্রতি কোন

আগ্রহ নেই আমার।

ওইদিন যখন তুই মিথ্যে প্রপজ করেছিলি আমায় তখন

আমি নিজেকে খুব সুখী মনে করে ছিলাম

কিন্তু.... জানিস তুই যদি একবার বলতি আমায় ছেড়ে

যাস না তাহলে আমি সারা জীবন তোর জন্য

অপেক্ষা করতাম তা যেভাবেই হোক না কেন

কিন্তু তুই বলিস নি। যাই হোক তুই ভাল আছিস এই

যথেষ্ট আমার জন্য। এই মুটকি টাকে ভুলিস না কিন্তু।

ভাল থাকিস বাই।

ইতি তোর মুটকি।

আবির কান্না করছে, আর ভিড়ভিড় করে বলছে অহনা

আমি ভালো নেইরে তোকে ছাড়া,প্লিজ তুই

ফিরে আয় কথা দিচ্ছি তোকে প্রতিদিন রাত্রে

আইস্ক্রিম খাওয়াবো,তোর চুল কখনো আর

টানবো নাহ তাও ফিরে আয়,আমি যে পারছি না

তোকে ছাড়া থাকতে। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার

বিশ্বাস কর।

সমাপ্ত...


গল্প : অনুভূতি 

লেখাঃ অদৃশ্য

সব ধরনের গল্প পড়ুন আমাদের ওয়েব সাইটে।

Previous Post Next Post