খুব কষ্টের ভালোবাসার গল্প | ভালোবাসার গল্প

 নীল ক্যাফের ভালোবাসা

নীল ক্যাফের ভালোবাসা

ফিজিক্যাল রিলেশন ?????

আকাশ : হ্যা , আমাদের রিলেশন তো অনেক দিন এর হলো এবার তাহলে ফিজিক্যাল রিলেশনে যাওয়া যাক ?

নিলা : কি বলছো এসব ? ( আশ্চর্য হয়ে )

আকাশ : মনে হয়না এমন কিছু বলেছি যা তুমি বুঝতে পারছোনা ।

নিলা : তোমার কি শরির খারাপ করলো নাকি ? এমন বাজে কথা কেনো বলছো তুমি ? ( মুখে যথেষ্ট বিরক্তির ছাপ নিয়ে ) 

আকাশ : বাজে কথা ? আমার কথা এখন তোমার কাছে বাজে মনে হচ্ছে ? আমার জন্য তোমার মনে একটুও ভালবাসা থাকলে আজ আমার কথা বাজে মনে হতোনা ।

নিলা : ছি আকাশ !!! তোমার থেকে এসব শুনব কখনোই আশা করিনি ।

আকাশ : এখানে ছি বলার আর আমার থেকে এসব আসা না করার কি আছে ? ছেলেরা মেয়েদের কাছে এরকম কিছু আশা করবে এটাই স্বভাবিক । আমার ফ্রেন্ডরা তো কিছুদিন পর পরই নতুন নতুন মেয়ের সাথে রুম ডেট করে । সেখানে আমি তো শুধু তোমার সাথেই রুম ডেট করতে চাচ্ছি । এখানে ভুলের কি আছে ?

নিলা : আকাশ ? আমি তো তোমায় সব ছেলের মতো ভাবতাম না । সবার থেকে আলাদা চিন্তাভাবনার একজন মানুষ ভাবতাম । (চোখের কোনায় আশ্রু জমলো নিলার)

আকাশ : (করুন চাহুনিতে) আচ্ছা বাদ দাও ওসব কথা । চলোনা, প্লিজ..........এটা তেমন কিছুই তো না ।

নিলা : চুপ.....বেহায়া....

আকাশ : আমায় বেহায়া বললা ? আজ তোমার মনে আমার জন্য বিন্দুমাত্র ভালবাসা থাকলে আমাকে ফিরিয়ে দিতে না ।

নিলা : যা মন চায় বলো .......

আকাশ : আরে আরে , দারাও......কোথায় যাচ্ছ ??? 


.

 ততোক্ষনে নিলা পার্ক এর বেঞ্চ থেকে উঠে সেখান থেকে চোলে আসার উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করেছে । আকাশ পেছন থেকে ডাকছে , কিন্তু নিলা আর পেছনে ফিরতে চায়না । দ্রুত পায়ে হেটে নিলা পার্ক থেকে হেটে বাহিরে চলে আসলো । দুইপাশের গাছগুলো আর নিলা ব্যাতিত রাস্তায় আর কেউ নেই । সূর্যের আলো সন্ধার আঁধারে বিলিন হয়ে যাচ্ছে । এই দৃশ্যটা এতোটাও খারাপ না। অন্যদিন হলে নিলা এই দৃশ্যটা আবশ্যই উপভোগ করতো । কিন্তু আজ সে এসব কিছুই খেয়াল করছেনা । তার মনে এখন অন্য চিন্তা বিরাজ করছে । নিলা ভাবছে....

কি হলো হঠাৎ আকাশের ? আকাশ কি নিলার সাথে মজা করছে ? আকাশ তো প্রায় নিলার সাথে মজা করে । একদিন বড় রকমের মজাও করেছিলো । ওইদিন সকালে নিলাকে ফোন করে বললো ওর নাকি অনেক শরীর খারাপ কিন্তু ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কেউ নেই । নিলা ভালো করেই জানতো আকাশের বাবা ব্যবসার কাজে বেশির ভাগ সময় বাহিরে থাকতো আর আকাশের মা না থাকায় কয়েকজন কাজের লোক ছাড়া আকাশের দেখাশোনার জন্য কেও নেই । নিলা আকাশের অসুস্থতার কথা শুনে অনেক চিন্তিত হয়ে পরে । সেইদিন সারাদিন হাল্কা হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছিলো । তবুও নিলা তার প্রিয়জনের কথা চিন্তা করে বৃষ্টির ভেতরেই আকাশদের বাসায় চলে যায় । কিন্তু আকাশের দরজার সামনে গিয়ে নিলা ভয় পাচ্ছিলো অনেক । হাজার হোক, নিলা তো একজন মেয়ে তাও আবার একা । দরজায় নক করতেই দরজা খুলে যায় । নিলা ভয়ে ভয়ে বাসায় প্রবেশ করে । বাসায় কেমন জানি পোড়া পোড়া গন্ধ । ভালো করে খেয়াল করে দেখে গন্ধটা রান্নাঘর থেকে আসছে । নিলা রান্না ঘরে উকি মারতেই আকাশ রান্নাঘর থেকে বের হয়..

আকাশ : এসেছো ? ওয়েট দরজা লাগিয়ে আসি । 

(দরজা লাগাতেই নিলা ভয়ে কেপে উঠলো)

নিলা : তুতুমি না অঅসুস্থ ?? (তোতলাতে তোতলাতে)

আকাশ : আরে, এটা না বললে তুমি কি আসতে এখানে ?

নিলা : কেন আসতে বলেছিলে তাহলে ?

আকাশ : আসলে আজ তো বৃষ্টি , তাই সকাল থেকে খিচুরি রান্না করার চেস্টা করছিলাম । ভেবেছিলাম তোমায় আমি নিজে রান্না করে সারপ্রাইজ দেবো ।

নিলা : তুমি রান্না করবে দেখে আমায় ডেখেছো ? (স্বস্তির হাসির সাথে)

আকাশ : হ্যা , কেনো ? তুমি কি ভেবেছিলা ?

নিলা : না , কিছুনা । কই রান্না করেছো দেখি ?

আকাশ : চলো, রান্না ঘরেই আছে । পাতিলের নিচের দিকের খিচুরি একটু পুরে গেছে কিন্তু উপরে ভালো আছে ।

তারপর দুজন মিলে খাবার টেবিলে বসে নিলা মুখে খাবার তুলতেই নিলার মুখটা কেমণ জেন তিতা তিতা দেখাচ্ছে । আকাশ নিলাকে জিজ্ঞেস করলো..

আকাশ : কি হলো ? অনেক স্বাধ হয়েছে না ?

নিলা : (যথেষ্ট রাগের সাথে) দেখ আকাশ আমার মনে হয়না তোমার রান্না করা উচিত ?

আকাশ : কেন ?

নিলা : এটা কিছু হলো ? না ঝাল বা লবন ? আর তিতা তিতা হয়ে গেছে পুড়ে !!!!!!! 

.

ওইদিন আকাশের হাতের খিছুরির কথা মনে করলেও মুখ তেতো হয়ে যায় ।

কিন্তু আজকে আকাশের কি হলো হঠাৎ ?

রাতে যখন ফোন দিয়ে বল্লো পার্কে সন্ধার আগে দেখা করতে । বলেই ফোন টা কেটে দিয়েছিলো । সারাদিন আকাশের বন্ধ ছিলো বলে বিকেলই বলা পার্কে আসলো । নিলা এসে বেশ কিচ্ছুক্ষণ অপেক্ষার পর আকাশ এসেই নিলার কাছে এমন অপ্রত্যাশিত কিছু বললো ।

কিন্তু নিলা এখন দ্বিধায় পরে গেছে । সেদিন বাসায় একা পেয়েও যে ছেলে নিলার কনো ক্ষতি করলো না আজ কিভাবে সে নিলাকে এমন কুপ্রস্তাব দেবে ?

না, নিলা আর কিছুই ভাবতে পারছেনা । রাত নাম্বে নাম্বে ভাব তাই নিলা হাটার গতি বাড়িয়ে দিল হোস্টেলের উদ্দেশ্যে । হঠাৎ একটা কালো গাড়ি এসে নিলার পথ আটকে দিলো । নিলা কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়ির পেছনের দরজা খুলে আকাশ বের হয়ে নিলার হাত ধরলো । নিলা বললো...

নিলা : হাত ছাড়ো বলছি !!!!!!

আকাশ : ওরে আসছে আমার "হাত ছাড়ো" । অনেক দেখসি তোর ন্যাকামু , আর না । তোর মতো গেয়ো ভুতের পেছনে অলরেডি অনেক বেশি সময় নষ্ট করে ফেলেছি ।

নিলা কিছু বলার আগেই আকাশ নিলার মুখ বেধে ফেললো আর হাত ধরে টেনে হিচরে গাড়িতে তুল্লো ।

নিলা হাত দিতে আকাশকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে বেড় হতে চাইলে আকাশ তার হাত বেধে গাড়ির দরজা লাগিয়ে দেয় । সামনের সিটে বসে থাকা একটি ছেলে পিছের দিকে হয়ে আকাশকে বললো 

"দোস্ত, অনেক দিন পর মজা হচ্ছে আজকে "

তারপর আকাশ বললো..

আকাশ : আরে মজার তো কিছুই হয় নাই এখনো, আসল মজা তো বাকিই আছে । হা হা হা...........

(সামনে ড্রাইভারকে বলে)

ড্রাইভার চলো......

নিলার সামনের দিকে তাকিয়ে ড্রাইভারকে দেখলো । ড্রাইভার একটু মিচকি হাসি দিয়ে গড়ি স্টার্ট করলো । এই লোকটাকে সে আগে দেখে নি । লোকটার বয়স অনেক । নিলা ভাবছে এই লোকটা মানুষরুপি জানোয়ার কারণ, তার মেয়ের বয়োসি একটা মেয়ের এত্ত বড়ো একটা ক্ষতি হতে যাচ্ছে আর সে এই কাজে বাধা না দিয়ে সাহায্য করছে । এই লোককে আর কি বলবে ? 

যাকে সে এত্তো ভালোবাসতো এত্তো ভরসা করতো সেই আজকে এত্তো বড়ো ক্ষতিটা করবে আর কাকেই বা কি বলবে ।

গাড়ি চালু হওয়ার সাথে সাথে আকাশ নিলার চোখে কাপর বেধে দিলো । নিলার পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে আসলো । নিলার রাগ আস্তে আস্তে ভয়ে পরিনত হতে লাগলো । সেই ভয় যেই ভয়ে সে সবসমায় পালিয়ে এসেছে ।

নিলা আগে গ্রামে থাকতো । মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে নিলা । লিখাপড়ার অনেক ইচ্ছে তার । কিন্তু চেয়ারম্যানের ছেলের জন্য ওর চলাফেরায় বেশ সমস্যা হচ্ছিলো । নিলা দেখতে সুন্দর হওয়ায় চেয়ারম্যানের ছেলের কুনজর নিলার উপর পরে । সেই ভয়ে নিলাকে নিলার বাবা মা খালার বাসায় পাঠায় দেয় । নিলা খালার বাসা থেকেই SSC আর HSC পাস করে । কিন্তু তবুও সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতো নিলা । নিলা ক্লাস নাইনে পড়তে তাদের গ্রামের এক মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছিলো চেয়ারম্যানের ছেলে আর তার বন্ধুরা । নির্মমভাবে মানুষরুপী জানোয়ারগুলো ছিড়ে খেয়েছিলো মেয়েটির শরীর । তুলে নিয়ে যাওয়ার পড়ের দিন সকালে বাড়ির সামনে অর্ধ উলঙ্গ রক্তাক্ত দেহটিকে তারা গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে গেছিলো । মেয়েটি সবার সামনেই গলাকাটা মুরগির মতো ছটফট করেছিলো কিছুক্ষণ । তারপর শেষ নিশ্বাস ছেড়েছিলো মেয়েটি । এখন ছোটবেলায় দেখা ওই দৃশ্যটাই ভেসে উঠছে চোখের সামনে । নিজের সাথে কি হতে চলেছে এটা ভাবতেই কেপে কেপে উঠছে নিলা...............

.


-গল্পঃসারপ্রাইজ

-পর্ব_১

সংগ্রহীত 


.

.


-গল্পঃসারপ্রাইজ

-পর্ব_2_ও_শেষ_পর্ব


নিজের সাথে কি হতে চলেছে এটা ভাবতেই কেপে কেপে উঠছে নিলা ।

নিলার দু চোখ থেকে দু ফোটা জ্বল বেরিয়ে চোখে বাধা কাপরের সাথে মিশে গেলো । মনে মনে নিজেকেই সে দোষারোপ কর‍তে থাকে । কেনো সে আকাশের মতো একটা ছেলেকে নিজের মন দিয়ে ফেললো ?

তার ক্লাসের বান্ধবিরা অনেক মানা করেছিলো জাতে সে আকাশের সাথে রিলেশনে না যায় ।

খালার বাসা থেকে যখন নিলা ভালো রেসাল্টের সাথে HSC পাশ করে তখন নিলার খালারা বলে নিলাকে বিয়ে দিয়ে দিতে । কিন্তু নিলার লেখাপড়া করে শিক্ষিত হওয়ার তিব্র ইচ্ছে । তাই তার বাবা মা আর লিখাপড়ায় বাধা দেয়নি । ঢাকাই ভালো একটা ভার্সিটিতে চান্স পায় নিলা । তারপড় লিখা পড়ার জন্য শহরে এশে পাড়ি জমালো নিলা । জায়গা পেলো একটি মহিলা হোস্টেলে । এখানকার পরিবেশটা একদম আলাদা গ্রামের থেকে । দামি দামি পোশাক পরা স্টাইল করে ঘুড়া মেয়েদের মাঝে নিলার সাদামাটা পোশাক নিলাকে সবার থেকে আলাদা করে । এটা নিয়ে নিলার কোনো মাথা ব্যাথা নেই । সে স্বাভাবিক ভাবেই ভার্সিটিতে যায় ক্লাস করে, আবার হোস্টেলে চোলে আসে । তার কিছু বান্ধবিও হয় যারা নিলার মতো গ্রাম থেকে এসে হোস্টেলে থেকে লিখাপড়া করে । তবে নিলা সবসময় নিজেকে সব ছেলেদের নজর থেকে এরিয়ে রাখে । আর তার বান্ধবীদের থেকে জানতে পারে এখানে অধিকংশ ছেলে মেয়েই সামোয়িক আনন্দের জন্য সম্পর্কে জরায় আর শরীরের চাহিদা পুরন হলে তারা সম্পর্ক ভেঙে নতুন সম্পর্কে জরায় । তাদের কাছে এটা স্বাভাবিক মনে হলেও নিলার কাছে এটা বেহায়াপনা ছাড়া কিছুই না । তাই নিলা নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করে যে সে কখনো সম্পর্কে জরাবে না । কিন্তু তার এই প্রতিজ্ঞা ভাঙতে হয়েছিলো আকাশের ভালোবাসার কাছে । নিলার সাজসজ্জাহীন সুন্দর্য সব ছেলেদের চোখ এরিয়ে গেলেও আকাশের চোখ এরায় নি । ভার্সিটিতে আসার কিছুদিন পর পরই নিলার মনে হতে লাগলো তাকে কেউ ফলো করে । কারন , ক্লাস করতে করতে হঠাৎ জানালার দিকে তাকালে মনে হয় কেউ ছিলো সেখানে । আবার রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে পায়ের শব্দ পায় । পিছে তাকাতেই মনে হয় কেউ যেন দৌড় দিলো সেখান থেকে । এভাবেই চলতে থাকে নিলার দিন । নিলা আবার ভাবে এটা হয়তো ওড় মনের ভুল । কারন , ওর মতো সাদাসিধে মেয়ের পিছে কে লাগবে এখানে আর এখানে এরকম মেয়েদের ক্ষ্যাত বলে ।

একদিন ক্লাস শেষ করে হোস্টেলে যেতে নিলা আবার বুঝতে পারলো ওকে আবার কেউ ফলো করছে । এবার নিলা না দেখার ভান ধরে হোস্টেলে চলে আসলো । হোস্টেলের গেটে ডুকেই গেট লাগিয়ে গেট এর ফাক দিয়ে দেখার চেস্টা করলো নিলা । প্রথমে কিছু দেখতে পেলো না । তারপর দেখলো সুন্দর দেখতে লম্বা আর ফর্সা একটি ছেলে কাকে মনে হয় খুজছে আসে পাসে আর মাথায় হাত ভুলোচ্ছে যেন কিছু হারিয়ে ফেলেছে । তারপর নিলা ভেবে দেখলো এই ছেলেটা তাদের ভার্সিটিতেই পড়ে আর নিলার আসে পাসেই থাকে বিভিন্ন কাজের অজুহাতে । নিলা আগে ভালোমতো খেয়াল করতো না । তারপরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে দেখলো সেই ছেলে বন্ধুদের সাথে কথা বলার ছলে সবসময় নিলার দিকে তাকিয়ে থাকে চোখাচোখি হলেই চোখ নামিয়ে নেয় ছেলেটি যেন লজ্জা পেলো । কোনো ছেলেও লজ্জা পায় ? এটা দেখে নিলা অবাক হয়েছিলো অনেক । বন্ধবির থেকে যেনেছিলো ছেলটার নাম আকাশ আর দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। আকাশের চাহনিতে আস্তে আস্তে নিলা অভ্যস্ত হয়ে গেছিলো । এভাবেই নিলার প্রথম বছর পার হয় । নিলা দ্বিতীয় বর্ষে ওঠার পড় আকাশ নিলাকে চিঠি দিয়েছিলো একটা । সেই চিঠিতেই আকাশের মনের কথা লিখা ছিলো । আর এটাও লিখা ছিলো যে আকাশ নিলাকে অনেক ভয় পায় তাই সামনে এসে বলতে পারলোনা । এসব দেখে নিলার অবাক হওয়ার সীমা ছাড়িয়ে গেছিলো । এদিক দিয়েই আকাশ সবার থেকে আলাদা একটা ছেলে । যদিও নিলা প্রথমে সরাসরি না করে দিয়েছিলো তবুও আকাশের প্রতি কেন জানি নিলার দুর্বলতা সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে সে সম্পর্কে জড়িয়ে যায় । মধ্যবিত্ত পরিবারে মেয়েদের মতো নিলাও বলেছিলো "আমার পরিবার তো এসব মানবেন না" তখন আকাশ বলেছিলো "সেটা নিয়ে তুমি কেনো ভাবছো, পরিবার মেনেজ করার দায়িত্ব তো ছেলেদের হয় , তইনা ? "

নিলা আকাশের মাঝে নিজের পবিত্র একটা ভবিষ্যৎ দেখতে পেতো । অনেক ভরসা করতো আকাশের উপর । কিন্তু এখন শুধু ঘ্রিনা হচ্ছে আকাশের উপর আর নিজের উপর । এখন এসব ভাবা ছাড়া আর কিছুই করা সম্ভব না ।

নিলাকে ভাবনার জগৎ থেকে বের হতে হলো গাড়ী থামার কারনে । কিন্তু নিলা দেখতে পাচ্ছেনা সে কোথায় পোছালো চোখা বাধা থাকার কারনে । তারপর সে বুঝতে পারলো আকাশ গাড়ি থেকে নেমে গেলো । গাড়ির দরজা খুলে আকাশ নিলাকে গাড়ি থেকে নামালো । তারপর আকাশ কাকে যেনো বললো...

আকাশ : আবীর ?? মাল তো রেডি । জায়গা রেডি তো ??

আবীর : হা রেডি ।

আকাশ : তুই কিন্তু পুড়োটুকু ভিডিও করবি । নেট এ সেয়ার করবো ।

আবীর : Don't worry , just chill bro !!!!!

তারপর নিলা জোরে করে দুজনের হাত মিলানোর শব্দ পেলো । মনে হয় আকাশ আর ওই ছেলেটা হাত মিলাল খুশিতে । নিলা যা যা শুনলো এটা শোনার পর নিলা এক্কেবারে পাথর হয়ে গেলো । না পারছে কান্না করতে না পারছে চুপ থাকতে । নরাচরা করার মতো ব্যর্থ চেষ্টা না করে নিল আল্লাহর কাছে মাফ চাচ্ছে নিজের এই ভুলের জন্য । তারপর নিলাকে আকাশ আস্তে আস্তে ধরে কোথায় যেনো নিয়ে গেলো । কিন্তু নিলা কিচ্ছুক্ষণ পর বুঝতে পারলো তাকে শিরি দিয়ে উঠানো হচ্ছে । ওকে একটি ঘড়ে ঢুকানো হলো । নিলার কেমন যেনো মনে হলো ঘড়ের ভেতরে আরো মানুষ আছে । নিলাকে একটি চেয়ারে বসানো হলো । নিলার নরাচরা করার শক্তি নাই আর তাই চুপ করে বসে পড়লো । তারপর আকাশ বললো....

আকাশ : আবীর ভিডিও চলছে তো ?

আবীর : হ্যা

আকাশ : ওকে । এখন খেলা হবে ।।।।।।।

আকাশ নিলার হাতের বাঁধন খুলে দিলো কিন্তু নিলা তবুও নড়লোনা । পাথর হয়ে গেছে তারপর চোখের বাধন খুলতে লাগলো । নিলা এবার কাপতে লাগলো, কারন নিজের চোখেই নিজেকে নষ্ট হতে দেখতে হবে.......

চোখ খুলতেই.......

Happy Birthday..... (সবায় একসাথে)

নিলার চোখ তো ছানাবড়া । নিলা তাকিয়ে দ্যাখে নিলার সামনে নিলার একটা টেবিল , টেবিলে অনেক বড় একটা কেক , কেকে লিখা আছে Happy Birthday to Nila .

আর টেবিলের পাশে দারিয়ে আছে নিলার বাবা মা । তাদের পাশে একটা আচেনা মহিলা আর ওই লোকটা যে লোকটা গাড়ির ড্রাইভার ছিলো । আর গাড়ির সামনের সিটে যেই ছেলেটা বসেছিলো সেই ছেলেটা সবকিছু ভিডিও করছে । এই ছেলের নামই সম্ভবত আবীর । নিলা বললো.......

নিলা : বাবা, মা তোমার ? কি হচ্ছে এসব ?

নিলার বাবা : হ্যা মা, আমারা তোর জন্মদিনের জন্য এসেছি । আমাদের আকাশ ই সকালে গিয়ে নিয়ে এসেছে এখানে ।

নিলা : তোমরা আকাশকে কিভাবে চেনো ?

নিলার মা : তুই ভার্সিটি তে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পরেই আকাশ আমাদের বাসায় গিয়েছিলো তার বাবা আর ফুফুকে নিয়ে ।

নিলা : (মনে মনে ভাবছে আকাশ তো ওকে ২য় বর্ষে থাকতে চিঠি লিখেছিলো) কিন্তু কিভাবে ? আমি তো ২য় বর্ষে থাকতে আকাশকে.......

গাড়িতে থাকা লোকটি : মা শোনো , আমার ছেলেটা খুব লাজুক ছোট বেলা থেকেই মা ছাড়া মানুষ হয়েছে ফুফুর কাছে । কখনো কিছু লাগলে ফুফুর কাছেই বলতো । কিন্তু এটাই প্রথম যে ও আমার কাছে কিছু চেয়েছে তাই তোমায় না জানিয়েই ওকে সাথে নিয়ে তোমার বাবা মার কাছে গেছিলাম যাতে আমার ছেলেটা খুশি থাকে ।

নিলা : ..........(চুপ হয়ে গেছে)

নিলার বাবা : কিরে মা ? চিনতে পারিস নি ? ইনিই আকাশের বাবা আর তোর হবু শশুর । আর উনি (আচেনা মহিলাটির দিকে দেখিয়ে) হচ্ছেন আকাশের ফুফু ।

নিলা : তার মানে এগুলো সব আকাশ আগে থেকে প্ল্যান করে রেখছিলো ? আকাশের প্ল্যান এগুলো ?

আবীর : হ্যা ভাবি , আকাশ ভাইয়াই এসব প্লান করেছিলো আপনাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য । আর আমি তো আকাশ ভাইয়ার ফুফাতো ভাই তাই আমিও ভাইয়ার সাহায্য কোরলাম আর কি!!! হা হা হা.....

নিলা : (রেগে চোখমুখ লাল করে) কি ????? কই সে ?? আসতে দাও ওকে দেখাচ্ছি ওর মজা ।

ফুফু : (এসে নিলাকে ধোরে মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে) তুমি রাগ কোরোনা মা । আকাশ আমার নিজের ছেলে না হলেও কখনো নিজের ছেলের থেকে কম ভাবিনি । ওকে এমন কোনো শিক্ষা দিই নি যাতে অন্য কাওকে কষ্ট দিবে। কিন্তু ও কাছের মানুষগুলোর সাথে একটু দুষ্টুমি করে । আজ হয়তো একটু বেশিই হয়ে গেছে ।

নিলা : কিন্তু আকাশ কই ?

হঠাৎ আকাশ আসলো পিছে থেকে হাতে কিছু ফুল নিয়ে......

আকাশ : Many many Happy Returns of the day Princess . তোমার জন্মদিন টা যাতে স্মরনিয়ো হয়ে থাকে তাই একটু আর কি........( কথা শেষ হওয়ার আগেই আবীর কথা কেড়ে নিলো)

আবীর : ভাবি , কেক টা কি কাটবেন ??? আকাশ ভাই সকাল থেকে সবাইকে না খাইয়ে রেখেছে :( :(

আকাশ : হ্যা হ্যা , চলো কেক টা কাটি ।

তারপর নিলা ফুলগুলো নিলো আর সবায় মিলে কেকটা কাটলো । নিলা কেক কেটে কাকে আগে খাওয়াবে এটা ভেবে কেকের টুকরো নিয়ে বাবা মার দিকে আর আকাশের দিকে তাকালো । আকাশ নিলাকে ইশারা করে নিলার বাবা মা কে আগে কেক খাওয়াতে বললো । নিলাও তাই করলো

কেক খাওয়ানোর পর্ব শেষ করে আকাশ নিলাকে বললো ...

আকাশ : তোমার Birthday Gift নিবানা ?

নিলা : Gift ?

আকাশ : হ্যা Gift । বাবা ?

আকাশের বাবা : ও হ্যা, এই নে ধর ( পকেট থেকে একটি আংটি বের করে আকাশের হাতে ধরিয়ে দিলো )

আকাশ হাতে আংটি টা নিয়ে নিলার দিকে তাকিয়ে নিলাকে বললো "Will you marry me..... Please......... "

নিলার ওর মা বাবার দিকে তাকালো , তখন নিলার মা বললো....

মা : আকাশ অনেক ভালো ছেলে মা । তুই ওর কাছে থাকলে অনেক ভালো থাকবি মা ।

বাবা : হ্যা মা , তোর মা ঠিক বলেছে । তোকে আকাশের হাতে তুলে দিলে আমরাও চিন্তামুক্ত হব । তোকে ছোট থেকে বড় করতে কতো চিন্তা করতে হতো তোকে নিরাপদ রাখার জন্য । এই নে আংটি মা ( নিলার বাবাও আংটি দিলো নিলাকে)

নিলার চোখ থেকে পানি পোরছে । এটাই হয়তো খুশির কান্না । তারপর আংটি বদল হয়ে গেলো । সবায় খুশি তখন আবীর বললো ,

"ভাই রে খাওয়ার কি কিছু আছে ??? খিদায় পেট জ্বলতেছে "

আকাশ : আরে , ভুলেই তো গেছিলাম ।

নিলা : কি ভুলে গেছিলা ?

আকাশ : আর একটা সারপ্রাইজ বাকি আছে ।

নিলা : আবার সারপ্রাইজ ??????????

আকাশ : আরে তেমন কিছুনা , আসলে তোমার জন্মদিন আর আমাদের এঙ্গেজমেন্ট উপলক্ষে আমি সবার জন্য আমার নিজের রেসিপির স্পেশাল বিরিয়ানি বানিয়েছে । তুমি খাবে না ????

.

এটা শোনার সাথে সাথেই নিলার মনে পরে গেলো আকাশের আগের বারে রান্না করা বিদঘুটে সাধের খিচুরির কথা আর নিলা বলে উঠলো........

নিলা : Naaaaaaaaaaaaaaaaaaaaaa..............

.

সমাপ্ত


রোম্যান্টিক সব ধরনের গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post