বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প | গরিবের দুঃখের গল্প

 বাস্তব জীবনের গল্প

বাস্তব জীবনের গল্প

গল্পের নাম:    ____ না_খেয়ে_থাকা  ____

- ভাইয়া দুইডা ট্যাহা দিবেন?

- কিসের টাকা?

- ভাই আজ সারাদিন কিছু খাই নাই।

- তো আমি কি করুম?

- দেন না দুইডা ট্যাহা।

- নাই এখন যা ভাগ।

- ভাই আপনি আপুরে তো অনেক কিছু কিইনা

দিলেন, দেন কিছু খাওন।

.

- রিয়ান এই ছোটলোকের বাচ্চাটাকে

তাড়াও তো এখান থেকে।

- জান, রাগ করো না, একটু দাঁড়াও,

এই তুই কি এখন যাবি এখান থেকে?

- ভাই খুব ক্ষিধে লাগছে, দেন না কিছু!

- তবে রে, যা ভাগ ( ঘাড়ে ধরে ধাক্কা

দিয়ে মাটিতে ফেলে দিল)

______↓

ঘটনাটা ভালো করে দেখার জন্য ওর কাছে

গেলাম। এখন বিকেল„,শুক্রবার হৃদিদের বাসায় গিয়েছি ওদের বাসা হল মাতুয়াইল কবরস্হান মসজিদের পাশ্বে,ওই পাজিটাকে পড়াতে গিয়েছি,নিজের কাছেই খুব লজ্জা লাগে নিজের ক্লাসমিট কে পড়ানো,আমি যখন ফেইসবুকে গল্প লিখতাম তখন হৃদি

আমার গল্প পড়ে ফ্রেন্ড রিকোষ্ট দেয়।

এরপর আমিও একসেপ্ট করে ফেলি তার রিকোষ্ট,নিজেও জানি না, কিভাবে একসেপ্ট করেছি। এরপর থেকে তার সাথে আমার পরিচয়,,ধীরে ধীরে আমরা খুব ভাল বন্ধু  হয়ে যাই।

 সে পড়তো সামসুল হক স্কুল এন্ড কলেজ আর আমি দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়তাম..!

আমরা দুজন দুই কলজে পড়লেও আমাদের বন্ধুর্ত্ব ঠিকই চলতো কখনো কখনো  ফোনের পিপ পিপ করা সবুজ বাতিতে,বা 

 কখনো শনির আখড়ার রেডিয়ান্টকোচিং সেন্টারের সামনে,আবার কখনো ওর বাসায়,এভাবে আমাদের বন্ধুর্ত্ব ভালোই চলছে।

হৃদি আবার ম্যানেজম্যান্টে খুব দূর্বল ছিল।

কিছুই বুঝতো না।

একদিন ওর বাসায় গিয়ে অকে পড়া  বুঝিয়েছি,

এরপর থেকে ওর আম্মু আমায় নিজের ছেলের মত করে দেখে এবং হঠাৎ একদিন বলে বাবা হৃদি কে তুমি সবসময় বাসায় এসে একটু পড়িয়ে যেও।

আমি আর কি করার, যতই হোক নিজের মায়ের মতো তো,তাই রাজি হতে হল।

লক্ষীবাজার থেকে কবরস্হান মসজিদে আসা খুব কষ্টকর তবুও আসতে হয়..!

অকে পড়াতে।

আর শয়তানিটা না পড়ে আমার সাথে দুষ্টুমি করতো শুধু।

তখন মনে মনে ভাবতাম কেন জানি সামসুল হক স্কুল এন্ড কলেজের মেয়ের সাথে বন্ধু্র্ত্ব করতে গিয়েছি।

আমি কোন সময় রাগ করলে কিভাবে জানি আবার আমার রাগ ভাঙ্গিয়ে ফেলে পাজিটা।

আমিও কম না, ওর চশমাটা মাঝে মাঝে খুলে লুকিয়ে ফেলতাম,আবার কখনো ওর খালামনির ছোট মেয়েকে দিয়ে চশমাটা খুলে ফেলতাম।এভাবেই আমাদের বন্ধুর্ত্ব চলতে থাকছে,মিষ্টি মিষ্টি ঝগড়া আর রাগ অভিমান দিয়ে..!

অতঃপর 

শয়তাননিটা আজ ওর আম্মুকে কি জানি বলেছে,,,

ওর আম্মু আমার কাছে এসে বলতেছে,বাবা

হৃদিকে তুমি একটু রমনা পার্ক থেকে ঘুরিয়ে আনো। ওর মনটা ও খুব খারাপ,জানোই তো হৃদি কোথাও বাহির হতে পারে না।

একটু ঘুরে আসলে ওর মনটা ও খুব ভাল হয়ে যাবে...

তাই অকে একটু বাহির থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আনো বাবা।

আমি আর কি করবো হুম বলতে হলো,,,

আর হৃদি পিছনে দাঁড়িয়ে সবকথা শুনে হাসতেছে।

অতঃপর হৃদিকে নিয়ে রমনা পার্কে এসেছি,

কত্ত জামেলা,মেয়েদের কে নিয়ে ঘুরাফেরা,,

 অতঃপর

অকে নিয়ে রমনা পার্কে ঢুকে একটা বেঞ্চে বসে আমি আর হৃদি আড্ডা দিচ্ছি 

হঠাৎ করে এখানে 

বসে এ দৃশ্য দেখবো এটা কখনো আশা করিনি।

ওই ছেলেটা নিচে পরে বোধ হয় একটু ব্যথা

পাইছে । তাই খুব মায়া হলো, হৃদিকে বললাম তুমি একটু বস, আমি ওই বেঞ্চিটার কাছ থেকে একটু আসি।

 ধীরে ধীরে 

ওই কাপলটার কাছে গেলাম।

.

- কি ভাই এইটুকু এক ছেলেকে এভাবে

ফেললেন কেন?(হৃদয়)

- দেখেন না কখন থেকে কানের কাছে

চিল্লাচিল্লি লাগিয়ে দিছে?(কাপলটা)

- চিল্লাচিল্লি করছে কেন?(হৃদয়)

- টাকা চায়, আজকে নাকি খায়নি,

যত্তোসব।(কাপলটা)

- তো বিশটা টাকা দিয়ে দিলেই তো

পারতেন।(হৃদয়)

- আরে মিয়া, ভাংতি নাই, পাঁচশো

টাকার নোট।(কাপলটা)

- তো ছেলেটাকে বললেই পারতেন

ভাংতি নাই, ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলার

কি আছে।(হৃদয়)

- আপনার এতো জ্ঞান দিতে হইবো না।(কাপলটা)

- আচ্ছা স্যরি, কিন্তু আপনি এটা ওর সাথে

এমন না করলেই পারতেন। আর আপনার পাশেই

তো আপনার জিএফ কত্তকিছু খাচ্ছে, হয়তো

আপনিই কিনে দিছেন, এখান থেকে একটা

রুটি অকে দিলে কি কম পড়তো?

আর আপু

আপনার মতো মেয়ের কাছ থেকে এমন

ব্যবহার আশা করা যায় না।(হৃদয়)

- উফফফ, এখানে এসে এর সাথে কথা বলাই

ভুল হইছে, চলো তো।(কাপলটা)

.

__তারপর কাপলটা চলে গেল এক দামী

প্রাইভেট কার্ড গাড়ি করে। হয়তো ওরা

দুজনেই খুব ধনী, এতো দামী গাড়ি করে

চলাচল করে, ধনী হওয়াটাই স্বাভাবিক।

তারপর ছেলেটাকে বললাম, আর ও তখনো ওই

মাটিতেই বসেছিল,,,,,

- এই হাত দে,(হৃদয়)

- ক্যান?(টুকাই ছেলেটি)

- আমার হাত ধরে উঠ।(হৃদয়)

- আপনার হাতে ময়লা লাগবো আমার হাত

থিক্কা।(টুকাই ছেলেটি)

- লাগব না, উঠ,(হৃদয়)

- আচ্ছা, ( আমার হাত ধরে উঠে দাড়ালো)

(টুকাই ছেলেটি)

- ওদের কাছে কি চাই ছিলি?(হৃদয়)

- দুইডা ট্যাহা চাইছিলাম।(টুকাই ছেলেটি)

- ক্যান?(হৃদয়)

 ( যদিও বিষয়টা জানি তবুও প্রশ্ন করলাম)

- খুব ক্ষিধে লাগছে। (টুকাই ছেলেটি)

- দুই টাকায় পেট ভরে? এখন তো একটা

আইসক্রিম কিনতেও দশটাকা লাগে।(হৃদয়)

- চুপ রইলো! (টুকাই ছেলেটি)

- তোর বাড়ি কই?(হৃদয়)

- এইযে সামনে যে ধানের মিলটা আছে ওর

ডানদিকে যে বস্তিগুলা আছে, ওখানে।

(টুকাই ছেলেটি)

- বাড়িতে কে কে আছে?(হৃদয়)

- আমি আর আমার বাপ,(টুকাই ছেলেটি)

- তোর বাপে কি করে?(হৃদয়)

- রিক্সা চালায়, কিন্তু দুইদিন ধইরা জ্বর

আইছে তাই যাইতে পারে না।(টুকাই ছেলেটি)

- ওষুধ খাইছে??(হৃদয়)

- না, ওষুধ কিনার টাকাও নাই, তয় বাপে

কইছে জ্বর একলাই ঠিক হইবো।(টুকাই ছেলেটি)

- তোর মা কই?(হৃদয়)

- মইরা গেছে অনেক আগেই।(টুকাই ছেলেটি)

- এইনে একশো টাকা,(হৃদয়)

- কি করুম?(টুকাই ছেলেটি)

- তাড়াতাড়ি ওই হোটেলে থেকে কিছু

খেয়ে আবার এখানে আয়।(হৃদয়)

- আচ্ছা ঠিক আছে।(টুকাই ছেলেটি)

- দাঁড়া আমিও তোর সাথে যাব।(হৃদয়)

- আচ্ছা চলেন।(টুকাই ছেলেটি)

.

তারপর ওর সাথে সাথে হোটেলের দিকে

গেলাম। একটা নামিদামী হোটেলই হবে

হয়তো, তাই আবার ভেতরে যাবার সময় আটকে গেলাম।

- এই যে ভাই, আপনার সাথে এ ছেলে আসছে

কেন? একে বাইরে রেখে আসুন।(হোটেল কর্মচারী)

- কেন ভাই কি হইছে?(হৃদয়)

-ওর পোশাকের অবস্থা দেখলে অন্য সব

কাস্টমার হোটেল থেকে উঠে যাবে, তাই

ওকে ভেতর নেওয়া যাবে না।(হোটেল কর্মচারী)

- আচ্ছা ভাই ঠিক আছে।(হৃদয়)

.

তারপর অকে বাইরে রেখে আমি ভেতর

থেকে কিছু খাবার কিনে আনলাম। তারপর

অকে নিয়ে হৃদির কাছে আসলাম,ওইখানের একটা

গাছের নিচে গেলাম।

.

- এই নে, এবার এগুলো খা।(হৃদয়)

- এই নেন আপনার একশো ট্যাহা।(টুকাই ছেলেটি)

- এটা ফেরত দিলি কেন?(হৃদয়)

- আপনিই তো খাবার আনলেন। আমার কাছের

এই ট্যাহা আর দরকার হয় নাই, তাই রেখে

দ্যান।(টুকাই ছেলেটি)

- এটা তোর কাছেই রাখ, আমি এই আছি এই

নাই, সবসময় কি তোর কাছে থাকুম নাকি?

তোর যখন দরকার পড়বো তখন এটা খরচ করবি।(হৃদয়)

- আচ্ছা।(টুকাই ছেলেটি)

- এখন খেয়ে নে।(হৃদয়)

.

এরপর ছেলেটা খেতে বসলো। সেই গাছটির 

পাশেই, এতো ধুলোবালি উড়ছে চারপাশে

তবুও ওর সে দিকে কোনো খেয়াল নেই, ওর

খেয়াল শুধু ওই খাবারের দিকে। পুরো হাত

ডুবিয়ে দিচ্ছে খাবারে, প্রতিটি গ্রাসে মুখ

ভর্তি করে খাবার পুরে দিচ্ছে মুখের

ভেতর। দেখলে মনে হয়, হাজার বছর ধরে না

খাওয়া অভুক্ত পেট আজ তৃপ্তি ভরে খেয়ে

ওর নির্লিপ্ত পেটের তৃষ্ণা মিটিয়ে

নিচ্ছে।

.

ওর এরকম খাওয়া দেখে আমারও খুব লোভ

হলো ওর সাথে বসে এক প্লেটে খেতে। এর

আগেও এগুলো অনেক খেয়েছি । তবুও তখন এতো

লোভ হয়নি কিন্তু ওর খাওয়া দেখে জিভের

জল আর বাধা মানছে না। আমার তৃপ্তি

মেটানোর জন্য সেখান থেকে এক গরাস

খেয়ে নিলাম। এতক্ষণে যেন একটু শান্তি

পেলাম।

.

এখন আমার নিজেরও খুব ভালো লাগছে অকে

খাওয়াতে পেরে আর ওর সাথে খেতে।

- এইনে পানির বোতল, হাত ধুয়ে নে।(হৃদয়)

- আপনি না খুব ভালো।(টুকাই ছেলেটি)

- তোর আর জামাকাপড় নাই?(হৃদয়)

- একটা জামা আর একটা প্যান্ট আছে। বাপে

গতবছর রিক্সা চালিয়া ঈদে কিনে দিছে,

ময়লা লাগবো তাই এখনো বের করি নাই।

(টুকাই ছেলেটি)

- এখানে থাক, আমি আসছি।(হৃদয়)

তারপর অকে ওই গাছতলায় বসিয়ে রেখে ওর

জন্য একটা জামা প্যান্ট কিনতে গিয়েছি।

তারপর মার্কেট থেকে জামা কাপড় কিনে

সেখানে গেলাম। গিয়ে দেখি এখনো বসে

আছে।

.

- এই নে এগুলো তোর।(হৃদয়)

- আফনে আমারে এতকিছু দিতেছেন ক্যান?

(টুকাই ছেলেটি)

- আমিও একদিন তোর জায়গায় ছিলাম, কিন্তু

কোনো এক ভাগ্যক্রমে আজ এখানে এসে

দাঁড়িয়েছি। তাই তোদের কেমন কষ্ট থাকে

সেটা আমি জানি।

[ততক্ষন হৃদি আমার কর্মকান্ড শুধু মনোযোগ দিয়ে দেখছে]

__এরপর হৃদি কে বললাম চলো, একটু আমার সাথে,,,

- ওহ্,,(হৃদি)

- চল তোর বাবার

 জন্য ওষুধ কিনে দেই।(হৃদয়)

- তাতে ঠিক হইবো তো?(টুকাই ছেলেটি)

- হইবো, চল।(হৃদয়)

.

তারপর ওখানকার এক ওষুধের দোকানে

গেলাম। গিয়ে কতগুলো ওষুধ কিনে ওর হাতে

দিলাম।

ওর হাতে ওষুধ গুলো দেওয়ার পর দেখি এক

পলকে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।

.

- কি রে কি হইছে?(হৃদয়)

- কিছু না, আফনের মতো মানুষ হয় না,

(টুকাই ছেলেটি)

- আছে রে আছে, তবে এই ধনীর যুগে খুবই কম।

আমিও হয়তো এমন হতাম না, যদি আমার

টাকা থাকতো অনেক ,হয়তো আমিও

অহংকার দেখাইতাম। কিন্তু আমার যদিও

এখনো টাকা পয়সা আছে তাতে নিজের পড়াশোনাই করি আর কিছু নিজের কাছে রাখি। তবুও আমি আগে

তোর মতোই কোনো এক গরীব ঘরে জন্ম

নিয়ে ছিলাম, অনেক কষ্ট করে এতদূর আসছি, সাথে নিজের পায়েও দাঁড়াচ্ছি,,,

তাই

তোদের মতো অবস্থা একদিন আমারও ছিলো।

তাই আজ তোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছি।

হয়তো তুইও একদিন অনেক বড় হতে পারবি,

আমার থেকেও বড়।

- দোয়া কইরেন,(টুকাই ছেলেটি)

- আচ্ছা, সবসময় করি।(হৃদয়)

- আমি এহন এতকিছু নিমু কেমনে?(টুকাই ছেলেটি)

- তোর বস্তি তো কাছেই, আমি এগিয়ে

দিয়ে আসি চল।(হৃদয়)

- থাক, অনেক করছেন, আমি না হয় কষ্ট কইরা

এতদূর যাই।(টুকাই ছেলেটি)

- আরে চল,,,(হৃদয়)

___তারপর ওর হাত থেকে ওষুধের ব্যাগটা

নিলাম। আর ওর হাতে ছিলো সেই

পোশাকের ব্যাগ, তারপর ধীরে ধীরে

এগুতে লাগলাম সামনের বস্তির দিকে।

.

- এই তুই পড়াশুনা করছ না?(হৃদয়)

- না।(টুকাই ছেলেটি)

- কেন?(হৃদয়)

- কয়দিন স্কুলে গেছি, অহন আর যাই না,

নিজেরই খাওন জুটে না, পড়াশুনা করুম

কেমনে?(টুকাই ছেলেটি)

- তোর বস্তিতে তো শুধু তুই আর তোর বাবা

থাকে, দুজনের খাওয়া চালিয়ে তো

পড়াশুনার জন্য টাকা থাকবো।(হৃদয়)

- আচ্ছা, যামুনি আবার স্কুলে, আমি নিজেই

বাদ দিছি, আবার নিজেই যামু, আপনার মতো

একজন ভালো মানুষ পড়তে কইছে তো ভাগ্য

মনে হয় ভালোই হইবো। স্কুলে যামু আবার,

(টুকাই ছেলেটি)

- আচ্ছা যাইস,(হৃদয়)

.

এরপর ওর সাথে টুকিটাকি কথা বলতে বলতে

বস্তিতে এসে পড়লাম। এখানে একসাথে

অনেক গুলো বস্তি লাইনে তৈরি করা

হয়েছে। ওর পিছু পিছু যেতে লাগলাম।

তারপর ও এক ভাঙাচোরা ঘরে ঢুকলো, শুধু

চালটা ছিলো টিনের আর চারপাশে ছালা

দিয়ে দেয়াল উঠানো।

.

সেখানে দেখি এক অসুস্থ মধ্য বয়স্ক এক লোক

শুয়ে আছে, ওনিই হয়তো ওর বাবা। তারপর

চকিতে ওষুধ রেখে চলে আসতে লাগলাম,আমি আর হৃদি।

- ভাই হুনেন,(টুকাই ছেলেটি)

- কি?(হৃদয়)

- আপনার পা ছুইয়া একটা সালাম করতে

দিবেন?(টুকাই ছেলেটি)

- আচ্ছা, কর,(হৃদয়)

- সালাম করলো!(টুকাই ছেলেটি)

- এখন যাই, আমার কাজ আছে,,(হৃদয়)

- ভাই আফনের কথা কোনো দিনও ভুলোমনা।

(টুকাই ছেলেটি)

- পাগল একটা, সবকিছু কেউ সারাজীবন মনে

রাখতে পারে না, শুধু কিছু কিছু স্মৃতি আছে

যেগুলো আবার মন থেকে কোনদিন মুছা

যায় না।(হৃদয়)

.

___এইগুলা বলে ওখান থেকে চলে আসলাম আমি আর হৃদি।

আবারও ধীর পায়ে আসছি, আসার সময়

ওখানেই একপাশের বস্তিতে চোখ গেল,,

দেখি এক মা তার ছেলেকে খাবার

খাওয়াচ্ছে, খাবারটা এতটা ভালো আর

স্বাদ না, দেখে মনে হয় কোথাকার কোনো

ফেলে দেওয়া খাবার এনেছে। 

তবুও

ছেলেটাকে দেখে মনে হলো, খুব তৃপ্তি

ভরে মার হাতে তুলে দেওয়া খাবার

খাচ্ছে। আর মুখের কোণে এক চিলতে হাসি।

.

ছেলেটির মা ছেলের এই তৃপ্তি ভরে খেতে

দেখে কেঁদে ফেলছে, টপটপ করে চোখের

কোণ দিয়ে পানি পড়ছে ওনার। ছেলের খুশি

দেখে ওনি তাড়াতাড়ি চোখের পানিটা

মুছে একটা হাসি দিল, কারণ তার ছেলে

ওতেই খুশি। ওই ফেলে দেওয়া খাবারটি

মার হাতে খেয়েই ছেলেটা অনেক সুখী।,,,

.,,,,↓

এটাই হয়তো প্রকৃত সুখ। শত কষ্টের মাঝেও

মুখের কোণে হাসি ফুটে উঠেছে। এর চেয়ে

সুখী আর কি হতে পারে। ওরা এতো কষ্টে

আছে তবুও মার হাতে ওই পঁচা বাসি খাবার

খেয়েই ওরা সুখী।

তৃপ্তি ভরে সেই

খাবারটাই খায় যেটা ওর মা ওকে খাইয়ে

দিচ্ছে।

.

সুখ দেখতে চান? তো ওই বস্তির মানুষ গুলোর

দিকে তাকান। যারা শত কষ্টের মাঝেও

ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি রাখে,

সেই বস্তির লোক গুলাই প্রকৃত সুখী। কারণ

ওরা জানে, এই পরিস্থিতিতে ওরা যতটুকু

পেয়েছে তার বেশী আর কোনো দিন পাবে

না।

"

এর বেশী ওরা আর আশাও করে না, কারণ,

ওরা জানে, এই ধনী লোকের মাঝে ওদের

জায়গা নেই, তাই ওরা যেখানে আছে

সেখানেই সেই অবস্থায় থাকে। ওরা জানে

ওদের পরিবর্তন নেই, তাই ওই পর্যায়ের কষ্টে

থেকেই খুশি থাকার চেষ্টা করে।

"

আর ওরা সফল হয়, শত কষ্টে তারা তাদের

সন্তানের সামনে বা অন্য কারো সামনে মুখে

হাসি রাখে তাই ওরাই সুখী।

"

আর আপনি ধনী লোকের দিকে তাকান,

বাইরে থেকে সুখী দেখলেও ভেতর থেকে

প্রকৃত ভাবে সুখী না। কারণ, তারা এখন যে

পর্যায়ে আছে তারা ওখানে সন্তুষ্ট নয়,,,

তারা সবসময়ই চায় এর চেয়ে আরও উপরে

যেতে। নাম, জশ, টাকা পয়সা, এগুলো তারা

সবসময়ই চায়। অন্য জনের সাথে পাল্লা দিতে

চায় সবসময়। আরেক জনের সাথে পাল্লা

দিয়ে কিভাবে থাকে ছাড়িয়ে যাবে এই

চিন্তা সবসময় তাদের মাথায় ঘুরপাক খায়।

তাই ওরা বাইরে থেকে সুখী হলেও মানসিক

ভাবে সুখী নয়।

.

ওদের থেকে ওই বস্তির গরীব লোকগুলোই

সুখী। কারণ, ওদের যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট এর

বেশী আর আশা করে না।

প্লিজ আসুন আমরা সকল পথ শিশুদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে, আমাদের যতটুকু আছে,তাদের কে ততটুকু দিয়েই সাহায্য করি। আজ যদি আমাদের দেশের প্রতিটি স্বাবলম্বী ব্যাক্তি মাত্র একজন পথ শিশুর পাশে দাঁড়াতো, তাহলে কোন পথ শিশুই না খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে মারা যেত না,সন্থাসীদের টাকার লোভে পেটের দায়ে ওইসব পথ শিশুরা দেশের কোথাও  পেট্রুল বোমা ফেলতো না,কোন খারাপ কাজে লিপ্ত হতো না।

আসুন প্লিজ আমরা সবাই সকল পথ শিশুদের পাশে দাঁড়াই।

আর আমরা যদি একশজন পথ শিশুর পাশে না দাঁড়াতে পারি। একজন পথ শিশুর পাশে তো দাঁড়াতে পারি।

আর এটাও সকলের মনে রাখা উচিত!

কেবল তাদের পাশে দাঁড়ানো আর সেবা করলেই চলবে না,মানুষকে দেন আপনার হৃদয়।

হৃদয়হীন সেবা নয়,তারা চায় আপনার হৃদয়ের স্পর্শ। 

আর আমরা যদি আল্লাহর সৃষ্টির সেরা জীব দৃশ্যমান মানুষকেই ভালবাসতে না পারি।

তাহলে অদৃশ্যমান আল্লাহকে কিভাবে ভালবাসব?

                  _____ সমাপ্ত _____


লেখক-হৃদয় আহমেদ


বাস্তব জীবনের সমস্ত গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post