জীবনের কিছু বাস্তব কথা | বাস্তব জীবন নিয়ে স্ট্যাটাস ২০২৪

  •  কিছু বাস্তব কথা

কিছু বাস্তব কথা

" কি ব্যপার মামনি,আজ ঠোঁ"টে লিপস্টিক,জামাটাও পড়ছো হ"ট।উফফফ,যাবে নাকি? "


এলাকার বখাটে,মাস্তান সাজুর কথায় রুপু দ্রুত হাঁটতে লাগলো।স্কুল যাওয়ার পথে রোজ তাকে বখাটে ছেলেদের কবলে পড়তে হয়।


স্কুলে গিয়ে রুপুর দুঃখী মুখ দেখে ওর বান্ধবী সেতু বললো 


" কিরে রুপু,তোর মন খারাপ কেন? ওই বাজে ছেলেগুলা আজকেও ঝামেলা করছে নাকি? "


রুপু কান্না চেপে বললো " হু "


সেতু রেগেমেগে বললো " তুই বাড়িতে কেন জানাস না? আজ আমি স্যারকে বলেই দিবো।তারপর দেখিস ওদের কি হয় "


রুপু বিনীত অনুরোধ করে বললো " প্লিজ কাউকে বলিস না। এসব আমার বাড়িতে জানলে কালকেই আমার বিয়ে দিয়ে দিবে "


গল্প: ভয়

লেখক: জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • বাস্তব কিছু কথা

আত্নীয়ার বাড়িতে রুপবতী এক তরুণীকে দেখে মনের সাগরে উথাল-পাতাল ঢেউ শুরু হলো।সানগ্লাসটা পড়ে ভাব নিলাম।


মেয়েটা একটু পর পর তাকাচ্ছে,মুচকি হাসছে।মনের ঢেউ আরো বাড়তে লাগলো।সুযোগ বুঝে মেয়েটার কাছাকাছি দাঁড়ালাম।মেয়েটা হাসতে হাসতে বললো 


" ঘরের ভেতর সানগ্লাস পড়ে আছেন!হাউ ফানি "


লজ্জায় পড়ে গেলাম।দ্বিতীয়বার সেই তরুণীর দিকে আর তাকানোর সাহস পেলাম না।


গল্প: লজ্জা

লেখক: জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • বাস্তব জীবনের গল্প

রুমডেট শেষে রাহুল বললো " বাড়ি গিয়ে এই পি"লটা খাবে।না খেলে কিন্তু প্রে"গন্যান্ট হয়ে যাবা,মনে করে অবশ্যই খাবে "


" আমার ট্যাবলেট খেতে ভালোলাগেনা "


" না লাগলেও খাবে।এখন প্রে"গন্যান্ট হলে ঝামেলা "


নুহা আর কিছু বললো না।চুপচাপ ট্যাবলেটটা ব্যাগে রাখলো।


বাড়িতে আসতেই নুহার মা বললো " কিরে নুহা, এতোক্ষণ লাগে স্কুল থেকে ফিরতে? কই ছিলি এতোক্ষণ? "


নুহা ভয়ে ভয়ে বললো " বান্ধবীর সাথে ছিলাম মা "


" মেঘলা এসছে।মেয়েটা তোর জন্য কতক্ষণ ধরে রুমে একা একা বসে আছে "


মেঘলা নুহার মামাতো বোন।নুহা রুমে এসে মেঘলাকে দেখে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠলো।দুই বোনের মধ্যে হাসি ঠাট্টার মাঝে ট্যাবলেটটা খাওয়ার কথা ভুলেই গেলো নুহা।


তার পরেরমাস পরেই নুহার পি"রিয়ড মিস গেলো।নুহা বিষয়টা তখনও বুঝতে পারেনি।এক সকালে নুহার মা বললো 


" কিরে নুহা,তোর শরীর ঠিক আছে? পে"ট ব্যাথা করছে? "


নুহা হেসে বললো " না মা।এইমাসে পি"রিয়ড হয়নি।কি মজা,এই মাসে ব্যাথায় কষ্ট পেতে হবে না "


নুহার মা হকচকিয়ে বললো " সেটা আগে বলিসনি কেন? রেডি হয়ে নে,ডাক্তারের কাছে যাবো।এটা বন্ধ হলে শারী"রিক সমস্যা হয় "


ডাক্তারের কাছে গেলে ওনারা জানান নুহা প্রে"গন্যান্ট।কথাটা শুনে নুহার মা যেন আকাশ থেকে পড়লো।বাড়িতে এসে নুহার গা"লে কষে চ"র মে"রে বললো 


" এসব কখন করছিস? কে করছে? "


নুহা ভয়ে সব বলে দিলো সেইদিন স্কুল ছুটির পর রাহুলের সাথে রুমডে"টের বিষয়টা।নুহার মা নুহাকে বেদম প্র"হার করে ঘরে আঁটকে রেখে নুহার বাবাকে ফোন করে বিষয়টা বললো।


নুহার বাবা বাড়ি ফিরে বললো " রাহুল ছেলেটা?ওই ছেলে তো বখাটে।অফিস যাওয়ার সময় দেখি গার্লস স্কুলের আশেপাশে যে ঘুরে "


নুহার মা বললো " কি করবে এখন? "


" নুহা বাচ্চা মেয়ে,ভরকে এসব করেছে।ওকে আর বকা দিও না "


" লোকজন জানাজানি হলে কি হবে?কি করা যায় এখন?ওই ছেলের সাথে বিয়ে দিবে? "


" পাগল হলে নাকি? ওরকম ফটকাবাজ ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিবো কিকরে? এ"বর্শন করাতে হবে "


সেই রাতে ক্লিনিকে গিয়ে নুহার এ"বর্শন করানো হলো।বলের সাইজের র"ক্তের দলায় একটি প্রাণ বেড় করে ফেলে দেওয়া হলো ডাস্টবিনে।কাল এরকম সময় র"ক্তের আড়ালে লুকিয়ে থাকা প্রাণটা হয়তো কোনো কুকুর কিংবা বেড়াল ছিঁড়ে খাবে।


গল্প: নিষ্পাপ_প্রাণ 

লেখক: জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • বাস্তব জীবনের কষ্টের গল্প

বিয়ের ১২ বছর পর স্টোক করে স্বামীর মৃ"ত্যু।সন্তানের বয়স তখন ৮।চরম বিপাকে পড়ে গেলাম।এই ছোট বাচ্চাটার ভবিষ্যৎ কি হবে? 


একান্নবর্তী পরিবারে বিয়ে হয়েছিল।ছোট ছোট দেবরদের নিজের ছেলের মতো যত্ন করে বড় করেছি।


বুঝতে বাকি রইলো না আমার জীবনের কালো অধ্যায় খুলে গেছে।সংসারে থাকতে দিবে এমন আশা কখনোই মনে ছিলো না।ভেবেছিলাম স্বামীর সাথে সাথে সংসারেও আমার ঠাঁই হবে না।


স্বামী মা"রা যাওয়ার পর দেবররা সবাই বাবার জমিজমা ভাগ করে নিলো।আমায় আশ্চর্য্য করে দিয়ে দেবররা বললো 


" বউদি,তুমি আমাদের কাছে মায়ের মতো।ছোট থেকে আদর,যত্ন করে বড় করেছো।আমাদের প্রত্যেকের জমির থেকে দু-শতাংশ করে জমি তোমায় দিতে চাই।এটা ঋণ পরিশোধ নয়,তোমার প্রতি আমাদের সম্মানবোধ থেকেই দিবো। আর খোকার পড়ালেখার খরচ যতটা সম্ভব আমরা ভাইরা মিলে সামাল দিবো "


এতটুকুই বা ক'জন করে?গর্বে,ভালোবাসায় এবং শ্রদ্ধায় আমার চোখ ভিজে উঠলো।ভালোবেসে পরম যত্নে যাদের বড় করেছি তারা বেইমানি করেনি।


গল্প: সম্পর্ক

লেখক: জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • বাস্তব জীবনের কিছু গল্প

বিয়ে বাড়িতে ছেলেটা বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছে।চোখে চোখ পড়লেই চোখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে।


অস্বস্তি হলো।একটু সরে দাঁড়ালাম।লাভ হলো না,ছেলেটা তবুও ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকে।এবার আর সহ্য করতে পারলাম না।ছেলেটার দিকে রাগে কটমট দৃষ্টিতে তাকালাম।


ছেলেটা বোধহয় ভয় পেয়েছে।আর তাকাচ্ছে না।অনেকক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলো,ছেলেটা আর তাকাচ্ছেই না।


আবারও অস্বস্তি হতে লাগলো।ব্যাপার কি?ছেলেটা তাকাচ্ছে না কেন?


বিয়ে বাড়ি থেকে আসার সময় লক্ষ্য করলাম ছেলেটা ছটফট করছে।করুন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকাচ্ছে।দেখে মায়া হলো।


খানিক্ষন বাদে ছেলেটা লজ্জা,ভয় উপেক্ষা করে কাছে এসে বললো


" আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে এ জীবনটা পার করতে চাই।সুযোগ কি পাবো? "


প্রতিত্তোরে " না " বলে সেখান থেকে সরে এলাম।দূর থেকে লক্ষ্য করলাম ছেলেটার চোখ মুখ আরো করুণ হয়ে গেছে।চোখের কোনে অশ্রু টলমল করছে।অস্বস্তি হতে লাগলো।মনে মনে ঠিক করলাম,ছেলেটা আরেকবার অনুরোধ করলে " হ্যা " বলে দিবো।


ছেলেটা আর অনুরোধ করলো না।কেন জানিনা এখন নিজেরি ভিষণ কষ্ট হতে লাগলো।চোখাচোখির এই বিষয়টা বোধহয় মনের এক কোনে ভালোলাগার সৃষ্টি করেছিলো,কিংবা ভালোবাসার!


তারপর থেকে প্রতি রাতে ছেলেটির কথা মনে পড়ে।তখন মনটা ভিষণ খারাপ হয়ে যায়।চোখের সামনে ভাসতে থাকে ছেলেটার সরল বোকাসোকা মুখটা।


কে"টে গেলো তিনটা বছর।বাসরঘরে বসে আছি।হঠাৎ মনে পড়লো ছেলেটার কথা! এরকমই একটি বিয়েতে কোনো এক ছেলে আমার মন হরণ করে নিয়েছিলো।


বর আসলো।পাশে বসে মৃদু স্বরে বললো " আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে এ জীবনটা পার করতে চাই।সুযোগ কি পাবো? "


হকচকিয়ে উঠলাম।বিস্মিত হয়ে বললাম " আপনিই সেই ছেলে? "


" হু "


" এতোবছর কোথায় ছিলেন? "


" আপনার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলাম "


কেন জানিনা খুব কান্না পাচ্ছে।চোখের জল মুছে বললাম 


" সেদিন লজ্জা ভেঙ্গে আর একটিবার কাছে এসে কেন বললেন না ভালোবাসি? আমি কত অপেক্ষা করেছি,কষ্ট পেয়েছি।আমার এই কিশোরী মন আপনাকে নিয়ে কত স্বপ্নের জাল বুনেছিলো জানেন? "


" চলুন না সবটা শুরু করে নতুন ভাবে "


" ইশশশ আপনি ওভাবে তাকিয়ে থাকবেন না তো।আমার অস্বস্তি হয় "


গল্প: অস্বস্তি

লেখক: জয়ন্ত_কুমার_জয়


মন ছুঁয়ে যাওয়া গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post