ভালোবাসার কষ্ট
নিজের স্ত্রী সামিরাকে ও নিজের প্রিয় বন্ধু হাসিবকে একসাথে শা-রী-রি-ক সম্পর্ক করতে দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। হঠাৎ চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা হয়ে এলো। তারপর আর কিছুই মনে নেই যখন চোখ খুললাম তখন নিজেকে একটি কন্সট্রাকশন চলিত হাসপাতলে আবিস্কার করলাম। পাশে আমার বন্ধু আরিফ।
আমিঃ বন্ধু আমি এখানে কেন?
আরিফঃযাক অনেকক্ষণ পর তোর হুশ আসলো।
আমিঃ আমার কি হয়েছিল? আমাকে এইরকম নির্জন হাসপাতালে নিয়ে এলি কেন?
আরিফঃ তুই আমাকে বলেছিলি তুই তোর বউ সামিরাকে সারপ্রাইজ দিবি আর আমাকে বাইরে দাঁড়াতে বলছিলি। হঠাৎ করে আমি ঘরের ভেতর থেকে কিছু পরার আওয়াজ শুনছি। ঘরের ভিতরে ঢুকে দেখলাম তুই মাঝেতে পরে আছিস।
হঠাৎ করে কিছুক্ষণ আগে দেখা ঘটনাটি আবার মাথায় আসলো। নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগল। আমার চোখ যেন এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না।
আমার কোন আপন ভাই নেই। তাই হাসিবকে নিজের আপন ভাই মনে করেছিলাম। কোনো শর্ত ছাড়াই তাকে আমার কোম্পানির 25% শেয়ার দিয়েছিলাম। আর সামিরা সে তো আমার ভালোবাসার মানুষ কিন্তু কেন আমার সাথে প্রতারণা করলো?
আরিফঃ কি হলো বন্ধু তুই কাঁদতেছোছ কেন?
আমিঃ আরিফ আমাকে কোন প্রশ্ন করবি না আগে তুই আমার সব প্রশ্নের উত্তর দেয? আমার কিছুই মনে পড়ছে না আমি এখানে কেন?
আরিফঃ তুই একটু শান্ত হয়ে বস আমি তোকে সব বলছি।
6 মাস আগের ঘটনা,,
আরিফঃ টানা যে চার-পাঁচটা প্রজেক্ট আমরা করেছিলাম সবগুলোই ছিল সফল। যার ফলে আমাদের কোম্পানি তিন নম্বর থেকে সোজা এক নম্বরে চলে এসেছিল। তাই সব নামিদামি ব্যবসায়ীরা মিলে তোকে কংগ্রাচুলেশন জানানোর জন্য একটি ছোট্ট পার্টি এরেঞ্জ করেছিল।সেদিন আমাদের কোম্পানি "চৌধুরী গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ" বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হতে যাচ্ছিল। আর তুই (বাহাদুর চৌধুরি) বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিজনেসম্যান।বাংলাদেশের সব নামকরা ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ে একটা পার্টি এরেন্জ করা হলো।তুই আর হাসিব গাড়ি করে পার্টিতে যাচ্ছিলি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেদিন তোদের অনেক বড় অ্যা*ক্সিডেন্ট হয়। সাথে সাথে তোকে হাসপাতালে নেওয়া হয় আর ডাক্তার জানায় তোর অবস্থা অনেক খা*রাপ। আমরা তো মনে করছিলাম তোকে আর বাঁ*চানো সম্ভব হবে না। তোর জ্ঞান কোনমতেই ফিরছিল না। সেদিন সে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সব নামিদামি ব্যবসায়ীরা এসেছিল কিন্তু তুই আসিস নি তাই মুহূর্তের মধ্যে টিভিতে ব্রেকিং নিউজ হয়ে গেল যে তুই নি*খোঁজ।
আমিঃ তোরা চাইলে তো মিডিয়ার সামনে এটাও বলতে পারতি যে আমার অ্যা*ক্সিডেন্ট হয়েছে?
আরিফঃ তোর সিচুয়েশন তখন অনেক খা*রাপ ছিল, তাই ডাক্তাররা বলেছে হাসপাতালে যেন কোন রকম ঝা*মেলা না হয়। না হলে তোকে বাঁ*চানো কোনোভাবেই পসিবল হবে না। আর এত বড় একটি ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট এর অ্যা*ক্সিডেন্ট হয়েছে জানলে মিডিয়া নিশ্চিত ঝা*মেলা করতো। তাই পুলিশ অফিসার মিজান আমাকে উপদেশ দিলেন, তোর এক্সি*ডেন্টের খবরটাকে মিডিয়ার সামনে নিখোঁজের খবর বানিয়ে দিতে।
আমি চারদিকে চোখ দেখলাম যে বিল্ডিং এ বর্তমানে আমি আছি সে বিল্ডিং এর এখনো আরো অনেক কাজ বাকি। পুরো বিল্ডিংটি এখনো রেডি হয়নি। মনে হচ্ছিল কোন পরিত্যক্ত বিল্ডিং। আর এই পরিত্যক্ত বিল্ডিং এর মধ্যে একটি ফ্লোর আমার জন্য হাসপাতালের মতো করে সাজানো হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী ছাড়া তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছুই নেই।
আমিঃ তাই বলে কি তোরা আমাকে এরকম নির্জন একটি বিল্ডিং এ রাখবি?
আরিফঃ মূলত মিডিয়ার ঝা*মেলা এড়াতেই আমরা এই পদক্ষেপটি নিলাম। এমনকি শুধু মিডিয়াই না তোর ফ্যামিলি মেম্বারদের কে ও জানালো হলো যে তুই নি*খোঁজ। আর আরেকটা কথা?
আমিঃ কি বল?
আরিফঃ তোর অ্যা-ক্সি-ডে-ন্টে-র পড়ে ব্যবসাতে অনেক বড় একটি লস হলো। আর সাথে সাথে আমাদের কোম্পানি বর্তমানে নয় নাম্বারে নেমে গেছে।
একটু পরে একজন ডাক্তার এলো। এই ডাক্তারকে আমি আজ পর্যন্ত কখনো দেখিনি। আমার ফ্যামিলি ডাক্তার থাকা সত্ত্বেও এই ডাক্তারকে দিয়ে কেন আমার চিকিৎসা করানো হলো?
আমিঃ কি রে আরিফ ডাক্তার আজিম থাকার সত্ত্বেও আমাকে অন্য ডাক্তার দিয়ে কেন চিকিৎসা করানো হচ্ছে?
আরিফঃ দেখ আমরা কাউকে জানায় নি তোর এই এক্সি*ডেন্টের কথা। যদি ডক্টর আজিম তোর ট্রিটমেন্ট করত তাহলে তোর পরিবার জেনে যেত।
এক মুহুর্ত মনে হলো আরিফ যা বলছে তা ঠিকই বলছে।
ডাক্তারটি এসে আমাকে একেবারে 7-8 রকম ঔষধ দিয়ে গেলেন। আমাকে দেখতেও দিলেন না যে সেগুলো কিসের ওষুধ।
আমিঃআরে এতগুলো কিসের ঔষধ?
আরিফঃ তোর থেকে কিছু চিন্তা করতে হবে না তুই খা।
আরিফও জো*র করে আমাকে ওষুধগুলো খাইয়ে দিলো।
একটু পরে একজন পুলিশ অফিসার এলো।বুঝতে আর দেরি হলো না যে ওনিই মিজান।
পুলিশ অফিসার মিজানঃ স্যার আপনার যদি কিছু প্রয়োজন হয় আমাদের বলতে পারেন।
আমিঃ আচ্ছা কিছু লাগলে অবশ্যই জানাবো।
পুলিশ অফিসার মিজানঃস্যার আপনি আরেকটু সুস্থ হলে আপনাকে এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে আপনার বাসায়।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
আরিফঃ আচ্ছা আমি জানাবো উনি সুস্থ হলে।আপনি এখন আসতে পারেন।
এতটুকু বলে মিজান সেখান থেকে চলে গেল।
আমি কিছুই বুঝতে পারছি না গত 6 মাসে কি হল? আর আজকে আমি কি দেখলাম? কিছুই মাথায় ঢুকছেনা।
আরিফঃ দেখ তুই আর একটু সুস্থ হলে সব টিক হয়ে যাবে।দীর্ঘ ছয় মাস পর আজকে যখন তোর জ্ঞান ফিরল তখন তুই শুধু তোর স্ত্রী সামিরা কে দেখতে চেয়েছিলি, তাই আমি তোকে বাসায় নিয়ে গেলাম।বাসায় যাওয়ার পর তুই বললি আমাকে বাইরে অপেক্ষা করতে। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু বাসার ভেতর থেকে কিছু পরার আওয়াজ পেলাম। ঘরের ভিতরে ঢুকতেই দেখলাম তুই মেঝেতে পড়ে আছোছ। তাই আর সাত-পাচ না ভেবে তোকে এখানে নিয়ে এলাম।আচ্ছা কি এমন দেখলি যে তুই অজ্ঞান হয়ে গেলি?
আমিঃ ব্যবসায় লোকসান হয়েছে তাই বলে কি সামিরা আমার সাথে এত বড় প্রতারণা করবে?
আরিফঃ তুই এগুলো কি বলছিস?
আমিঃ শুধু সামিরাই না বরং হাসিবও আমার সাথে অনেক বড় প্রতারণা করেছে?
আরিফঃ তুই কি বলতে চাচ্ছিস তুই নিজেও জানিস না।
আমিঃ কেন অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম তুই এটাই জানতে চাচ্ছিস তাই না?
আরিফঃ হ্যা,সেটাই।
আমিঃসামিরা কে সারপ্রাইজ দিতে আমি যখন বাসায় ঢুকলাম তখন দেখলাম সামিরা ও হাসিব একে অপরের সাথে শা*রী*রিক সম্পর্কে লি*প্ত।
আরিফ চুপ, আরিফ কিছুই বলছে না। আরিফের চোখে পানি টলমল করছে। মনে হচ্ছে পলক ঝাপটালেই সব পানি গড়িয়ে পড়বে।
আমিঃ কি হল চুপ করে আছিস কেন, কিছু বল? ব্যবসায় লোকসান ও অ্যা*ক্সি*ডেন্ট এই দুটোই কি আমার জীবনের সর্ব*নাশ। হাসিবকে তো আমি আমার ভাই থেকে কম ভাবি নি কিন্তু তাও কেন সে আমার সাথে এত বড় প্রতারণা করল।
আরিফঃ বাস অনেক হয়েছে, বাহাদুর আর না,হাসিবকে নিয়ে আর একটা কথাও বলবি না। হাসিব গত ছয় মাস আগে মা*রা গেছে।
কথাটি শোনার সাথে সাথে আমি যেন থমকে গেলাম। কিছুক্ষণের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম।
আরিফঃ 6 মাস আগে তোরা যখন পার্টিতে যাচ্ছিলি তখন তোর সাথে গাড়িতে হাসিবও ছিল। এ*ক্সি*ডেন্ট এর পর তোকে বাঁচা*নো গেলেও হাসিবকে আর বাঁচা*নো গেল না। পুলিশ অফিসার মিজান আমাদের কে বলেছিল যতদিন তুই সুস্থ না হবি ততদিন হাসিবের মৃ*ত্যু*র ব্যাপারটা মিডিয়া থেকে গো*পন রাখতে। কারণ হাসিব তোর কোম্পানির 25% শেয়ার পার্টনার ছিল।
আরিফের কথাটি শোনার সাথে সাথে আমার মাথায় কিছুই ঢুকছিল না। মনের মধ্যে শুধু একটি কথাই বারবার আসছিল,আজকে আমি যাকে সামিরার সাথে শা-রী-রি-ক সম্পর্ক করতে দেখেছিলাম তাহলে সে কে,,,,,,,,,
.
.
.
.
.
গল্প - বেপরোয়া
পর্বঃ০১
Cld
-আবির
গল্প বেপরোয়া
পর্বঃ ০২ শেষ
.
মনের মধ্যে শুধু একটি কথাই বারবার আসছিল,আজকে আমি যাকে সামিরার সাথে শা*রীরি*ক সম্পর্ক করতে দেখেছিলাম তাহলে সে কে? কিছুই বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে আমার সাথে হচ্ছে।
আমিঃ আরিফ আমি সত্যি বলতেছি আমি সামিরার সাথে একটা ছেলেকে দেখছি আর ছেলেটা দেখতে হুবহু হাসিবের মত।
আরিফঃ দেখ বন্ধু আমার মনে হচ্ছে তোর কোথাও কিছু ভুল হচ্ছে হাসিব তো সেই ছয় মাস আগেই মা*রা গেছে।
তাহলে আমি কিছুক্ষণ আগে কাদেরকে দেখলাম। মনে হচ্ছে সবকিছু গুলিয়ে ফেলছি। অনেক ঘুম আসছে, মনে হচ্ছে এখনই চোখ বন্ধ করলে এখনই ঘুমিয়ে পড়বো।
চোখ খুলতেই দেখলাম সামিরা ও আরিফ আমার পাশে বসে আছে।
আমিঃ সামিরা তুমি কবে এলে?
সামিরা আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে। আমার কোন কথার উত্তর দিচ্ছে না। বুঝতে পারলাম পা*গলিটা গত ছয় মাস আমাকে অনেক মিস করেছে। আর আমি কিনা তাকে সন্দেহ করছিলাম।
সামিরাকে আমি 11 মাস আগে বিয়ে করেছি। তার আগে দুই বছর প্রেমও করেছি। আর আমি কিনা তাকেই সন্দেহ করছি।
আরিফঃ বন্ধু তোর থেকে আরো দু এক দিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
আমিঃ আচ্ছা সমস্যা নেই। তুই সামিরাকে নিয়ে এখান থেকে চলে যা।
সামিরাঃ খবরদার আর একটা কথাও বলবে না। আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। গত 6 মাস আমি তোমাকে অনেক মিস করেছি।
আমিঃ আচ্ছা যেতে হবেনা আমার পাশেই থাকো।
পা*গলিটা এখনো কান্না করছে।
আমিঃ আরে এতো কান্না করে কি হবে আমি তো সুস্থ তাইনা।
হঠাৎ হাসিবের কথা অনেক বেশি মনে পড়ছে।
দু-তিন দিন পর আজকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলাম। অনেকদিন পর মা-বাবা সবাই আমাকে দেখতে পেয়ে অনেক খুশি হলেন। আরিফ সবাইকে সব গঠনা বলল। ছয় মাস আগে আমার অ্যা*ক্সি*ডেন্ট হয়েছিল। গত ছয় মাস আমি চিকিৎসাধীন ছিলাম। মা বাবা তো কাঁদতে কাঁদতে শে*ষ অবস্থা। আরিফকে সবাই অনেক বকাবকি করছে। কেন সে আমার অ্যা*ক্সি*ডেন্টের খবর পরিবারকে জানালো না।
আরিফঃ বন্ধু এখনো মিডিয়াকে বলবো না যে তোকে আমরা পেয়েছি?
আমিঃ কেন বলবি না?
আরিফঃ তুই আর একটু সুস্থ হয়ে যা ব্যবসার লোকসান সবগুলো একটু কভার দে তারপর আমি মিডিয়াতে জানাবো।
মনে মনে ভাবলাম আর কয়েকদিন পর আমার বিবাহবার্ষিকী, ঠিক এই দিনে আমি মিডিয়ার সামনে সবকিছু খোলাসা করব। আর ঠিক এই দিনে সামিরাকে আমি তার জীবনের সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ দিবো।
আমিঃ আচ্ছা আরিফ আমাকে হাসিবের ক*বরে একটু নিয়ে যাবি?
আরিফঃ ও হাসিবের ক*বরে,, হাসিবের ক*বর,,, মানে হলো কি,,, ক*বর,,,
আমিঃ কি হলো তুই এমন করতেছোছ কেন?
আরিফঃ আসলে হাসিবের বা*ডিটা আমরা এখনো ম*র্গ থেকে বের করি নি।
আমিঃ কেন বের করিস নি?
আরিফঃ আসলে পুলিশ অফিসার মিজান বলছে তুই যতদিন সুস্থ না হবি ততদিন হাসিবের ব*ডিকে ক*বর না দিতে আর ওদের নাকি ইনভেস্টি*গেশন বাকি আমি আছে তাই।
আমিঃ পুলিশ অফিসার মিজানকে একটু ডাকিস। তার সাথে কথা আছে।
আরিফঃ ঠিক আছে তুই চিন্তা করিস না তুই এখন রেস্ট কর। আমি তাকে ডাকব।
আরিফ জানালো মিজান নাকি কয়েকদিনের জন্য দেশের বাইরে গেছে। সে আসলেই আমার সাথে দেখা করবে। আর হাসিবের লা*শের ইনভেস্টি*কেশন প্রায় শেষের দিকে। তাই সবকিছু একদিন এসে বলবে।
দুই-একদিনের মধ্যে ব্যবসায়িক কাজে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। মাথায় শুধু একটাই চিন্তা কেমনে আবার আমার প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশের এক নম্বর প্রতিষ্ঠান করব। আর সাথে আমার বিবাহ বার্ষিকীর জন্য প্ল্যান করছিলাম।
কয়েকদিন পর মিজান আসলো।
মিজানঃ হ্যালো স্যার কেমন আছেন?
আমিঃ ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
মিজানঃ স্যার আমিও ভালো আছি। স্যার আপনাদের এক্সি*ডেন্টের ব্যাপার ইনভেস্টি*গেশন করা হয়েছে আর ইনভেস্টি*গেশনে রিপোর্ট অনুসারে জানতপ পেরেছি আপনাদের অ্যাক্সি*ডেন্টটা কোন প্ল্যান ছিল না।সেদিন একটি মাতাল ড্রাইভার এর ট্রাকের সাথে আপনাদের গাড়ি ধাক্কা খায় যার ফলেই এক্সি*ডেন্ট হয়। হাসিবের ব*ডিটা ম*র্গ থেকে বের করা হয়েছে। এবং দা*ফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আমার সামনেই আমার প্রিয় বন্ধু হাসিবকে ক*বর দেওয়া হয়েছে।হাসিবের মা-বাবা কেউই নেই। হাসির যখন অনেক ছোট ছিল তখন তার মা-বাবা একটি কার এক্সি*ডেন্টে মা*রা যায়। আর তখন থেকে আমার মা-বাবা হাসিবকে লালন পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাই সেই ছোটবেলা থেকে হাসিবের সাথে আমার বন্ধুত্ব। হাসিব আমার বন্ধু কম আমার প্রাণের ভাই ছিল।
হাসিবকে ক*বর দিয়ে সবাই চলে গেলেও আমি যাইনি। তার ক*বরের পাশে দাঁড়িয়ে কান্না করেছি। আর মনে মনে চিন্তা করছি যদি সেদিন পার্টিতে না যেতাম তাহলে হয়তো আমার হাসিব আজকে আমার সাথে থাকতো।
তার সপ্তাহখানেক পরেই আমার বিবাহবার্ষিকী চলে এলো। এই দিনটার জন্য আমি অনেকদিন ধরে অপেক্ষা করছিলাম। আজ সামিরাকে অনেক বড় সারপ্রাইজ দিবো।
রাত বারোটা সবকিছু রেডি আছে আমি সামিরার চোখে হাত রেখে তাকে আমার রুমে ঢুকলাম।
সামিরাঃ কি হলো চোখে হাত দিয়ে রেখেছো যে?
আমিঃ আমার বাবুটার জন্য সারপ্রাইজ আছে।
সামিরাঃ যদি চোখ থেকে হাতটা না সরাও তাহলে সারপ্রাইজ দেখব কি করে?
আমিঃ সারপ্রাইজ দেখবে তার আগে এখানে দু'একটি সাইন করো।
হঠাৎ করেই সামিরা কেঁপে উঠল।
সামিরাঃ সাইন করবো মানে ঠিক বুঝলাম না?
আমিঃ আরে এত ভয় পাচ্ছ কেন? আমি কি তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবো। এটা আমাদের বিয়ের কার্ড আমি চাই বিবাহর এক বছর উপলক্ষে তুমি আমাদের এই বিয়ের কার্ডে কয়েকটি সাইন করো।
তারপর সামিরা খুশিমনে সাইন করে দিল।
সামিরাঃ সাইন করলাম এবার একটু সারপ্রাইজ টা দেখতে দাও না প্লিজ।
আমিঃ ঠিক আছপ দেখো।
চোখ খুলতেই সামিরা দেখলো সামনে অনেকগুলো বাচ্চার ছবি আর টেবিলে অনেক বড় একটি কেক। যার মধ্যে লেখা আছে আগামী বছর এই দিনে আমি আমার বাচ্চার সাথে কেক কা*টতে চাই।
সামিরাঃ জি মহারাজ আপনার যা আদেশ তাই হবে।
দুজনে মিলে কেক কা*টলাম। পরিবারের সবাই আজ অনেক খুশি। অনেকদিন পর সবাইকে খুশি দেখে আমার নিজেরও ভালো লাগছে।
আমি, সামিরা ও আরিফ তিনজন বসে টিভি দেখছি। হঠাৎ করে টিভিতে,,
----- ব্রেকিং নিউজ বটতলী স্টেশনে একটি গলা*কা*টা লা*শ পাওয়া গেছে। পুলিশের মতে লা*শটি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাসিবুর রহমানের। রেল লাইনের এক পাড়ে লোকটির মা*থা আর অপর পাড়ে লোকটির লা*শ।
আরিফ সাথে সাথে উঠে দাঁড়ালো। সামিরাও দাঁড়িয়ে গেল নিউজ টি দেখে। আমি নিস্ত*ব্ধ হয়ে গেলাম। দুজনেই আমাকে রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। আর সামিরা বলল যাতে আমি ঘর থেকে বের না হয়। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না আসলে এগুলো কি হচ্ছে।
যদি হাসিব 6 আগে মা*রা যায় থাকে তাহলে আজকে কে মা*রা গেল?
রাত তিনটে সামিরা ও আরিফ এখন আসেনি। হঠাৎ করে ঘরে পুলিশ অফিসার মিজান আসলো।
মিজানঃ স্যার নিউজ দেখেছেন?
আমিঃ হ্যাঁ দেখেছি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছিনা। হাসিব তো মা*রা গেল তাহলে এটা কে?
মিজানঃ টিভি আবার অন করুন।
টিভি অন করতেই দেখলাম আরেকটি ব্রেকিং নিউজ চলছে। কিন্তু এই ব্রেকিং নিউজ দেখার সাথে সাথে মনে হচ্ছে আমি এখনই মা*রা যাবো।
---- ব্রেকিং নিউজ এইমাত্র পাওয়া খবর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাহাদুর চৌধুরি বন্ধু আরিফের বাসায় কিছুক্ষণ আগে অনেক বড় অ*গ্নিকাণ্ড হয়ে গেল। আরিফের সোসাইটির সিসিটিভি ফুটেজ অনুসারে জানা গেছে কিছুক্ষণ আগে তার বাসায় আরিফ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাহাদুর চৌধুরীর স্ত্রী সা*মিরা ঢুকেছিল। আর এই অ*গ্নি*কাণ্ডে দুজনের মধ্যে কাউকে বাঁ*চানো গেল না। পুলিশে ধারণা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের মাধ্যমে এই অ*গ্নি*কাণ্ড হয়। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে গত ছয় মাস আগে একটি পার্টিতে যাওয়ার সময় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাহাদুর চৌধুরি ও হাসিবুর রহমান রহমান নি*খোঁজ হয়েছিলেন। এ কয়দিনে কারও খোঁজই পাওয়া যায়নি। কিন্তু আজকে হঠাৎ করে হাসিবুর রহমানের লা*শ পাওয়া যায় রেলপথে। আরিফ ও সামিরা অ*গ্নি*কাণ্ডে মা*রা যায়। তাহলে এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাহাদুর চৌধুরি কই?
ব্রেকিং নিউজ টি দেখে কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেলাম। আমার মা দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে ফেললেন।যদি হাসিব 6 মাস আগে মা*রা যায় তাহলে আজকে কে মা*রা গেল? আর সামিরা ও আরিফ দুজনেই মা*রা গেল,,,
.
.
.
পরিবারের সবাই কান্নাকাটি শুরু করে দিল। সবাই বলতে লাগল হঠাৎ করে পরিবারে খা*রাপ ছায়া পড়েছে।
মিজান আমাকে ধরে রুমে নিয়ে গেল এবং দরজা লাগিয়ে দিল। রুমের মধ্যে শুধু মিজান ও আমি। দুজনেই একে অপরের মুখোমুখি হয়ে বসে আছে। দুজনেই নিরব। হয়তো দুজনেই চিন্তা করছে কিভাবে একে অপরকে সান্ত্বনা দেওয়া যায়।
পরক্ষণে দু'জনের মুখেই হাসি ফুটে উঠল। এই হাসির পেছনে শুধু রহস্যই না বরং এক বিজয়।
মিজানঃ মানতে হবে তোকে তিন তিনটে খু*ন করলি অথচ কারো সন্দেহই হলো না।
আমিঃ আরে তুই না থাকলে তো এইসব খু*ন করা পসিবল হত না।
মিজানঃ আমি না থাকলেও তো পসিবল হত প্ল্যান তো তোরই ছিল তাই না?
আমিঃ তুই না থাকলে হয়তো আমি বাঁচতে পারতাম না।
মিজানঃ হুম জানি কিন্তু পুরো ঘটনা আমাকে একটু খুলে বল।
আমিঃ যদি পুরো ঘটনা জানতে হয় তাহলে তোর থেকে 6-7 মাস আগে যেতে হবে।
মিজানঃ বল পুরো ঘটনা শুনি তাহলে।
আমিঃ মনে আছে সেদিন পার্টিতে যাওয়ার আগে আমি তোকে হুট করে আমার লোকেশন সেন্ড করেছিলাম।
মিজানঃ হ্যাঁ তুই হঠাৎ করেই আমাকে তোর লোকেশন সেন্ড করলি আর বললি যে এই লোকেশন টা ফলো করতে।
আমিঃ সেদিন পার্টিতে যাওয়ার আগের রাতে, আমি রুমে শুয়েছিলাম সামিরা ওয়াশরুমে ছিল। হঠাৎ করে সামিরার মোবাইলে হাসিবের একটা মেসেজ দেখলাম।
"আগামীকাল থেকে শুধু তুমি আর আমি থাকব। আমাদের দুজনের মাঝে আর কেউ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। আগামীকালকে বাহাদুরের খেলা শে*ষ আর পুরো কোম্পানির মালিক হব আমি"।
মেসেজটি দেখার পর আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। যাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবেসেছিলাম সেই কিনা তার ভাইয়ের মত একজনের সাথে পর*কী*য়ায় লি*প্ত হয়ে গেছে। সামিরা সবসময়ই আমার সামনে হাসিবকে নিজের ভাই বলে সম্বোধন করতো। অথচ আমার পিছনে তারা দুজন একে অপরের সাথে পর*কী*য়ায় লি*প্ত ছিল। আমি তখনও বুঝতে পারিনি যে সামিরা ও হাসিব আমাকে গাড়িতে মা*রা প্ল্যান করেছে। কারণ গাড়িতে হাসিব ও ছিল। তুই আমার গাড়ি কে ফলো করছিলি আর হঠাৎ করে আমার গাড়ির অ্যা*ক্সি*ডেন্ট হয়। সেদিন তুই যদি স্পটে না থাকতি তাহলে হয়তো আমি সেখানেই মা*রা যেতাম। আর যদি আমার এই অ্যা*ক্সি*ডেন্টের কেস তোর হাতে না যেত তাহলে আরো অনেক বড় প্রবলেম হতো।
মিজানঃ আমি একটা জিনিস বুঝলাম না হাসিব আর সামিরা কি জানতো না আমি তোর বন্ধু?
আমিঃ না আমি কোনদিনও তোকে ওদের কাছে পরিচয় দিইনি। ছয় মাস পরে যখন আমি সুস্থ হয়ে ঘরে গেলাম তখন আমি সামিরা হাসিবকে একে অপরের সাথে শা*রী*রিক সম্পর্ক করতে দেখলাম। কিন্তু যখন পুরো ঘটনা আমি আরিফ কে বললাম আরিফ বলল হাসিব ছয় মাস আগেই মা*রা গেছে। ধীরে ধীরে আমার সন্দেহ পরিমাণ আরো বেড়ে গেল। আরিফকে অনেক বিশ্বাস করেছিলাম কিন্তু কিছুদিন পরে বুঝতে পারলাম আরিফও তাদের প্ল্যান এর অংশীদার।
মিজানঃ আরিফ যে প্ল্যানের অংশীদার এটাতো আমি এখন পর্যন্ত বুঝতে পারিনি, তুই কেমনে বুঝলি?
আমিঃ আরিফ চাইলে মিডিয়ার ঝা*মেলা এড়িয়ে আমাকে ভালো কোন হাসপাতালে রাখতে পারতো। কিন্তু সেদিন জ্ঞান ফেরার পর আমি নিজেকে কন*স্ট্রাক*শন চলিত হাসপাতালে দেখে প্রথম সন্দেহ করেছিলাম। আরিফের উপর দ্বিতীয়বার সন্দেহ করেছিলাম ডাক্তার কে দেখে।কারণ আমার একজন প্রাইভেট ডাক্তার আছে। তৃতীয়বার শুধু সন্দেহই হলোনা বরং তৃতীয়বারে আমি বুঝতে পারলাম আরিফ ও এদের দলে যুক্ত। কিন্তু আমি তখনো বুঝতে পারছিলামনা যে হাসিব এখনো জীবিত নাকি মৃ*ত।
মিজানঃ এই একই প্রশ্নটা আমার। হাসিব কোথায় সেটা তুই কেমনে বুঝলি?
আমিঃ হাসিব জীবিত নাকি মৃ*ত এটা জানতে তোর অনেক বড় অবদান ছিল। সামিরা, হাসিব, আরিফ জানতোই না যে তুই আমার বন্ধু। তারা তোকে টাকা দিয়েছিল আমাকে মিথ্যে বলার জন্য। তুই টাকাও নিলি আর আমাকে সত্যিটা বললি। হাসিবকে ক*বর দেওয়ার সময় আরিফ বললো যে হাসিবের চেহারা একদম নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সন্দেহ আরিফের প্রতি আরও বাড়তে লাগল। হাসিবকে ক*বর দেওয়ার পর সবাই যখন চলে গেল আমি হাসিবের ক*বরের পাশেই ছিলাম।সবাইকে সামনে নাটক করছিলাম যে বন্ধুর মৃ*ত্যুতে আমি শোকে কাতর। রাত দশটায় হাসিবের ক*বর জিয়ারত করে যখন আমি আমার রুমে ঢুকবো ঠিক তখনই আমার রুমে আমি সামিরা ও আরিফ এর কথোপকথন শুনতে পেলাম। আড়ালে গিয়ে তাদের কথোপকথন শুনতে লাগলাম।
সামিরাঃ এই লা*শ টা কার?
আরিফঃ জানিনা কার। মিজানকে টাকা দিয়েছি ও ব্যবস্থা করে দিছে।
সামিরাঃ ভাগ্যিস বাহাদুরের কোন সন্দেহ হয়নি না হলে ও আমাদের কাউকে ছা*ড়বে না।
আরিফঃ আরে বাহাদুরের কোন সন্দেহ হবেনা। হাসিবকে আমি আমার বাসায় রাখছি।
সামিরাঃ তুমি আসলে ইন্টালিজেন্ট। মনে থাকে যেন প্রপার্টি শেয়ার ফিফটি-ফিফটি।
আরিফঃ বুঝতে পারছি হাসিবকে আজকে রাতেই মে*রে ফেলবো আর প্রপার্টি আমরা দুজনে শেয়ার করে নেব।
আমিঃ আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে সামিরা ও আরিফ একঢিলে দুই পাখি মা*রতে চেয়েছিল। হাসিব কে মে*রে আমার সম্পত্তি ভাগাভাগি করে নিবে।কিন্তু কোন এক অজানা কারণ তারা হাসিবকে সেদিন মা*রেনি। বুঝতে পারলাম তিনজনই বি*শ্বাসঘাতক। আর বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তি মৃ*ত্যু ছাড়া কিছুই হতে পারে না। প্ল্যান শুরু করলাম তিন জনকে মা*রার জন্য। আমার বিবাহ বার্ষিকী উপলক্ষে আজকে সারাদিন আরিফ আমার বাসায় ছিল। যার ফলে হাসিবকে মা*রা আমার জন্য অনেকখানি সহজ হয়ে গেল। আমি হাসিব কে মে*রে তার গলা কে*টে রেলপথে ফেলে আসলাম। আর তোর সাহায্যে এটাকে ব্রেকিং নিউজ বানালাম। আমি জানতাম breaking-news দেখে আরিফ ও সামিরা আরিফের বাসায় যাবে। তাই আমি আরিফের বাসা গ্যাস সিলিন্ডার টি খুলে রাখলাম। ওভেন অন করে দিলাম। সবকিছু এমন ভাবে সেট করলাম যাতে সেটা অ*গ্নি কা*ন্ড মনে হয়। যেই আরিফ ও সামিরা দরজা খুললো,সাথে সাথে পুরো ঘর ব্লা*স্ট হলো আর দুজনের সেখানেই মা*রা গেল। এই ব্রেকিং নিউজ টা করতেও তুই আমাকে অনেক বেশি হেল্প করেছিস।
মিজানঃ তুই যেমন ব্যবসায় সবার আগে, মানুষ খু*ন করতেও সবার আগে।
আমিঃ যাদেরকে তুই নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করবি দিনশেষে তারাই তোর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।
মিজানঃ এখন মিডিয়াকে কিভাবে সামলাবি। মিডিয়াতে জানে তুই 6 মাস ধরে নি*খোঁজ।
আমিঃ চিন্তা করিস না আমার কাছে একটা প্ল্যান আছে। তুই শুধু আমাকে হেল্প করবি।
মিজানঃ আমি তোকে কিভাবে হেল্প করব।
আমিঃতুই আমার হাতে গু*লি করবি।
মিজানঃ গু*লি করবো মানে?
আমিঃ তুই আমার হাতে গু*লি করবি। আগামীকালকে আমাকে নিয়ে হাসপাতালে যাবি। মিডিয়ার সাথে যোগাযোগ করে এটা জানাবি যে দু*র্বৃত্ত*দের হাত থেকে তুই আমাকে কোনমতে বাঁ*চাতে পেরেছিস। কিন্তু দু*র্বৃত্ত*রা আমাকে গু*লি মে*রেছে।
মিজানঃ মানে মিডিয়ার সামনে এটা বলব যে তুই কি*ডন্যা*প হয়েছিলি?
আমিঃ এগজ্যাক্টলি এই কথাটাই বলবি। শুধু আমি নায় হাসিব ও কি*ডন্যা*প হয়েছিল।তারা হাসিবকে মেরে* ফেলেছে কিন্তু আমাকে মা*রার আগে তোরা আমাকে উদ্ধার করেছিস।
মিজানঃ সামিরা ও আরিফের কি হবে?
আমিঃ আরে ওটা যে একটা অগ্নি*কা*ণ্ড ইতিমধ্যে মানুষ বিশ্বাস করে ফেলেছে। এখন তোর থেকে শুধু একটা কাজ করতে হবে আমার পরিবারের কাছে গিয়ে এই প্ল্যানটি বলতে হবে আর পরিবারকে রাজি করাতে হবে।
মিজানঃ তুই চিন্তা করিস না আমি এখনই যাচ্ছি।
দুজনেই মনম*রা হয়ে চোখে কান্না নিয়ে রুম থেকে বের হলাম। যেন এতক্ষন দুজনে অনেক কান্না করেছি।
মিজান আমার কথা মতো প্ল্যানটি আমার ফ্যামিলিকে বুঝিয়ে দিল। প্রথমে ফ্যামিলির কেউই মানতে না চাইলেও পরবর্তীতে মিডিয়ার ঝা*মেলা এড়াতে সবাই রাজি হলো।
তারপর মিজানকে নিয়ে আমি বাসা থেকে বের হলাম। রাস্তায় দুজনেই হাঁটছি।
মিজানঃ মানতে হবে কোন কি*লারও তোর থেকে ভালো প্ল্যান করতে পারবেনা।
আমিঃ জানি আমার প্ল্যানটি একদম নিখুঁত।
মিজানঃ মিডিয়া বিশ্বাস করবে তোর মনে হয়?
আমিঃ অবশ্যই বিশ্বাস করবে। মিডিয়াতে কয়েকদিন মাতামাতি হবে কে খু*ন করেছে কে কি*ডন্যা*প করেছে। দু'চারদিন ব্রেকিং নিউজ হবে তারপর সবাই ঠান্ডা হয়ে যাবে।
কারণ হাসিবের খু*ন যদি কেউ করে থাকে তাহলে সে কে এই প্রশ্নের উত্তর কেউই কখনো পাবে না।
তাহলে সে কে এই প্রশ্নের উত্তর শুধু তুই আর আমি ছাড়া কেউই জানেনা আর কখনো কেউ জানবেও না। দিনশেষে সবাই একটা কথাই চিন্তা করবে যে এত কিছু করেছে তাহলে সে কে???
.
.
.
......সমাপ্ত.........
আবির