না পাওয়া ভালোবাসার কষ্টের গল্প | সেরা ভালোবাসার গল্প

সত্যিকারের ভালোবাসা কেমন হয়

সত্যিকারের ভালোবাসা কেমন হয়

বড়ভাইয়া আমাকে শুনিয়ে মাকে বললো, " এমন মেয়ে জন্ম দিয়েছ পাত্রপক্ষ দেখার সঙ্গে সঙ্গে নাস্তা না খেয়ে চলে গেছে। কারো সঙ্গে প্রেমও কপালে জোটেনি যে বিয়ে দিয়ে বাঁচবো। "


আমি চুপচাপ বসে আছি, কিছুক্ষণ আগে আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছিল। 


 " আমি শুনেছিলাম পাত্রী সুন্দরী, কিন্তু এ দেখি শ্যামলা চেহারা। আমি আমার একমাত্র সন্তানের জন্য একটা সুন্দরী মেয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছি। " 


পাত্রের মায়ের এই কথায় বুঝতে পেরেছি আমার বিয়েটা এখানে হচ্ছে না। তারা সুন্দরী পাত্রী চায় কিন্তু আমি তো সুন্দরী নয় তাই আমি অযোগ্য। 


সত্যি সত্যি বিয়েটা হলো না, মা আমাকে রুমের মধ্যে এসে কিছুক্ষণ বোঝাতে লাগলো। আজ যদি বাবা বেঁচে থাকতেন তাহলে ভাইদের কাছে মাকে এতো কথা শুনতে হতো না। পাত্রপক্ষ চলে যাবার পর বড়ভাইয়া মায়ের সঙ্গে চিৎকার করছিল, তাই মা আমার রুমে চলে এসেছে। 


রাত ২ঃ৩৫ am


এতক্ষন বেলকনিতে ছিলাম। হঠাৎ করে সজীবের কথা মনে পড়ে গেল, অনলাইনে বই বিক্রি করতে করতে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। অনলাইনে আমি ছোট্ট একটা পেইজের মাধ্যমে বই বিক্রি করি। সারা সপ্তাহ অর্ডার গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাবাজার গিয়ে বই কিনে আনি। তারপর সারারাত জেগে সেগুলো প্যাকেট করে পরদিন হাউজবিল্ডিং এর কাছেই সুন্দরবন কুরিয়ার অফিস থেকে সবাইকে পাঠিয়ে দেই। 


এভাবেই পরিচয় সজীবের সঙ্গে। প্রচুর বই কিনেন তিনি, এ পর্যন্ত কতগুলো বই কিনেছে তার কোনো হিসাব নেই। মেসেঞ্জারে প্রায়ই কথা হয়, আমরা কখনো কলে কথা বলিনি। 


সজীব সাহেবের নাম্বার আমার পরিচিত। বইয়ের জন্য সবসময় নাম্বার দিতে হয় নাহলে বই গেলে কীভাবে পাবে? আমি তার নাম্বার বের করে কল দিলাম, এতো রাতে কাজটা ঠিক হচ্ছে না সেটাও ভাবলাম। কল কেটে দিতে চাইলাম কিন্তু তার আগেই রিসিভ করে নিলেন তিনি। 


- সে বললো, আসসালামু আলাইকুম। 


- ওয়া আলাইকুম আসসালাম, এতো রাতে কল দিয়ে বিরক্ত করার জন্য ক্ষমা করবেন। 


- সমস্যা নেই, আমি জেগেই ছিলাম। 


- তবুও এতো রাতে রং নাম্বার দিয়ে কল এসেছে তাই বিরক্ত হতেই পারেন। 


- তা ঠিক, কিন্তু আপনি যখন বুঝতে পেরেছেন রং নাম্বার তাহলে কথা দীর্ঘ করছেন কেন? 


- আপনার সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগছে তাই ভাবলাম পরিচিত হই। 


- কল দিলেন এখনো এক মিনিট হলো না তাতেই ভালো লেগে গেল? 


- ভাত সিদ্ধ হয়েছে কিনা সেটা জানার জন্য কিন্তু সবগুলো ভাত টিপতে হয় না। 


- কমন ডায়লগ। কোন ব্যক্তি এই ডায়লগ বের করেছিল আল্লাহ ভালো জানে। 


- ডিনার করছেন? 


- হ্যাঁ, আপনি খেয়েছেন? 


- না, বাসায় একটু ঝামেলা হয়েছে তাই সবার সঙ্গে রাগ করে খাইনি। 


- আমি একটু আলাদা। যতই রাগারাগি হোক তবু খাবারের সঙ্গে রাগ করতে পারি না। কারণ খাবার না খেলে রাগ করার সাহস আসবে কীভাবে? 


- আমি তো আপনার মতো বুদ্ধিমান নয় তাই বোকার মতো খাবারের সঙ্গে রাগ করেছি। 


- আমি বুদ্ধিমান? 


- না, বরং আপনি একটা মাথা মোটা। 


- কেন? 


- আমার মনে হচ্ছে আপনি মাথা মোটা, কেন বললাম সেটা কিছুক্ষণ পর জানতে পারবেন। 


- হতে পারে আবার নাও হতে পারে। 


কিছুক্ষণ দুজনেই চুপচাপ, আমি আর কথা খুঁজে পেলাম না তাই বললাম। 


- ভালো থাকবেন, রাখছি। 


- আপনিও ভালো থাকবেন। 


মনটা সামান্য ভালো হয়ে গেল, ডাটা চালু করে অনলাইনে গেলাম। তার নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলছে। আমার বেশ কিছু মেসেজ জমা ছিল সেগুলো চেক করে রিপ্লাই দিলাম। সজীব সাহেব এর ইনবক্সে নক করতে যাবো তার আগেই তিনি মেসেজ দিলেন। 

তার মেসেজ দেখে নিজেই মাথা মোটা হলাম। 


" এক বছর আগে যে নাম্বার সেভ করে প্রতি মাসে মাসে বইয়ের জন্য বিকাশে টাকা পাঠাই। সেই নাম্বার দিয়ে কল করে সে যদি অপরিচিত সাজতে চায়। তারপর নিজেকে বুদ্ধিমতী ভেবে আমাকে মাথা মোটা বলে। তাহলে তাকে ঠিক কি উপাধি দেওয়া যায় পরামর্শ দিবেন প্লিজ? " 


আমি আবারও হাসলাম, কয়েকটা হাসির ইমোজি পাঠিয়ে দিয়ে তার রিপ্লাইয়ের অপেক্ষা করতে লাগলাম।


সে রিপ্লাই দিল " আপনার হাসির সমাপ্তি ঘটলে আমাকে পরামর্শটা দিলে আনন্দিত হবো। " 


বললাম " আমি আপনার এমন সুন্দর সুন্দর কথা শোনার জন্যই নিজে থেকে বেশি মেসেজ করি। " 


- বিয়ে ঠিক হলো? 


- না। 


- কেন? কি সমস্যা? 


- পাত্রপক্ষ সুন্দরী মেয়ে চায় কিন্তু আমি সুন্দরী নয় তাই তাদের পছন্দ হয়নি। 


- পৃথিবীতে কত মানুষের কত ধরনের চাহিদা আছে, আপনার সঙ্গে যার বিয়ে হবে আল্লাহ তাকে ঠিকই পাঠাবেন। মন খারাপ করবেন না। 


- মন খারাপ করেছিলাম আর সেজন্য আপনাকে মেসেজ দিলাম। 


- আমি তো মনোবিজ্ঞানী নয়। 


- জানি, তবে মন ভালো করার বিশেষ গুণটা কিন্তু ঠিক আছে। 


- আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। 


- তাহলে ঘুমিয়ে পড়ুন। শুভরাত্রি। 


(২) 


সেদিন থেকে আমাদের যোগাযোগটা সম্পুর্ণ নতুন ভাবে শুরু হয়ে গেল। দুজনের প্রতি দুজনের এক সুন্দর অধিকার। 


মাস তিনেক পরে আমরা দেখা করি। সজীব রাজশাহী থেকে ঢাকায় এসেছিল আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই উত্তরার বিভিন্ন যায়গা ঘুরেছি। 


দিনশেষে সন্ধ্যার খানিকটা পরে সে যখন আমার সামনে দাঁড়িয়ে বললো, 


" বৃষ্টি তুমি কি জানো আমি কেন এসেছি? "


তার কথার মধ্যে একটা আলাদা অনুভূতি ছিল, আমি ঘাবড়ে গেলাম। একটু পরে আমার ধারণাকে সত্যি প্রমাণিত করে সে আমাকে প্রপোজ করে। আমি মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে থাকি, সে খানিকটা অবাক হয়ে বললো:


- আমাকে তোমার পছন্দ হয়নি? 


- আমি বললাম, তোমাকে আমি কোনদিনই এই জীবনের সঙ্গী হিসেবে ভাবিনি। তুমি মনের মধ্যে এমন কিছু লুকিয়ে আছো সেটা জেনে খুব খারাপ লাগছে। 


- তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না? 


- ভালোবাসি কিন্তু সেটা সারাজীবন একসঙ্গে একই ছাঁদের নিচে থাকার জন্য নয়। 


আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে রাজশাহীর বাসের জন্য অপেক্ষা করে আরো ঘন্টা খানিক তার সঙ্গে আমি ছিলাম। খুবই স্বাভাবিক কথা হয়েছে আমাদের কিন্তু তার মুখে আর হাসি দেখিনি। একটু পরেই বাস এলো, ব্যাগটা হাতে নিয়ে সজীব আমার দিকে তাকিয়ে বললো:-


- আজকে প্রথম দেখা আমাদের, ভেবেছিলাম এই দিনটা স্মরণীয় করে রাখবো৷ কিন্তু এভাবে কিছু হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি, হয়তো আমি ভুল তাই আশা করি ভুলে যাবে ওই ঘটনা। 


আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম, সজীব বাসে উঠে জানালা দিয়ে তাকিয়ে রইল। আমার মন চাচ্ছে দৌড়ে বাসে উঠে তার পাশে বসি, তারপর তার ঘাড়ে মাথা রেখে চলে যাই রাজশাহীতে। 


কিন্তু না, আমি পারিনি। 

সজীবকে নিয়ে বাস চলে গেল রাজশাহীর উদ্দেশ্যে। 

আমি চলে এলাম আমার বাসায়। 


(৩)


তাকে ফিরিয়ে দেবার কারণটা বলি। 

উত্তরাতেই সজীবের এক বান্ধবী আছে, রাজশাহী বাসা কিন্তু এইচএসসি পাশ করে সেই মেয়ে ঢাকা শহরে এসেছে। কিন্তু তাদের বন্ধুত্ব আজও খুব ভালো ভাবে টিকে আছে, মেয়েটার নাম পপি৷ আমি তাকে আপু বলে ডাকি, আমার সঙ্গে বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছে। মাঝে মাঝে সজীব তাকে বই গিফট করত, তাই আমি সেগুলো তাকে হাতে হাতে দিতাম৷ 


একবার তিনি বলেছিলেন যে সজীবকে নাকি সে খুব ভালোবাসে৷ পপি আপুর মুখে এটা জানার পরে সেদিন খুব কেঁদেছিলাম। নিজেকে সান্তনা দেবার কোনকিছু সেদিন খুঁজে পাইনি কারণ আমি নিজেও সজীবকে ভালোবেসে ফেলেছি। 


তবুও পপি আপুর কথা শুনে আমি সজীবের চিন্তা বাদ দিলাম। বন্ধু হয়ে সারাজীবন থাকতে পারি সেটাই ভাবতে লাগলাম। তাই আজকে যখন সে প্রপোজ করে তখন গ্রহণ করতে পারিনি। কারণ গতকাল রাতে পপি আপু কল বলেছিলেন সজীব তাকে কতটা ভালোবাসে সেটা যেন জিজ্ঞেস করি। 


(৪)


দেখা করার ২৪ দিন পর হঠাৎ আমি প্রচুর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। সজীব সেই খবর শুনে রাজশাহী থেকে ঢাকা আসে, আর হাসপাতালে এসে দেখা করে। অসুস্থতার জন্য কষ্টে থেকেও তখন আনন্দে আমার বুকটা ভরে গেছে। আমার সেই আনন্দের কথা আমি তার কাছে প্রকাশ করতে পারিনি। 


দক্ষিণখানে তার এক পরিচিত কাকার বাসায় সে থাকতো। প্রতিদিন সকাল দুপুর বিকেল ও রাতে দেখা করতে আসতো। আমার কাছে ভালো লাগত কিন্তু কোনদিন প্রকাশ করতাম না। 


হঠাৎ করে একদিন রাত দশটার দিকে পপি আপু কল দিয়ে বলে " আগামীকাল আমার জন্মদিন, কালকে আমি সজীবকে প্রপোজ করতে চাই তুমি দোয়া করো। " 


বুকের মধ্যে এমন প্রচণ্ড চাপ অনুভব করলাম যা প্রকাশ করার মতো ভাষা নেই। চোখ দিয়ে পানি বের হতে লাগলো, দুজনেই দুজনকে চুপচাপ ভালোবাসার কষ্ট অনুভব করতে লাগলাম। 


পরদিন সকাল বেলা সজীব আসার আগে মা আমাকে বললো "এতো ঘনঘন আসে কেন? " 


- বললাম, সে আমার খুব ভালো বন্ধু তাই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। 


- বৃষ্টি শোন, এটা একটা হাসপাতাল। এখানে যদি ভালো করে থাকতে চাও তাহলে তাকে বলো আর যেন না আসে। নাহলে রোগী নার্স ডাক্তার সবাই খুব খারাপ নজরে দেখবে। 


এগারোটার দিকে সজীব এলো। তার হাতে নতুন কিছু দেখতে পাচ্ছি, মনে হয় খাবার জন্য বাহির থেকে কিছু কিনেছে। আমি কিছুক্ষণ আগে মায়ের কথা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে মন চায় এমন ডিপ্রেশনে চলে এসেছি। 


- সে বললো, কি হয়েছে মন খারাপ নাকি? 


- না তেমন কিছু না, তুমি এখানে কেন? তোমার বন্ধুর আজকে জন্মদিন তাই না? 


- তোমার সঙ্গে দেখা করে তারপর চলে যাবো।


- একটা কথা বলি? 


- হ্যাঁ বলো। 


- তুমি হাসপাতালে আর এসো না, সবাই অনেক খারাপ কথা বলে। 


- তাতে কি হয়েছে? সবাই কি ভাবলো তাতে তো কিছু যায় আসে না তাই না। 


- যায় আসে না মানে? অবশ্যই যায় আসে। তুমি এতো ঘনঘন কেন আসবে? বন্ধু ঠিক আছে কিন্তু তাই বলে এভাবে সারাদিন শুধু আসবে নাকি? 


- তুমি রেগে যাচ্ছ কেন? 


- রাগবো না? তুমি আমার সম্মান নিয়ে মানুষের কাছে ছোট করবে আর আমি চুপচাপ থাকবো? 


- আমি তোমার সম্মান নষ্ট করি? 


- নয় তো কি? তোমার কাছে হাতজোড় করে আমি অনুরোধ করি, দরকার হলে পা বাড়িয়ে দাও পা ধরে বলি। তবুও আর হাসপাতালে এসে এমন করে হাসির পাত্র বানিও না। 


- ঠিক আছে ভালো থেকো। 


সজীব ঘুরে হাঁটা শুরু করলো, আমার নিজের কাছে খারাপ লাগতে শুরু করেছে। আমি তাকে পিছন থেকে আবার ডাক দিলাম। সে একবার শুধু তাকালো, তারপর ঘাড় ফিরিয়ে উধাও হয়ে গেল। 


এটাই আমাদের শেষ দেখা। 

আর কোনদিনই আমাদের দেখা হয়নি, তবে তার খবর জেনেছিলাম বছর খানিক পরে। 


(৫) 


বছর খানিক পর। 

আমি সেদিন দিয়া বাড়ি একা একা হাঁটছি, হঠাৎ করে পপি আপুকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেলাম। সেদিন সজীব হাসপাতাল থেকে আসার পরে তার সবকিছু বন্ধ ছিল। ফেসবুক ডিয়েক্টিভ, মোবাইল নাম্বার বন্ধ, যাবতীয় সকল যোগাযোগের মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছিল। এমনকি পপি আপুর নাম্বারে কল দিয়েও তাকে পেলাম না। 


আজ বছর খানিক পরে আমাকে দেখতে পেয়ে আপু হাসতে হাসতে বললেন  


- কেমন আছো বৃষ্টি? 


- জ্বি আপু ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন? 


- এইতো আলহামদুলিল্লাহ। 


- ঘুরতে এসেছেন? 


- হ্যাঁ, আজকে আমার জন্মদিন তো তাই তোমার দুলাভাইকে নিয়ে ঘুরতে এলাম। 


- দুলাভাই মানে, সজীব? কেমন আছে সে? কোই তাকে তো দেখতে পাচ্ছি না। 


- আরে না, সজীবের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়নি। কেন তুমি জানো না কিছু? 


- না, আসলে গতবছর আপনাকে যেদিন জন্মদিন ছিল সেদিন থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। 


- থাকার কথাও না, কারণ সেদিনই তো সজীব মারা গেছে। তবে আমি ভেবেছিলাম ওর মৃত্যুর খবর তুমি হয়তো জানো। 


আমি পপি আপুর দিকে অপলকে তাকিয়ে রইলাম যেন বিশ্বাস হচ্ছে না তার কথা। চোখে পানি এসে গেছে, নাহলে পপি আপুর চেহারা ঝাপসা কেন? 


- বললাম, সজীব মারা গেছে? 


- হ্যাঁ, সেদিন আমরা একসঙ্গে রিক্সা করে সজীব আর আমি যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে সামনে একটা বাচ্চা মেয়ে ফুটপাত থেকে দৌড়ে আসে। রিক্সা সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক করে, তখর পিছন থেকে একটা প্রাইভেট কার আমাদের রিক্সা ধাক্কা দেয়। আমি বাম সাইডে ছিলাম তাই ছিটকে পড়লাম রাস্তার পাশে ফুটপাতে। সজীব ডান সাইড দিয়ে ছিটকে পড়ে রাস্তার মাঝখানে। আরেকটা প্রাইভেট কার চলে যায় তার মাথার উপর দিয়ে। মাত্র এক মিনিটের মধ্যে সবকিছু ঘটে গেছে। আমার বাম হাত ভেঙ্গে গেল, কিন্তু সজীব পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেল। 


পপি আপুর পাশে একটা লোক এসে দাঁড়াল, মনে হয় ইনি তার হাসবেন্ড। আমি কিছু না বলে চুপচাপ হাঁটা শুরু করলাম, পপি আপু পিছন থেকে একটা ডাক দিয়েছে। আমি একবার পিছনে তাকিয়ে আবার হাঁটতে লাগলাম। ঠিক এভাবেই সজীবের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল। 


------ সমাপ্ত ------


অণুগল্প : -শেষ_দেখা৷ 

কলমে : মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব। 


এমন আরও গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post