স্ত্রীকে নিয়ে স্ট্যাটাস | স্বামী স্ত্রীর আদর ভালোবাসা

 স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

কিছুদিন হলো আমাদের বিয়ে হয়েছে। নতুন বিয়ে হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী এক ধরনের ঘোরের মধ্যে থাকে। তখন মনে হয়, বিয়ের আগের জীবন অপেক্ষা পরের জীবন শুধু আনন্দময়, কোন সমস্যা নেই। কিন্তু, কিছুদিন পর ঘোর কেটে গেলে। যখন ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তেমনি  ইদানিং স্ত্রীকে নিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে আমার । বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলি। শুনেন আপনারা আবার হাসবেন না। 


যেমন, স্ত্রীর পছন্দ হলো শক্ত ভাত আর আমার পছন্দ হলো নরম ভাত। আমি যেমন ভাত কিছুটা শক্ত থাকলে খেতে পারিনা, ঠিক তেমনি সেও কিছুটা নরম হলে খেতে পারেনা। 


সেদিন অফিস থেকে ফিরে রাতে খেতে বসার পর মন মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। চাল চুলায় দেওয়ার একটু পরেই মনে হয় নামিয়ে ফেলেছে সে, তাই ভাত ঠিকমত ফুটেনি। 


আমি মন খারাপ করে বললাম, কি রান্না করেছো! চাল তো ঠিকমত সিদ্ধও হয়নি? চালকে তো... চা থেকে ভাতে রূপান্তরিত হওয়ার সময় দিতে হবে?


স্ত্রী নির্বিকার ভাবে তার থালার ভাত মাখতে মাখতে বলল, শক্ত কোথায়, ঠিকই তো আছে?


আমি বললাম, কিভাবে ঠিক আছে? ভাতগুলো তো ভাত হয়নি, চাল রয়ে গেছে। এই রকম ভাত কষ্ট করে রান্না না করে চাল ভিজিয়ে খেয়ে নিলেই তো হয়।


স্ত্রীও কম যায় না। সে বলল, এই রকম ভাতই তো ঠিকই আছে। এর চেয়ে নরম হলে, ভাত না খেয়ে জাউ খেলেই তো হয়।


পরদিন রাতে খেতে বসে আবার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলাম। আমি বললাম, তুমি একটা কাজ করতে পারো, কিছুদিন আমার সাথে নরম ভাত একটু কষ্ট করে খেয়ে দেখ, প্রতিদিন খেলে দেখবে অভ্যাস হয়ে গেছে। তখন আর নরম মনে হবে না, মনে হবে ঠিকই আছে। নরম ভাত খেতেই তো সুবিধা, চিবানোর কষ্ট করতে হয় না।


স্ত্রীও পাল্টা বলল, তার চেয়ে তুমি আমার সাথে কিছুদিন শক্ত ভাত খেয়ে দেখো, তোমারও অভ্যাস হয়ে যাবে এবং মজাও পাবে। কারন, শক্ত ভাতের সাথে খেলেই তরকারীর স্বাদ বেশী পাওয়া যায়।


আমি বললাম, আমি অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারবো না, কোন মতেই শক্ত ভাত খেতে পারবো না।


স্ত্রীও আমার মত একই সুরে বলল, আমিও অভ্যাস পরিবর্তন করে নরম ভাত খেতে পারবো না।


আমি যুক্তি দেখালাম, তোমার থেকে আমার বয়স বেশী। অভ্যাস টা আমার বেশী দিনের পুরোনো, যা পরিবর্তন করতে বেশী কষ্ট হবে। তার চেয়ে তোমার পক্ষে অভ্যাস পরিবর্তন করা আমার থেকে বেশী  সহজ হবে।


স্ত্রী দৃঢ় কন্ঠে বলল, অভ্যাস তো অভ্যাসই, তার আবার নতুন পুরোনো বলে কিছু আছে নাকি?  আমি মরে গেলেও নরম ভাত খেতে পারবো না।


তার পরদিন রাতে অফিস থেকে বাসায় এসে খেতে বসে আবার স্ত্রীর কাছে অভিযোগ করলাম।


স্ত্রী নমনীয় হয়ে বলল, দেখো; তোমার পছন্দ নরম ভাত আর আমার পছন্দ শক্ত ভাত। তুমি যেমন শক্ত খেতে পারো না, আমিও তেমন নরম খেতে পারিনা। একটা কাজ করলে কেমন হয়? আগামীকাল থেকে নরম আর শক্তের মাঝামাঝি করে রান্না করি। তাহলে দুজনই একটু অভ্যাস করলে খেতে পারবো, তখন আর কারোর সমস্যা হবে না।


আমি একরোখার মত বললাম, ঐ রকম আমি খেতে পারবো না। ভাতে চুল পড়লেও হয়তো খেতে পারবো। কিন্তু, যেমন ভাত খাই তার থেকে এক চুল শক্ত হলেও খেতে পারবো না।


তারপর আমি তাকে পরামর্শ দিলাম, তুমি একটা কাজ করতে পারো, ভাত দুইবার দুইরকম করে রান্না করো, তাহলেই তো আর আমাদের কারো কোন সমস্যা থাকেনা?


কিন্তু স্ত্রী আমার এই প্রস্তাবে রাজি হলো না। তার বক্তব্য হলো, ভাতের মত একটি নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার সে প্রতিদিন দুইবার করে রান্না করতে পারবে না।


তার একদিন পর অফিস থেকে বাসায় এসে দরজার সামনে এসে কয়েকবার বেল টিপলাম। স্ত্রী দরজা খুলল না এবং ভেতর থেকে তার কোন সারা শব্দও পাচ্ছি না। হয়তো ঘুমুচ্ছে বা বাথরুমে আছে। 


এই বাসায় আমি আর আমার স্ত্রী দুজনই থাকি।  আমার কাছে অবশ্য বাহির থেকে দরজা খোলার একটি চাবি আছে। 


কিন্তু সেই চাবি দিয়ে দরজা খুলতে আমার মন চায় না।প্রতিদিনের অভ্যাস বসে অফিস থেকে এসে বেল টিপব আর ও দরজা খুলে আমার দিকে লাজুক হাসি ছুড়ে দিবে এবং আমাকে দেখে সারাদিন আমার অপেক্ষায় থাকা তার চোখগুলোতে খুশীর আভা দেখা যাবে এই দৃশ্য দেখতে খুব ভালো লাগে।


বেশ কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকার পরও সে দরজা খুলল না। তাই অগত্যা আমি চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘরে ঢুকেই অফিসের ব্যাগটা রেখে বেড রুমের দিকে এগিয়ে গেলাম। সে হয়তো ঘুমুচ্ছে। বেড রুমে গিয়ে দেখি বিছানা ফাঁকা, সে ওই ঘরেও নেই। হয়তো বাথরুমে গেছে। বাথরুমের সামনে গিয়ে দেখলাম দরজা বাহিরে থেকে সিটকিনি আটকানো। তারমানে সে সেখানেও নেই। তারপর তাকে রান্নাঘর, বেলকুনী এবং বাসার বিভিন্ন যায়গায় খুঁজলাম। কিন্তু পুরো ফ্লাটের কোথাও সে নেই।


আমরা যে বাসায় ভাড়া থাকি, বাসাটা তিনতলা, দুই ইউনিটের বাড়ি। নিচতলায় গ্যারেজ। তিন তলায় এক ফ্লাটে বাড়িওয়ালা থাকেন, বাকী তিনটি ফ্লাট ভাড়া দেওয়া। আমরা থাকি দোতলার এক ফ্লাটে।


আমার স্ত্রী হয়তো পাশের ফ্লাটে গেছে এ চিন্তা করে  তার খোঁজ করার জন্য সদর দরজা খুলে বের হলাম। কিন্তু পাশের ফ্লাটের দরজার সামনে যাওয়ার আগেই দেখলাম সেই ফ্লাটের কিশোরী মেয়েটি  সিঁড়ি দিয়ে উপরে যাচ্ছে। 


আমি তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে সে জানালো, আন্টি তাদের বাসায় যায়নি। ওপরের ফ্লাটে গেছে কিনা তাকে তা দেখতে বললাম। সে ওপরে উঠে কিছুক্ষন পরেই আবার নিচে নেমে এসে জানালো ওখানেও যায়নি। সে বাড়িওয়ালার ফ্লাটে যায়নি, কারন ওনারা কয়েকদিন আগে গ্রামের বাড়ি গেছেন। সে ছাদেও যায়নি, কারন, ঢাকা শহরের প্রায় বাড়ির মত আমাদের বাড়ির ছাদও তালা দেওয়া থাকে। ভাড়াটিয়ারা ছাদে যেতে পারে না।

​​​​​​​​​​​​​​​​​

হটাৎ  করে মনে হলো, কি বোকা আমি! তার মোবাইলে ফোন দিলেইতো পারি। তারাতারি করে তাকে ফোন দিলাম। কিন্তু দেখলাম ঘরে রিং বাজছে, সে মোবাইল নিয়ে যায়নি  ঘরেই রেখে গেছে।


আমাদের বিয়ের পর থেকে দেখে আসছি, সে কখনো দোকানে যায় না। গেলেও এতক্ষনে চলে আসার কথা। অন্য কোথাও কি গিয়েছে? অন্য কোথাও গেলে তো আমাকে জানিয়ে যাওয়ার কথা।


তখন আমার মনে তাকে নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তা পেয়ে বসলো। সে কি রাগ করে চলে গেছে? সে হয়তো এই কয়েকদিন সংসার করে বুঝে গেছে যে আমার আর তার মন মানসিকতা আলাদা। আমার মত লোকের সাথে তার এক ছাদের নিচে থাকা সম্ভব নয়। সে জন্যই সে চিরদিনের মত চলে গেছে। 


তার চলে যাওয়ার ব্যাপারে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য চিন্তা করলাম, সে যদি আসলেই চলে গিয়ে থাকে, তাহলে তো তার কিছু  টুকিটাকি জিনিসপত্র ও জামা কাপড়ও নিয়ে যাওয়ার কথা। আমাদের বিয়ের সময় একটা ট্রলি ব্যাগ কিনেছিলাম, দেখি সেটা আছে কিনা।  ব্যাগ খুজতে গিয়ে আতংকিত হয়ে দেখলাম ট্রলি ব্যাগটা নেই।


একবার মনে করলাম তাদের বাড়িতে ফোন করে দেখি সে ওখানে গেছে কিনা। রাগ করে তো তার তাদের বাড়িতেই যাওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে ফোন দিলে সে যদি ওখানে না গিয়ে থাকে তাহলে ওদের বাড়ির লোকজন খুব টেনশনে পরে যাবে এবং আমাকে প্রশ্নের পর পশ্ন করে কান ঝালাপালা করে দিবে। কখন গেল? কোথায় গেল? কেন গেল? আমার সাথে তার ঝগড়া হয়েছে কিনা? আমি তাকে কি বলেছি? ইত্যাদি নানান প্রশ্ন। তার চেয়ে ভালো হবে, কিছুক্ষন অপেক্ষা করে সরাসরি তাদের বাসায় চলে যাওয়া।


তার চলে যাওয়ার টেনশনে আমি  মাথায় হাত দিয়ে বসে পরলাম। 


যারা সিগারেট খায় তাদের জন্য একটা সুবিধা হলো, তারা কোন কিছু নিয়ে টেনশন করলে, ফস করে একটা সিগারেট ধরিয়ে টানতে থাকে এবং সমস্যাটি নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে থাকে। 


তখন তাদেরকে দেখলে মনে হয় তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় সিগারেট সাহায্য করছে। যদিও সিগারেটের সাথে ভাবনা চিন্তা করার বৈজ্ঞানিক কোন যুক্তি নেই, পুরো বিষটিই মনের একটা ভুল ধারনা। আমার যদি সিগারেটের অভ্যাস থাকতো, তাহলে আমিও তখন একটি সিগারেট ধরিয়ে সমস্যাটি নিয়ে ভাবতে পারতাম। সেই মুহুর্তে আমার জীবনে সিগারেটের অভ্যাস না করার জন্য আফসোস হতে লাগল।


আমি সিগারেট ছাড়াই খালি মুখে; সে কেন গিয়েছে, কোথায় যেতে পারে এবং যাওয়ার পর কি ফলাফল হতে পারে তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে লাগলাম।


সে চলে যাওয়ার পর সামনের সময়গুলোতে কি কি ঘটনা ঘটতে পারে তা যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠল।আমি তার জন্য আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করে তাকে আনার জন্য তাদের বাড়িতে যাব, কিন্তু সে ফেরত আসবে না। আমি বলব যা কিছু হয়েছে ভুলে যাও, এখন থেকে তোমার কথা মতই সংসার চলবে। 


সে তাও আসবে না। বলবে,কেউ যদি মন থেকে কোন কিছু খুশীমনে করতে না পারে তাহলে তো তাকে দিয়ে জোর করে কোন কিছু করানো যায় না, ঠিকও নয়। তুমি হয়তো এখন আমাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সব কিছু মেনে নিচ্ছ, কিন্তু আমার কথামত চলতে গিয়ে তখন তোমার মন খারাপ হবে। তাতে না আমি সুখে থাকবো, না তুমি থাকবে। এভাবে সংসার করা সম্ভব নয়। 


তার পর সে আমার কোন কথা বা অনুনয় বিননয়ই শুনবে না। আমি শ্বশুর শ্বাশুরীকে তাকে ফিরে আসার ব্যাপারে বুঝানোর অনুরোধ করলে তারা আমাকে জানাবে, তারা অনেক বুঝিয়েছে, কিন্তু মেয়ে যদি না যেতে চায় তাহলে তাদের কি করার আছে? তারপর আমি ভগ্ন মনোরথ হয়ে ফেরত চলে আসবো।


তার এই ব্যাবহারে আমার রাগ হলেও রাগ করে থাকতে পারবো না। তাকে আমি ধরে রাখতে পারিনি এই  ব্যর্থতায় শুধু প্রচন্ড অনুশোচনা হবে।কারন, আমি যে তাকে প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলেছি।


আমাদের বিয়েটা প্রেমের বিয়ে ছিল না, ছিল পারিবারিক বিয়ে। বিয়ের আগে আমরা একে অপরকে চিনতাম না। সে জন্য আমি তার সামনে স্বামীর অধিকার নিয়ে দাড়াতে পারি, কিন্তু প্রেমের অধিকার নিয়ে দাড়াতে পারছি না। কাউকে ধরে রাখার জন্য স্বামীর অধিকার থেকে প্রেমের অধিকারটা বেশী জরুরী। আমার প্রতি তার, আমার মত প্রচন্ড ভালোভাসা হয়তো এখনো তৈরী হয়নি। সে সময়টুকু আমি তাকে দেই নি।


তারপর আমাকে হতাশার সমুদ্রে ভাসিয়ে চিরদিনের মত সে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলবে। এবং একসময় অন্য কাউকে বিয়ে করে নিবে।


এই শহরটা খুব বেশী বড় নয়। রাস্তাঘাটে চলতে গিয়ে প্রায়শই আমাদের বিভিন্ন পরিচিত লোকজনের সাথে দেখা হয়ে যায়। একদিন হয়তো আমি বাসে করে কোথায় যাবো, তখন হটাৎ করে খেয়াল করবো আমার সামনের দিকের কোন সিটে সে তার বর্তমান স্বামীর কাধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে নিশ্চিন্ত মনে বসে আছে। ওই লোকটি হেসে হেসে কি যেন বলছে আর সে গভীর মনযোগে তা শুনছে। তারও টুকটাক কথা এবং মৃদ হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে।


এই দৃশ্য দেখে প্রচন্ড কষ্টে  আমার কলিজাটা যেন ছিড়ে যাবে। আমার পরম আদরের সে অন্য কারোর কাধে মাথা রেখে বসে থাকবে, এই দৃশ্য কি সহ্য করা যায়? সে কতদিন কত রাত আমার কাধে ও হাতের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়েছে, তার সাথে কত গল্প করেছি। আমার তখন মনে হবে আমার বউ এর পাশে বসার অপরাধে ওই লোকটাকে খুন করে ফেলি এবং ওকে আমার কাছে নিয়ে আসি।কিন্তু, আমি কিছুই করতে পারবো না, আমি যে অসহায়। আমি শুধু জ্বলে পুরে ছাড়খার হবো।


আমি এই সব আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে তাকে খুঁজতে দরজার বাহিরে এসে স্বশুরবাড়ীর দিকে রওয়ানা দিতে যাবো, তখন মহাশুন্য থেকে পরার মত অবাক হয়ে দেখলাম, সে ছাদ থেকে ট্রলি ব্যাগ নিয়ে সিঁরি দিয়ে নেমে আসছে। 


একজন মানুষের জীবনে দু:খের দৃশ্য অনেক থাকতে পারে, কিন্তু সুখের দৃশ্য  খুব বেশী থাকেনা, থাকে অল্প কিছু। আমার তখন মনে হচ্ছিল, আমার জীবনে সেই অল্প কিছু আনন্দের সময়ের মধ্যে সেই সময়টি সবার উপরে থাকবে।


সে আমার কাছে এসে বলল, কখন এসেছো? এখন আবার কোথায় যাচ্ছ?


আমি বললাম, কিছুক্ষন আগে এসেছি। তোমাকে খুঁজতে যাচ্ছি।


স্ত্রী বলল, খুঁজতে যাচ্ছ মানে?


আমি বললাম, তোমাকে ঘরে না পেয়ে ভাবলাম কোথায় গেলে?


স্ত্রী বলল, ট্রলি ব্যাগটা খুব ময়লা হয়ে গিয়েছিল। তাই দুয়ে ছাদের শুকাতে দিয়েছিলাম।


আমি বললাম, ছাদ না তালা দেওয়া থাকে?


স্ত্রী বলল, বাড়িওয়ালী আন্টি গ্রামে যাওয়ার সময় আমার কাছে চাবি দিয়ে গিয়েছিলেন।


তারপর আমরা দুজনে ঘরে ঢুকলাম। সে ঘরে ঢুকার সাথে সাথে মনে হলো এতক্ষন মনের অন্ধকার হয়ে থাকা ঘরটা হটাৎ করে আলোকিত হয়ে গেল। আমার বুকের উপর থেকে যেন বিশাল এক পাথর নেমে গেল।


সে বলল, আজকে ভাত রান্না করার সময় মনে করেছিলাম তোমার পছন্দ মত রান্না করবো। কিন্ত প্রতিদিনের অভ্যাস বসে পুরোপুরি ওরকম হয়নি, কিছুটা শক্ত র‍য়ে গেছে, তুমি আবার খাওয়ার সময় রাগ করোনা।


আমি মনে মনে বললাম, তুমি আজকে আমাকে ভাতের পরিবর্তে চাল ভেজে দিলেও আমি তা তরকারী দিয়ে খেয়ে ফেলতে পারবো। কিন্তু মুখে বললাম, সমস্যা নেই খেতে পারবো।


ততক্ষনে তাকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে চোখে পানি চলে এসেছে। সে আমার চোখে পানি দেখলে লজ্জায় পরে যাবো, তাই আমি তার দিকে কিছুটা পেছনে ফিরে তা লুকালাম।


-ছোট_গল্প 

-মনের_টান

লেখা- ইকবাল হোসেন।


বাস্তব জীবনের ঘটনা ও গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post