ভালোবাসা শুধু কাঁদায় | ভালোবাসার মানুষের অবহেলা

  •  অবহেলার কষ্টের গল্প

অবহেলার কষ্টের গল্প

-- আপনি সাজু ভাই না? 

-- জ্বি। 

-- আপনার বেঈমান বন্ধু কোথায়? পালিয়ে বিয়ে করবে বলে যিনি উধাও হয়ে গেল। 

-- মুবিনের কথা বলছেন? 

-- হ্যাঁ। 

-- সে আছে টুটপাড়া থাকে। 

-- বাহ, তাহলে খুলনাতেই আছে? 

-- হ্যাঁ। 

-- একটা কথা জানতে ইচ্ছে করছে। 

-- কি কথা? 

-- সেদিন আপনার বন্ধু আমার সঙ্গে বেঈমানী করলো কেন? আমি তো তাকে মনেপ্রাণে সবকিছু দিয়ে ভালোবেসেছিলাম, তবুও কেন আমাকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে হারিয়ে গেল? 

-- হয়তো কোন এক অপ্রত্যাশিত কারণে, নাহলে তো এমনটা হতো না তাই না? 

-- হাহাহা, হাসালেন ভাই, তবে আমি মাঝে মাঝে ভাবতে গেলে অবাক হয়ে যাই। কারণ আপনার বন্ধুর মতো একটা বেঈমানের জন্য কতটা পাগল ছিলাম আমি। 

-- আর কিছু বলবেন? 

-- আপনার বন্ধর নাম্বারটা পাওয়া যাবে? কিছুটা মহাবাণী শুনাতে ইচ্ছে করছে। বা তার যদি কোন ঠিকানা থাকে তবুও দিতে পারেন, একবার দেখা করতে চাই। হুট করে তার বাসায় গিয়ে একবার যদি চমকে দিতে পারতাম। 

-- যেতে পারো ঠিকই কিন্তু সে চমকাবে না। 

-- কেন? আপনি তাকে বলে দিবেন যে আমি তার ঠিকানা নিয়েছি তাই যেকোনো সময় বাসায় গিয়ে হাজির হতে পারি। 

-- না। 

-- শুনুন মিস্টার সাজু ভাই, আপনার সঙ্গে আমার তেমন যোগাযোগ ছিল না কখনো। আপনার বন্ধুর কাছে বেশিরভাগ সময় আপনার গল্প শুনতাম, আর তারপরই একবার মনে হয় দেখা হয়েছে। আমার স্মৃতি অনেক মজবুত তাই এখন একবার দেখে চিনতে পেরেছি। 

-- জ্বি সেটাই ভাবছি। 

-- তো দিবেন আপনার বন্ধুর ঠিকানা বা নাম্বার? 

-- আপনার সঙ্গে মুবিনের কোন কাছের বন্ধুদের যোগাযোগ নেই? 

-- না, ও ছিল একঘেয়ে তাই ওর বন্ধু কম ছিল আর তেমন কেউ ছিল না যে ওকে সেই মুহূর্তে খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। 

-- একটা কথা বলবো? 

-- বলেন। 

-- আপনি এখনো মুবিনকে খুব ঘৃণা করেন? 

-- কোন সন্দেহ নেই। 

-- আজ থেকে আর ঘৃণা করিয়েন না। 

-- কেন? এটা সারাজীবন থাকবে। 

-- আপনার বিয়ে হয়েছিল কত তারিখ? 

-- ২২ নভেম্বর ২০১৭। 

-- মুবিন মারা গেছে ১৯ নভেম্বর ২০১৭ সালে, ওইদিন রকির জন্মদিন ছিল তাই আমার স্পষ্ট মনে আছে তারিখটা। টুটপাড়া কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে, সে কেয়ামত পর্যন্ত ওখানেই থাকবে। 


হা হয়ে তাকিয়ে রইল আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটা, কিছু একটা জিজ্ঞেস করার জন্য মুখের মধ্যে জিহবা নড়ছে। আমি সেই প্রশ্ন করার আগেই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অপেক্ষমান রিক্সায় উঠে বসলাম। 


------(সমাপ্ত) (ছোটগল্প) ------


মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব।

  • অবহেলার কষ্টের স্ট্যাটাস

যাত্রাবাড়ী থেকে লোকাল বাসে উঠে উত্তরা যাচ্ছি। একটা মেয়েকে বেশ পছন্দ হয়েছে তাই মোবাইল বের করে চুরি করে দু একটা ছবি তোলার চেষ্টা করতে লাগলাম। কিন্তু একটু পরে তার পাশের সিটে একটা মহিলা উঠে বসাতেই আমি আর তাকে ভালো করে দেখতে পেলাম না। 

আমার পাশেও একটা আঙ্কেল বসে আছে, আর মেয়েটার পাশে এক আন্টি। মনে মনে ভাবলাম এরা দুজন যদি একসঙ্গে বসতো তাহলে আমি আর মেয়েটা একসঙ্গে বসতে পারতাম। 

জেগে জেগে স্বপ্ন দেখে লাভ কি? মনকে সেই সান্তনা দিয়ে বসে আছি, প্রচুর জ্যামে আটকা পড়ে গেছে গাড়ি। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সামান্য আধা কিলোমিটার রাস্তা যেতে পারলাম না। 


বাড়ি থেকে ভোরবেলা রওনা দিয়েছি তাই চোখে ঘুম টলমল করছে। কানে ইয়ারফোন গুঁজে দিয়ে তন্দ্রা লেগে গেল। কড়া ব্রেক কষলো ড্রাইভার, ঘুম ভেঙ্গে গেছে আমার। তাকিয়ে দেখি আমরা এখন রামপুরা চলে এসেছি। 


হঠাৎ করে পাশের সিটে সেই মেয়েটাকে দেখে ভুত দেখার মতো চমকে গেলাম। মেয়েটা আমার পাশে কখন এলো? হায় আল্লাহ। 

- রাতে কি চুরি করছেন? বাসের মধ্যে এভাবে কেউ ঘুমায় নাকি? 

- ছি ছি চুরি করবো কেন? আমার দাদা গতবছর হজ্জ করে এসেছে। আমি কোনো অন্যায় করতে পারি নাকি? 

- বাসের মধ্যে মেয়েদের ছবি লুকিয়ে লুকিয়ে তোলা কি ন্যায় নাকি অন্যায়? 

- ইয়ে মানে ইয়ে। 

- এরপর যদি আর কারো ছবি তুলেন তাহলে ক্যামেরার ফ্ল্যাশলাইট বন্ধ করে নিবেন। আহাম্মক। 

- জ্বি আচ্ছা। 

- এবার বলেন এভাবে ছবি তোলার কারণ কি? 

- এমনিতেই।

- কাচুমাচু করছেন কেন? লজ্জা করে নাকি? 

- আপনি অনেক সুন্দর, বিশেষ করে আপনার চুল গুলো বেশি সুন্দর। আর আগে তো চোখের দিকে তাকিয়ে দেখিনি, এখন সামনে থেকে চোখ দেখে আরও মায়াবী লাগছে। 

- আপনার কি মন হয় আমাকে দেখে যেকোনো ছেলে প্রেমে পড়ে যাবে? 

- ১০০% কোনো সন্দেহ নাই। 

- আপনার মোবাইলটা দেন। 

আমি বাধ্য ছেলের মতো মোবাইলটা তার হাতে দিয়ে দিলাম। মেয়েটা একটা নাম্বার তুলে আমার হাতে দিয়ে বললো, 

- সেভ করুন।

- কি নাম দিয়ে সেভ করবো? 

- সজীব। 

- মেয়ে মানুষের নাম সজীব হয় নাকি?

- আপনাকে কখন বললাম যে এটা মেয়ে মানুষের নাম্বার?

- তাহলে কার নাম্বার?

- আমাকে বয়ফ্রেন্ডের।

- আ্যা...?

- হ্যাঁ, সারাক্ষণ শুধু বলে ও ছাড়া আর কোনো ছেলে নাকি আমাকে পাত্তা দেবে না। তাই আপনি ওর নাম্বারে কল দিয়ে এতক্ষণ যা যা বললেন সবকিছু বলবেন। তাকে বলবেন যে আমার দিকে বাসের মধ্যে আপনি কীভাবে ক্রাশ খেয়েছেন।

- তাহলে আমার কি হবে?

- আপনার যে কয় টাকা খরচ হবে সেটা আমি আপনাকে দিয়ে

 দেবো।

বাস ততক্ষণে নতুন বাজার এসে গেছে। মেয়েটা সিট থেকে উঠে গেল, আমি সত্যি সত্যি আহাম্মক এর মতো তাকিয়ে রইলাম।। 

রম্যগল্পঃ- আহাম্মক। 

লেখাঃ- মোঃ সাইফুল ইসলাম।


সব ধরনের গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post