গল্প_এক_পরিবার | মেয়েদের সংসার জীবন

স্বামীর সংসার

স্বামীর সংসার

 ঘটনাটি যে স্বামী-স্ত্রীর সাথে ঘটে। গোপনীয়তার স্বার্থে কিছু তথ্য পরিবর্তন করা হলো।


সদ্য বিবাহ করে তারা নতুন বাসায় উঠেন, দুজনেই খুব খুশি কারন দুজনেই তাদের মনের মানুষ কে পেয়েছেন, প্রেমের বিয়ে ছিল, সবুজ আর মিতু তাদের সম্পর্ককে বিয়ে তে রুপ দেন কিন্তু এটা এতটা সহজ ছিল না, কারন মিতুর পরিবার সবুজ কে পছন্দ করতো না। তাই তারা পরিবারের সঙ্গ ত্যাগ করে নিজেরা একাই বিয়ে করে ঢাকায় একটা ছোট্ট বাসায় তাদের নতুন জীবন শুরু করেন। 


মিতু তার পড়াশুনা চালিয়ে যায়, কিন্তু গ্রামের থেকে চলে আসায় তার ভার্সিটি ট্রান্সফারে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়, ফাইনাল সেমিস্টার না হলে মিতু পড়াশোনা ছেড়েই দিতো, এদিকে সবুজ চা*কুরি খুজে, এবং একটা কাপড়ের দোকানে সে আপাতত কাজ করতে থাকে, একদিনের ঘটনা , 


মিতু সকল কাজ শেষ করে সবুজের জন্য অপেক্ষা করছিল। রাত তখন ১২-১টার কাছাকাছি, মিতু সিড়ি দিয়ে কারো উঠার শব্দ পেয়ে দৌড়ে দরজার সামনে যায়, এবং উকি দিয়ে দেখে দরজার ওপারে কেউ নেই, মিতু ফিরে আসার সময় কারো হাটার শব্দ অনুভব করলো, এবার মিতু আবার লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখে , কাউকে না পেয়ে মিতু একটু ভয় পেয়ে সবুজ কে কল করে, সবুজ বলে সে রাস্তায় আসতেছে, মিতু এবার তার রুমে গিয়ে বসে, একটু পর সবুজ আসে, মিতু সারাটাদিন বাসায় একা থাকে ,গল্প করার মত কেউ নেই, পড়াশোনা কতক্ষন করা যায়, আর যেহেতু সবুজ সেলস*ম্যানে আছে, তো কথা বলাও এতটা সহজ না,

মিতু সবুজ কে বললো আমার এই বাসায় একা থাকতে ভয় করে, আমিও কি একটা চা*কুরি খুজবো? 


সবুজ এক কথায় না করে, সবুজ বলে তোমার ফাইনাল সেমিস্টার চলছে, এটা শেষ করো ভাল মতো , তারপর দেখা যাবে, আর আমি দেখি একটা বুয়া পাই কিনা, আপাতত কয়েকটা দিন কষ্ট করো, সবুজ বুয়ার কথা বলেছেতো সহজেই, কিন্তু আপাতত খরচের চাপ টা সবুজের একটু বেশিই।


সারাদিনের পরিশ্রম শেষে সবুজ মিতু একসাথে ঘুমাতে যায়, মিতু টুকটাক বুঝতে পারে যে সবুজের খরচ উঠাতে একটু কষ্ট হচ্ছে, এরপর মিতু বিনয়ের সাথে বলে, একটা কথা বলতাম, যদি বকা না দাও তো, সবুজ বলে তাহলে থাক বইলো না।


মিতু চট করে বলে ফেললো একলাইনে। “পড়াশোনার বাইরে আমার সময় কাটে না তুমি থাকো সারাক্ষন কাজে, আমাকে একটা সেলাই মেশিন কিনে দাও আমি সেলাই এর কাজ শিখেছি, আমি সেলাই করতে চাই আমার সময় কা*টবে।” এই বলে মিতু চুপ হয়ে গেল, আর সবুজ হা হয়ে তাকিয়ে রইল। সবুজ একটু গম্ভীর গলায় বলে ঘুমাও।


পরদিন সবুজ চা*কুরি তে চলে যায় আর সাথে মিতু কে নিয়ে তার ভার্সিটিতে নামিয়ে দেয়, ভার্সিটিতে সবাই তার অপরিচিত। 


এরপর মিতু ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরে, ফেরার পথে মিতু কিছু সবজি ফুটপাত থেকে কিনে নেয়। বাসায় ডুকার পর মিতু অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পরে, সে বিছানায় গিয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর কাজ শুরু করবে এই ভাবতে ভাবতে কখন যে তার চোখ লেগে যায় বুঝে উঠতে পারেনি।


সেদিন মিতুর ফোনে কয়েকটা নাম্বার থেকে কল আসে এর মাঝে একটা মিতুর ছোট ভাইয়ের, ঘুম থেকে উঠে মিতু কল লিস্ট চেক করে সবার আগে ছোট ভাইকে কল ব্যাক করে, ছোট ভাই মিতুর খোজ খবর নেয় এবং সে ঢাকায় আসবে, মিতুর ঠিকানা চায়। 

ছোট ভাই আসবে, সরল মনে মিতু ঠিকানা দিয়ে দেয়, রাতে সবুজ আসলে তাকে সব বলে এবং সবুজ মিতুর খুশি দেখে সবুজের ভাল লাগে, এবং সবুজ মিতুর জন্য সেলাই মেশিন নিয়ে আসে এই দেখে মিতু খুশিতে কেদে দিবে অবস্থা। এক সাথে দুইটা খুশি। 


কিছুদিন পর মিতুর ছোট ভাই মুন্না আসে , দুই ভাইবোন মিলে সেই আড্ডা, আজ মিতু অনেক খুশি বিয়ের পর প্রথম তার পরিবারের কেউ তাকে দেখতে আসলো। 

সবুজ তার শেলক আসবে শুনে বাজার করে , রাতে সবুজ জলদি আসে এবং তারা একসাথে রাতের খাবার শেষ করে, 

রাতে মিতু সবুজ কে বলে মুন্না কালই চলে যাবে বলে, ওর পড়াশোনা আছে, সবুজ বললো ওকে আবার অনেকদিন ছুটি নিয়ে আসতে বইলো।

পরদিন সকাল বেলা সবুজ এবং  মুন্না সকালের নাস্তা করে, সবুজ অফিসে চলে যায়, এবং ভাইবোন কিছুক্ষন গল্প করে তারপর মুন্নাও বিদায় নেয়।


মিতু অনেক কান্না করে, আসলে মিতুরা এক ভাই এক বোন এবং মিতুর মা বাবা, মিতু অনেক আদুরে ছিল। মিতুর মা বাবার মিতুকে ভাল জায়গায় বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল, যেটা সম্ভব হয়ে উঠেনি। 


ভাইকে বিদায় দিয়ে মনকে শক্ত করে মিতু ঘর গোছানো শুরু করে কারন একটু পরে তারও ক্লাস আছে।

কাজ করতে করতে মিতু যখন বাসন মাজতে নাস্তার টেবিল থেকে সব উঠাবে তখন সে লক্ষ্য করলো মিতুর এবং মুন্নার চায়ের কাপ থাকলেও সবুজের চায়ের কাপটি নেই। মিতু কিছুক্ষন খোজাখুজি করে না পেয়ে সে ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নিয়ে চলে গেল, কারন তার ক্লাসও আছে।


সেদিন মিতু আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করলো আর তা হচ্ছে মিতু গোশল করে ভার্সিটি যাওয়ার জন্য তারাহুরো করে চুল আছড়াতে যাবে তখন সে লক্ষ্য করে তার চিরুনির মাঝে সব সময় চুল লেগে থাকে যা সচরাচর মিতু অনেক জমলে তারপর এগুলো খুলে ফেলে দেয়। কিন্তু আজ চিরুনি পরিস্কার দেখে বেশ অবাকই হলো।


অতটা না ভেবে সে ভার্সিটি চলে গেল।


সেদিন সন্ধানাগাদ সবুজ বাসায় ফেরে কেননা তাদের দোকানের মেরামত কাজ চলছিল। তাই সবুজ সুযোগ টা মিস দিল না। বাসায় আসার পর মিতু খুব খুশি হয়, এরপর তারা পুরো সময় এক সাথে কাটায়, মিতুর সেলাই মেশিনের জন্য কিছু জিনিস কেনা প্রয়োজন ছিল , তারা দুজন গিয়ে শপিং করে আসে, খুব ভালই যাচ্ছিল তাদের সংসার জীবন।

এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর একদিন সবুজ অফিসের জন্য বের হয় এবং মিতু প্রতিদিনের মত কাজ করতে করতে হঠাৎ তার পেট ব্যাথা শুরু হয়, মিতু চিন্তা করলো অসময়ে পেট ব্যাথা করার তো কোন কথা না, পরে মিতু বিশ্রামে চলে যায় । হঠাৎ মিতু অনুভব করে তার শরীর  ভার হয়ে উঠে। একটু পর সে ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠে……. তার কিছুক্ষন পরেই হঠাৎ……..সবুজ কল করে, সবুজ কে মিতু বাসায় আসতে বলে, কিনেতু ওপাশ থেকে অচেনা এক লোক বলে উঠলো আপনার এই লোক এ*ক্সি*ডেন্ট করেছে, আপনি যেখানেই আছেন …… এই হাসপাতালে চলে আসেন…..


সত্য_ঘটনা 

-গল্প_এক_পরিবার

 পর্ব ১

-গল্প_এক_পরিবার 

পর্ব ২


হাসপাতালে সবুজ , এটা শুনে মিতুর কান্নার মাত্রা আরো বেড়ে যায়, এদিকে তীব্র পেটে ব্যাথা, সেদিন মিতু সবুজ সবুজ বলে কাঁদতে কাঁদতে কখন যে অচেতন হয়ে যায়, সে জানেনা।


ঠিক বিকেল নাগাদ মিতুর হুস ফেরে, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার জন্য ঘরের লাইট জ্বালানো হয়নি, পুরো অন্ধকার, হঠাৎ মিতু উঠে বসলো আর ফোন হাতে নিল, সেই নাম্বারে কল দিল এবং কল ডুকলো কিন্তু কেউ রিসিভ করলো না, মিতু কি করবে বুঝতে পারছে না, এদিকে মিতুর মনে হলো ঘরের দরজায় কেউ কড়া নাড়ছে, কিন্তু সে তখনো দূর্বল চোখ মিটমিট করে আছে, এবার স্পস্ট শুনতে পেলো দরজায় কেউ আছে, মিতু কোনরকম দরজার সামনে গিয়ে দরজা খুলতেই দেখে পাশের বাসার কয়েকজন, তারা বলতে লাগলো, কোন সমস্যা হয়েছে আপনাদের? আজ সারাটাদিন আপনাদের দেখিনি কি হয়েছে বলেই ঘড়ে ঢুকে পরে, তারা ভেবেছে স্বামী-স্ত্রীর জগড়া তাই তারা এরিয়ে গিয়েছে কিন্তু যখন দেখলো বিকেল হয়েছে কোন স্বারাশব্দ নেই তখন তারা একটু দরজায় কড়া নাড়ে।


উত্তরে মিতু শুধু আস্তে ধীরে বলে উঠে আমাকে একটু এই হাসপাতালে নিয়ে যান, আমার স্বামী এক্সিডেন্ট করছে, প্রতিবেশিদের সাথে তেমন পরিচয় নেই, কেউ বলে যাবে কেউ বলে যাবে না, এমন করতে করতে দুইজন প্রস্তুত হলো মিতুর সাথে যাওয়ার জন্য , তারা তৈরি হয়ে বের হবে ঠিক তখনি নিচে থেকে ৩-৪ জন মানুষের গলার স্বর পাওয়া যায়, মিতু ৪ তলা থেকে নিচে তাকিয়ে দেখে ৪-৫ জন মানুষ উপরে আসছে, মিতুর বুঝতে দেরি হলো না, মিতু দৌড়ে নিচে যেতে চাইলো কিন্তু প্রতিবেশিরা তার অবস্থা দেখে তারা নিজে গেল, এরপর সবুজকে ধরে নিয়ে আসলো, মিতু কি হয়েছে তোমার বলে ফেঁপে কেঁদে দিল। আল্লাহ কে ডাকলো, সবুজের পায়ে মারাত্মক ব্যাথা লাগে হাতে অতটা ক্ষতি না হলেও চামড়া চিরে যায়, পায়ের জন্য ডাক্তার ২ সপ্তাহ বিশ্রাম দেয়, এরপর সবাই কিছুক্ষন থেকে একে একে সবাই চলে যায়, মিতু সবাইকে ধন্যবাদ এবং সালাম জানিয়ে বিদায় দেয়। 


এরপর মিতু এসে সবুজ কে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে তোমার এক্সিডেন্ট করলে কিভাবে, সবুজ চুপ থাকে , কিছুই বলে না, অন্যদিকে মুখ দিয়ে আছে, মিতু কান্না করতে করতে বলে দেখো আমার খুব কষ্ট হচ্ছে , আজ সারাটাদিন আমার পেটে প্রছন্ড ব্যাথা হচ্ছিল খুব কষ্ট পেয়েছি আমি এরপর তোমাকে জানানোর জন্য কল দিলে হাসপাতাল থেকে তোমার খোজ দেয়।

বলোনা প্লিজ কি হয়েছে, সবুজ বলে, বললে বিশ্বাস করবা? তোমার ভাই আমাকে ধাক্কা দিসে, মিতু এ শুনে হতভম্ব, মিতু বলে তুমি তো অফিসে ছিলে ও তোমাকে পেলো কোথায় ? সবুজ বললো জানিনা তবে আমি আমার একটা ক্রেতার সাথে যাচ্ছিলাম মালের টাকা আনতে তখন আমি কিছুটা অনুভব করি কেউ আমাকে অনুসরন করছে, কিন্তু আমি দেখিনি কাউকে, এরই মাঝে আমি দোকানে ফেরত যাওয়ার জন্য রিক্সার অপেক্ষা করছিলাম, আর তখনি আমাকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয় এবং একটা সি এন জি আমার গায়ের উপর উঠে যায়, আমি দেখেছি গাড় নীল রঙ্গের শার্ট পরা তোমার ভাই ছিল ওইটা। মিতু বলে উঠে, অসম্ভব আমার ভাই কেন করবে এটা , ও কখনোই এমন করতে পারে না, সবুজ বলে জানি বিশ্বাস করবা না।


সেদিন রাতে সবুজ রুমে আর মিতু পাশেই চুপ করে চোখের পানি ফেলতে থাকে আর ভাবতে থাকে সবুজ কি বললো এটা ? আমার ভাই এমন করবে কেন। এ ভাবতে ভাবতে তাদের একটা দিন পার হয়ে যায়।

পরদিন মিতু তার ভাই মুন্না কে কল করে, সে ধরে না, অনেক কল করার পর মুন্না কল ব্যাক করে বলে আমি ভার্সিটিতে, বের হয়ে কল দিচ্ছি।


১ ঘন্টা পর মুন্না কল করলেই মিতুর প্রথম প্রশ্ন তুই কাল কোথায় ছিলি?, মুন্না বললো কেন বাসায়। মিতু বলে মিথ্যা বলবি না মুন্না আমি তোকে দেখেছি , আমি ভার্সিটি যাওয়ার সময় তোকে দেখেছি, মুন্না বলে কি বলিস আবোল তাবোল, তুই বললেই হলো নাকি, সত্যি বলছি আমি বাসায় ছিলাম।


কাকে না কাকে দেখে আমাকে মনে করছো। মিতু বলে তুই কি কাল কোন কাজে ঢাকা আসছিলি? মুন্না উত্তরে বলে কি আবোল তাবোল বলতেছো আমি ঢাকা যাবো কোন দুঃখে, এই না কিছুদিন আগে গিয়ে আসলাম।


কিন্তু সত্যতা কি ? মিতু কি যে বলবে আর কি জিজ্ঞেস করবে বুঝে উঠতে পারছে না, এখন হাজার হোক ভাই, সে তো আর সরাসরি জিজ্ঞেস করতে পারে না। হঠাৎ কেমন যেন গুছানো সংসার টা কালো মেঘে ঢাকা পড়লো। 

মিতু ভার্সিটি যায়না, স্বামীর যত্নে ব্যস্ত, ফাইনাল ইয়ার, সব মিলিয়ে সব এলোমেলো লাগছে মিতুর কাছে। সেদিন রাতে মিতু সব শেষ করে ঘুমাতে যায়। অনেক কাজ করে ক্লান্ত প্রায় মিতু সহসাই ঘুমিয়ে পরে। 


মিতু ঘুমিয়ে গেলেও মিতুর কান সজাগ ছিল, কারন টা স্বাভাবিক যে তার স্বামী অসুস্থ তাই ঘুম ভাল হতো না, তো মিতু ঘুমের মাঝে তার রুমে কারো হাটার শব্দ পেলো, স্বাভাবিকতই সারাদিন কাজ করে খুব ক্লান্ত তাই আবছা চোখে সে পিছন ঘুরে তাকিয়ে দেখে তার স্বামী তার পাশে নেই, সে ভয় পেয়ে উঠে বসে সবুজ সবুজ বলে ডাকতে থাকে, সে রুমের লাইট জালিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে দেখে সবুজ সোফায় বসে আছে, মিতু সবুজ কে দেখে অবাক হলো।  এই তো আজ দুপুরবেলা সবুজকে নিজ হাতে গোসল করিয়ে বিছানায় নিয়ে আসতে মিতুর খুব কষ্ট হচ্ছিল,হাটতে পারছিল না সবুজ,মিতু জিজ্ঞেস করলো এই এত রাতে তুমি এখানে কি করো? আর তুমি এখান পর্যন্ত আসছো কিভাবে? 


সবুজ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে ভালো লাগছিল না, ঘুম আসছিল না, তাই এখানে এসে বসলাম,সবুজ বলে যে তার পায়ের ব্যাথা হালকা কমেছে বিদায় সে ধরে ধরে এখানে এসে বসছে। মিতু সবুজের কথা শুনে একটু অবাক হলো, কিন্তু কিছু বললো না, মিতু সবুজ কে ধরে রুমে নিয়ে গিয়ে শুয়ে পরে।

পরদিন সকাল বেলা মিতু তার ভাইকে আবার ফোন দেয়, পাশের রুম থেকে সবুজ শুনতে পায় এবং শোর গলায় বলে এই তুমি কার সাথে কথা বলো? ফোন রাখো, তোমার আমার কেউ নেই একমাত্র আল্লাহ ছাড়া। 

মিতু লাইন কেটে দিল। মিতু শুধু ভেবেই গেল হচ্ছে টা কি তার সাথে? 


এ কয়দিনে মিতুর খাওয়া-দাওয়ার কোন ঠিক ঠিকানা নেই,ঘুমও হয়না ভালো, চেহারা খারাপ হয়ে যায়।


সবুজের এক্সিডেন্ট হলো ৭দিন হয় কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো সবুজ খুব জলদি সুস্থ হয়ে উঠলো। এ দেখে মিতু একটু খুশিই হলো।


কিছুদিন পর থেকে সবুজ পুনরায় চাকুরিতে যাওয়া শুরু করে। এবং মিতুও তার ক্লাসে যাওয়া শুরু করে, সব কিছু আগের মত স্বাভাবিক হতে থাকলো, মিতু  স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।

তবে এই ঘটনার পর থেকে সবুজ মিতুর পরিবারের কাউকে একদম সহ্য করতে পারে না।


মিতু চেও তার ভাইকে কল দেয় না একমাত্র সবুজের জন্য।

মিতুর অনেক ইচ্ছা করে তার মা বাবা কে একবার দেখতে তাদের সাথে কথা বলতে কিন্তু সবুজ বরাবরের মত এসব নিষেধ করে দেয়।


এদিকে মনমরা মিতু চুপ করে সব মেনে নেয়। এভাবে চলতে থাকে তাদের সংসার,  সবুজ অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একটা ব্যবসা ধরার কিন্ত মূলধনের অভাবে সে পারছে না, মিতু বাসায় থাকতে থাকতে অসুস্থ বোধ করছে, সবুজকে বললো চলো একদিন বের হই কিন্তু সবুজের কোন উত্তর না পেয়ে মিতু আর কথা বাড়ালো না। যদিও সবুজ পরে বলে সে ফ্রি হয়ে নিয়ে যাবে।


ইদানিং মিতু তার শরীরে কিছু উদ্ভট দাগ লক্ষ্য করলো, মনে হয় যেন কিছুর আছড় লেগেছে শরীরে, মিতু সেটা কে গুরত্ত না দিয়ে তার দৈনন্দিন জীবনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলো। কিন্তু বিপত্তি বাধলো তার দুই একদিন পর যখন মিতু সবুজের শরীরে লালচে বর্ণের দাগ দেখতে পেল, যেন কেউ সবুজ কে খুব কাছ থেকে নক দিয়ে আচড় দিয়েছে, মিতু দেরি না করে জিজ্ঞেস করলে এগুলো কিসের দাগ, মিতুর প্রশ্নে সবুজ বললো জানিনা, বাহিরে অনেক গরম, শরীর ধুলাবালিতে চুলকায়, হয়তো আমার নকের আচড় লাগছে।


 এই বলে সবুজ চলে গেল,মিতুর কিচুটা মন খারাপ হলো, সব সময়ের মত মিতু চুপ রইলো। রাতে দুজন এক সাথে ঘুমাতে এলো কিন্তু দুজন দুইপাশ হয়ে, মিতু সবুজ দুজনেই ঘুম, মাঝরাতে মিতু অনুভব করে কিছু একটা তার পা স্পর্শ করে চলে গেল, মিতুর চোখটা খুলে গেল এবং মিতু সেকেন্ডের ভেতর মাথাটা উঠিয়ে পায়ের দিকে তাকালো, দেখলো কিছুই নেই। 

একটু পর মিতু আবার ঘুমিয়ে পরলে হঠাৎ সে অনুভব করে তার হাত পা ভার হয়ে আসছে, মিতু ঘুমের ভেতর কুচকুচে কালো কিছু একটা উপস্থিতি অনুভব করলো। মিতু চিৎকার দিতে চেও পারছে না। একটু পর মিতু দেখলো সে নিঃশাস নিতে পারছে না, মিতু ঘুমের মাঝেই অনেক লাফালাফি দস্তাদস্তি করে, তার মনে হলো কেউ তার গলা চেপে ধরেছে।


 পরোক্ষনে মিতুর চোখ খুলে গেল, আর সে যেটা দেখলো তা যে কারো আত্মা কেঁপে উঠার জন্য যথেষ্ট,  সে দেখলো কালো বর্নের কিছু একটা তার বুকে ভর দিয়ে হাটু গেরে বসেছে গরগর উদ্ভট শব্দ করে কিছু পড়ছে এবং মিতুর গলা চেপে আছে, এ দেখে মিতু হতভম্ন হয়ে যায়, অনেক যুদ্ধের পর মিতু রেহাই পায় এবং কাশির সাথে বড় বড় নিশ্বাসই বলে দেয় এটি কোন স্বপ্ন ছিল না। মিতু সবুজ কে ঘুম থেকে উঠায় এবং বলে মরে যাচ্ছিলাম আমি, একটুও কি টের পাওনি? সবুজ বলে না, কি হয়েছে।মিতু ভয়ে কেঁদে দেয়। কিচ্ছু বলে না। এক প্রকার অভিমান করে বিছানা ছেড়ে উঠে চলে যায়।


বারান্দার এককোনে বসে কাঁদতে  থেকে, এর মাঝে সবুজ দুই-একবার এসেছে জানতে যে কি হয়েছে জানতে কিন্তু লাভ হয়নি।


পরদিন সকাল বেলা সবুজ মিতু কে ঘুরতে নিয়ে যাবে আজ জলদি আসবে জানিয়ে দেয়,কিন্তু মিতু তা নাকচ করে,  মিতুর পরীক্ষা আছে বলে। সবুজ কথা না বারিয়ে চাকুরীতে চলে যায়।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল, মিতু প্রতিদিনের মত কাজ শেষ করে। বিছানায়,আসে। মা কে অনেক মনে পরছে তার। সবুজও বাসায় নেই, এই সুযোগে মিতু সাহস করে কল দিয়েই ফেললো তার মাকে।

ওপাশ থেকে মায়ের গলায় হ্যালো শুনতে পেয়ে আবেগাপ্লুত মিতু সালাম দিয়ে বলে মা আমি মিতু।

মিতুর মা সালাম নিয়ে জিজ্ঞেস করে এতদিনে মনে পরছে? মিতু সাহস করতে পারেনি কল দেওয়ার এটা জানায়, এরপর মা মেয়ের টুকটাক কথা হয়। এতদিন পর মায়ের সাথে কথা বলে মিতুর মনে একটু প্রশান্তি নেমে আসে.

 আজ মিতুর মন ভাল। সে ভালো কিছু রান্না করে, এবং সবুজের আসার অপেক্ষা করে।

কিন্তু সবুজ আসে অনেক দেরিতে, তাও মিতু খুশি।  তারা একসাথে রাতের খাবার খেয়ে টিভি দেখতে বসে। রাত আনুমানিক ১ঃ৩০

তারা টিভি দেখতে দেখতে নিজেদের মাঝের অভিমান গুলো মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো, একটা সময় মিতু উঠে যা তার রুমে চুল আচড়াতে, সবুজ টিভি দেখে। 

একটু পর সবুজ দেখলো হঠাৎ মিতু সবুজের সামনে এসে দাড়ালো, সবুজ কিছুক্ষণ মিতুর দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে রইলো। পরে জিজ্ঞেস করলো এভাবে ভূতের মত চেয়ে আছো কেন?  কিছু বলবা? মিতু কিছু না বলে ধিরে ধিরে হেটে পাশের রুমে চলে যায়, সবুজ আবার টিভি দেখতে থাকে, একটু পর সবুজ মিতু কে তার সামনে দিয়ে হেটে কিচেনের দিকে যেতে দেখে, সবুজ জিজ্ঞেস করে এত রাতে কিচেনে যাচ্ছো কেন কি করবা? মিতু কিছু না বলে কিচেনে ঠুকে গেল।


১ সেকেন্ডের ভেতর পাশের রুম থেকে চুল আচঁড়াতে আচঁড়াতে মিতু দারিয়ে বললো আমাকে কিছু বললা? 


সবুজ আআআআআ বলে চিৎকার দিয়ে সোফা থেকে পরে গেল আর বার বার কিচেনের দিকে আর মিতুর দিকে চোখ বড় করে তাকাতে থাকলো।

মিতু বললো হইছে টা কি?


সবুজ বললো তুমি না কিচেনে গেলা, মিতু বললো পাগল নাকি, আমি তোমার সামনে দিয়ে রুমে গিয়ে চুল আচড়াচ্ছিলাাম। 

সবুজ এক লাফ দিয়ে কিচেনের লাইট দিয়ে দেখে কেউ নাই।


এবার সবুজ এর চোখ লালছে ছানাবড়া, অঙ্গান হবে অবস্থা।


-গল্প_এক_পরিবার

 পর্ব ৩শেষ 


হতভম্ব স্বামী কিছুটা ভয় পেতে থাকলো মিতু কে , পরদিন সবুজ সকাল বেলা না খেয়ে অফিস চলে যায়, মিতু রান্না ঘর থেকে এসে দেখে সবুজ নেই, মিতু সাথে সাথে কল দেয়, সবুজ কল ধরে বলে যে আজ তাদের শপের অনেক মালামাল আসবে সে জলদি বের হয়ে গেছে, মিতু আচ্ছা ঠিক আছে বলে ফোন রাখে আর আসার সময় কিছু বাজার নিয়ে আসতে বলে, মিতু ভাবতে থাকে ও এত ভয় পেল কি দেখে।


মিতু ঘর পরিষ্কার করে নিজে তৈরি হয়ে ভার্সিটি যাবে আর তখন মিতুর ফোনে একটা কল আসে, মিতু তারাহুড়োয় টের পায়নি। এরপর ভার্সিটিতে গিয়ে সেই নাম্বারে কল দিলে দেখে তার মা ধরেছে, মিতু মা কে বলে মা আমি বাসায় গিয়ে তোমাকে ফোন দিচ্ছি, এরপর বাসায় এসে মিতু তার মা কে কল করে, দুজন অনেক কথা বলে একটা সময় মিতুর মা মিতুকে বলে বাবা তুই যে এতবড় একটা কাজ করলি, আমাদের তুই একটা মাত্র মেয়ে। 

তোর বাবা এই ছেলের সকল খোজ নিয়েছে। এই ছেলের পরিচয় কেউই ঠিক মত জানে না, এই ছেলের সাথে খা*রাপ ছেলেদের চলাফেরা আছে। মিতু বলে মা আমি ওকে চিনি সেই কলেজ থেকে, এটা সত্যি ওর পরিবার সম্পর্কে আমিও খুব একটা জানি না তবে ও ওর এক খালার বাসায় থেকে মানুষ হয়েছে, ওর পরিবারের সাথে রাগ করে ঢাকা চলে আসছে খালার বাসায়, তোমরা যা করলা সবুজ কে নিয়ে, যাই হোক মা তোমরা তোমাদের মেয়ের খুশি চাইলে ওকে মেনে নিতা। এটা আমার দূর্ভাগ্য যে আমি আমার শ্বশুড়বাড়ি ও পেলাম না আমার পরিবারকেও পেলাম না।


মিতুর মা একটা বড় নিশ্বাস ফেলে বলে, দেখ মা তুই আমাদের আদরের মেয়ে তোর বাবা একটু শক্ত মনের মানুষ ঠিকই কিন্তু সে তোকে যথেষ্ট ভালোবাসে, উত্তরে মিতু বলে সে যদি আমাকে ভালোবাসতই তাহলে সবুজের সাথে এত দূরব্যবহার করলো কেন, মিতুর মায়ের মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল, আরে তোর বাবার এত সময় কোথায় সবুজের ভাল খা*রাপ বের করার , সেটা তো মুন্না প্রতিদিন সবুজের কুকী*র্তি তোর বাবার কানে এসে বলে আর এতেই তোর বাবা ক্ষেপে যায়। আর সেও সবুজ এর টুকটাক খোজ নিয়ে কিছু না পেয়ে সে এই সম্পর্কে রাজি হয়নি।


অবশেষে মিতু জানলো যে এর পিছনে মিতুর ছোটভাই মুন্নার হাত আছে। মিতুর মা মিতুকে বলে তুই আবার মুন্না কে এসব নিয়ে বলতে যাস না। ও এমনিতেই ঘরে অসান্তি লাগিয়ে রাখছে। 

মিতু বলে কি করতেছে ও, মিতুর মা বলে ওর পড়াশুনা এখনো শেষ হয়নি কিন্তু বিসনেস করবে বলে তোর বাবাকে অনেক চাপ দিয়ে ১০ লাখ টাকা নিয়ে কি করছে আল্লাহ জানে কোন খবর নাই। এখন আবার টাকা চায়, ঘরে অশান্তি লাগিয়ে রাখে, টাকা নাই বললে বলে তোর নামে জমি টা বিক্রি করে দিতে। 


এতদিনে মিতুর মনে আসলো যে মিতুর দাদি মৃ*ত্যুর আগে মিতুর জন্য বেশকিছু জমি লিখে দিয়ে যায়, মিতুর একটা মাত্র চাচা , মিতুর বাবা বড়, আর মিতুর চাচা মিতুর জন্মের কিছুদিন বাদেই হ্রদ*রো*গে আক্রান্ত হয়ে অল্প বয়সে মা*রা যায়। মিতুর দাদি অনেক শোকাহত মনে তার ছেলের জন্য খুব কান্না করে।


 তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন মিতুর দাদির নামে যে জমি আছে অবশিষ্ট , তা তিনি তার নাতনি মিতুর নামে লিখে দিবেন, প্রথমে মিতুর বাবা তার নামে দিতে চাপ দিলেও পরে মেয়ের নামে দিতে সম্মতি দেন। 


মিতুর দাদির কথা হলো তোর যথেষ্ঠ আছে, তোর আরও ছেলে মেয়ে হলে তাদের দিয়ে শেষ হবে না, কিন্তু আমি আমার ভাগের এই জমি খুশিমনে আমার নাতনির নামে দিয়ে যেতে চাই।

এবং তিনি তাই করেন।

মিতু তার দাদি কে দেখতে পায়নি, জিজ্ঞেস করে মা দাদি দেখতে কেমন ছিল? দাদির কবরটা অনেক বছর দেখতে যাই না।


এরপর আসলো মুন্নার কথা , মিতু বলে ওর এতবড় সাহস কি করে হয় ও আমার নামের জমি নিজে নিবে? ওরে সাবধান কর মা, আর শোন মা তোমাকে একটা কথা বলতাম তুমি আপাতত কাউকে বলো না।


কিছুদিন আগে সবুজ মা*রাত্তক এক্সি*ডেন্ট করছে, এখন সবুজ বলতেছে মুন্না নাকি সবুজ কে ধাক্কা দিসে, মিতুর মা অবাক হয়ে বলে কি বলিস এগুলা মুন্না কেন সবুজ কে ধাক্কা দিতে যাবে? মিতু বলে জানিনা মা কি সত্য কি মিথ্যা তবে তুমি একটু মুন্না কে দেখে রাইখো।


মিতুর মা বলে ও তোর এই জমি নিয়ে উঠে পরে লাগছে, আমি অনেক করে বলছি তোর বাপের যা আছে তা তো তরই, আমার মেয়ের এই জমি নিয়া লেগে আছিস ক্যান, মুন্না বলে দাদির জমিতে হক আমারো আছে।


মিতু বলে সময় করে আমি আমার জমির দলিল তোমার থেকে নিয়ে নিব। মুন্না যে এত বেয়াদব হবে জানতাম না মা।


তুমি আমার দলিল আমাকে দিয়ে দিও। এই বলে মা মেয়ের কথা শেষ হয়।


রাতে সবুজ আসে, হাত খালি , মিতু জিজ্ঞেস করে বাজার কই? সবুজ বলে কয়টা বাজে দেখছো? অনেক কাজের চাপে ছিলাম , বাজারের কথা মনে নাই।

রাতে খেতে বসছে, ডিম ভাজা, ডাল আর আলু ভর্তা, সবুজ যাই খায় লবন ছাড়া, জিজ্ঞেস করতেই লবন শেষ , সবই তো শেষ, বাজার তো আনলা না এখন খাও লবন ছাড়া।


সবুজ মিতুকে বলে, মাঝে মাঝে তুমিও তো বাজার করতে পারো, মিতু বলে ঠিক আছে টাকা দিও।

মিতু এখন টুকটাক কথার জবাব দেয়।


রাতে মিতু এবং সবুজ ঘুমাতে যায় এবং সবুজ মিতুকে বলে ৫-১০ লাখ টাকা হলে একটা ব্যবসা দিতাম, এখন অন্যের শপে কাজ করে কতই বা কামাই। মিতু বলে শুরুতেই এত টাকা? আমরা ছোট করে শুরু করি, সবুজ বলে ও তুমি কি বুঝো ব্যবসার। 


এ বলে তারা ঘুমের প্রস্তুতি নিল। মাঝরাতে সবুজ হঠাৎ চিৎকার দিয়ে উঠে বসলো, মিতু লাইট জালিয়ে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছি, সবুজ বলে আমি কিছুদিন যাবৎ ঘরে কিছু একটার উপস্থিতি অনুভব করি। এখন মনে হলো কেউ আমার মুখের সামনে এসে উষ্ম নিশ্বাস ছাড়ছে। মিতু বলে আমরা দুজন কাজে কর্মে এত ব্যস্ত হয়ে পড়ছি যে নামাজ কালাম ও ভুলে গিয়েছি। কাল থেকে তুমি আমি নামাজ আবার নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করবো। এখন ঘুম দাও এটা বাজে সপ্ন ছিল।


এরপর তারা ঘুমিয়ে পরে, ঠিক ৪ টা কিছুক্ষন আগে কু*কুরের হালছাড়া ঘেউ ঘেউ শব্দে মিতুর আবার ঘুম ভাঙ্গে অবশ্য আরেকটা কারন হচ্ছে মিতুর শরীরে চর্মরো*গ কিছু একটা , অনেক চুলকায় আর এতে ওর ঘুম ভেজ্ঞে যায়।


পানির তেষ্টা পায় সে পানি খেতে বিছানা ছেড়ে উঠে, দরজার দিকে তাকিয়ে বের হবে ঠিক তখনি সে লক্ষ্য করে একটা ছায়া ঘরের একদিক থেকে অন্য দিকে চলে গেল,মিতু হিচকি দিয়ে উঠলো চোর ভেবে। মিতু সবুজ কে ধাক্কা দিয়ে উঠালো।


সবুজ উঠো, বাসায় মনে হয় চোর আসছে আমি ছায়া দেখছি।

সবুজ লাফ মেরে উঠে, এবং একটু একটু করে এগিয়ে গিয়ে পুরো বাসার লাইট জ্বালিয়ে খোজ করেও সে পায় না। একটা সময় সবুজ বলে কেউ নেই এই বলে ঘুমাতে যায়, আর তখন মিতুর শরিরের দিকে নজর যায়।


 সবুজ দেখে লালচে দাগ হয়ে আছে, সবুজ বলে তোমার তো দেখি এলার্জি বারছে, কাল ওষুধ এনে দিব।

পরদিন সকালে সবুজ মিতু কে বলে একটা ব্যবসা ধরি কিছু টাকা ব্যবস্থা করতে পারো কিনা দেখো, মিতু বলে আমি কই পাবো। পরিবারের সাথে তো সম্পর্কই শেষ করেদিলাম এই সম্পর্ক টিকানোর জন্য।

সবুজ কিছু না বলে চলে গেল, মিতু চিন্তা করলো কি হবে সামনে ।

মিতু তার মা কে কল করে , তার মায়ের সাথে কথা বলে জানতে পারে মুন্না কেমন পা*গল পা*গল ব্যবহার করছে ওকে টাকা দিতেই হবে।

মিতুর মা বলে তুই তোর দলিল টা নেওয়ার ব্যবস্থা কর, মায়ের সাথে কথা বলা অবস্থায় মুন্নার কল ঢুকে, মিতু মা কে বলে মা মুন্না কল করছে দেখি কি বলে, এই বলে মুন্নার কল ধরে , মুন্না বলে, আমি কি এ ঘরের ছে*লে না, সবাই কেন তরে নিয়া পরে থাকে ।


আমি বিসনেস করমু টাকা চাই টাকা দেয়না,মিতু বলে তোকে তো বাবা ১০ লাখ টাকা দিসে সেটা কি করলি, মুন্না বলে আমার বাপের টাকা আমি কি করমু সেটা তোরে হিসাব দিমু ক্যান, তুই তো দাদির জমি পাইছস এখন বাবা কে বল তার কিছু জমি বিক্রি করে টাকা দিতে নয়তো তোর জমি দে আমারে। 


মিতু বলে থা*প্পর খাবি আমার জমির উপর পরছিস ক্যান, আর আমি অনেক আগেই তোদের পরিবার ছেড়ে আসছি আর তুই যে কতবড় বে*য়াদ*প আমি তো সব জানি। একটাকাও পাবি না তুই, জমির কথা তো ভুলেই যা এই বলে মিতু লাইন কে*টে দেয়। মিতু সময় করে মিতুর মা কে কল করে বলে আমি যত দ্রুত সম্ভব আমার দলিল নিয়ে আসবো।


মিতু সবুজ কে সময় করে জানায় যে তার একটা কাজে বাড়িতে যাওয়া প্রযোজন , সবুজ বলে কি জন্য, মিতু বলে মনে আছে তোমার কলেজে থাকতে একবার বলেছিলাম দাদি আমার জন্য ৩০-৪০ বিঘা জমি রেখে গিয়েছে?তো দাদির দেওয়া জমির দলিল টা নিয়ে আসবে যাবো।


মুন্না একটু ঝামেলা করছে। সবুজ বলে ও হ্যা মনে আছে, হুট করে সবুজ বলে উঠে,চলো নিয়ে আসি , ভালই হবে তারপর সেটা থেকে কিছু জমি বিক্রি করে আমরা একটা বড় করে ব্যবসা দেই। 

মিতু হতবাক, কি বললা তুমি? এখনো জমিটার কাগজ হাতে পাইনি আর তুমি বিক্রির কথা তুলতেছো। 

মিতু সেখান থেকে মন খা*রাপ করে উঠে চলে আসলো, ওর কাছে অনেক খা*রাপ লাগলো, ও দেখলো সবাই ওর চেয়ে ওর জমির উপরেই নজর।

 যাকে ভালোবেসে জিবন সঙ্গী বানালো সেও তাকে বুজলো না, অবশ্য মিতুর চিন্তায় ছিল সুযোগ পেলে সবুজ কে সহযোগিতা করার কিন্তু হুটহাট সবুজের এমন কথা মিতু নিতে পারেনি।


এর মাঝে তাদের সাথে প্যারনর*মাল কিছু তো হয়েই যাচ্ছে।


মানে সব মিলিয়ে মিতু একটা বেড়াজালে পরেছে।

একদিন দুপুরবেলা মিতু রান্না ঘরে রান্না করছিল, সবুজের একটা বুয়া ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা থাকলেও কাজের চাপে বা ভুলে তা আর হয়নি।

মিতু কাজ করতে করতে একটা সময় সে রান্না ঘরে ঢুকবে ঠিক তখনি কেউ যেন মিতু কে ধাক্কা দেয় আর মিতু রান্না ঘরের মেঝেতে স্লিপ খেয়ে পরে যায়। এবং পায়ে ও কোমড়ে ভিশন ব্যাথা পায়।

মিতুর উপর যেন বিপদ কা*টছেই না। 


মিতুর চিৎকার কে শোনে , পরে মিতু অনেকক্ষন মেঝেতে শুয়ে থেকে একটু একটু করে টিভির রুমের দিকে অনেক কষ্টে এগিয়ে গিয়ে ফোন করে সবুজ কে এবং তাকে বাসায় আসতে বলে, সবুজ ডাক্তার নিয়ে বাসায় চলে আসে।জরুরী ভিত্তিতে মিতুকে হাসপাতালে নেওয়া হয় , ডাক্তার প্লা*স্টার করিয়ে দেয়।মিতু কে বিশ্রাম দেওয়া হয়।


বাসায় এসেই মিতু তার মাকে কল করে, কল ধরতেই মিতু কান্না করে দেয়। এবং তার মাকে সব বলে যে নতুন জীবনে আসার পর থেকে সে খুব কষ্ট করছে। একের পর এক বিপদ এসেই যাচ্ছে। 


মিতুর মা মেয়ের কষ্ট শুনে তিনি বলেন তোমরা বেশি বেশি আল্লাহ কে ডাকো, নামাজ পড়ো, কারো নজর লাগছে হয়তো, আমার পরিচিত এক হুজুর আছে আমি দেখি ওনার কাছে গিয়ে তোমার জন্য কিছু ঝাড়ফুক ব্যবস্থা করবো।


কথায় কথায় মিতুর ঘরে ঘটে যাওয়া চোটখাটো বিষয়গুলো মিতু শেয়ার করতে থাকে, মিতু বলতে থাকে যে শুরু থেকে তার সাথে কি কি হয়েছে, মিতু এও বলে দেয় যে, যেদিন মুন্না যায় সেদিন তার ঘরে কিছু জিনিস উলট পালট পায়, এর কিছুদিন পর থেকে তো জায়গার জিনিস জায়গায় থাকে না, মিতু ভয়ানক সপ্ন দেখে, ছায়া দেখে, আরো অনেক কিছু । তারপর জিনিস হারিয়ে যায়। 

মিতুর মা বলে কি কি হারিয়েছে?


সড়ল মনে মিতু বলে দেয় মুন্না যেদিন যাবে সেদিনই আমার একটা চায়ের কাপ পাইনা, আবার আমার চিরুনি তে সব সময় চুল লেগে থাকে মা তুমি তো জানই, সেদিন দেখি চিরুনি পরিষ্কার। তারপর কাপড় রাখি এক জায়গায় থাকে আরেক জায়গায়। এমন অনেক কিছু হয় এই বাসায় মা।


মা বাকি সব বাদ, মুন্না যেদিন যায় সেদিনি চুল আর কাপ হাওয়া এই বিষয় টা মায়ের মনে বাধে। মা মিতু কে বলে তোর ঠিকানা টা দিস আমি তোর বাবার সাথে কথা বলি, তুই অসুস্থ শুনে যদি একটু রাগ ভাংগে তবে তাকে নিয়ে আসবো। আর তুই আপাতত নিজের খেয়াল রাখ মা।


মুন্নার মা্য়ের বুঝতে একটুও দেরি হলো না যে এসব মুন্নার কাজ, কারন মুন্নার পরিবার টুকটাক ঝা*ড়ফুক- যা*দুটোনায় বিশ্বাসি, এমনকি মুন্নার মা বেশ কিছুদিন হুজুরের কাছে যাওয়ার সময় মুন্না কে সাথে করে নিয়ে যায়। 

মুন্নার মা আর দেরি না করে হুজুরের সাথে দেখা করেন। হুজুর লক্ষন গুলো শুনে বুঝে ফেলেন যে হ্যা এখানে কুফড়ি কালামের ব্যবহার করা হয়েছে। দেখার বিষয় কারো নামে বান মা*রা হয়েছে কিনা, বান মা*রলে মৃ*ত্যু অবধারিত, আর যেহেতু এটা অনেকদিন যাবৎ হয়ে আসছে এবং জীবন না*শের চেষ্টা করা হয়েছে সেহেতু, একটু ভয় ঢুকেছে মুন্নার মায়ের মনে।

মুন্নার মা হুজুরকে বলেন তাদের মেয়েকে নিয়ে আসা সম্ভব না সে গুরুতর অসুস্থ, এবং এ ও জানান যে তাদের মেয়ের জামাইও এসবে আ*ক্রান্ত। 


এরপর হুজুর বলেন দূর থেকে কিছু তেমন একটা করা সম্ভব না তবে কিছু জিনিস দিতে পারি আপনি আপনার মেয়েকে দিবেন ব্যবহার করতে। এদিকে একদিন রাতে মিতু ঘুমাচ্ছিল ঘুমের ওষুধ খেয়ে। সবুজ ঘরে তালা দিয়ে একটা চাবি পাশের বাসায় আরেকটা নিজের সাথে নিয়ে যায়, পাশের বাসার মানুষগুলো ভাল, তারা মিতুর এই দূর্দিনে তাদের সামর্থ অনুযায়ি সহযেগিতা করেছে।


তো মিতু ঘুমানো অবস্থায় রান্না ঘরে বাসন-কোসন পরার ঝনঝন আওয়াজ শুনতে পায়, ঘুমের ওষুধ খাওয়া মিতু হালকা চোখ খুলে দেখে , ভেবেছে সবুজ আসছে। কিন্তু সবুজ ছিলনা।


তার কিছুক্ষন পর মিতু পুরো ঘরে পো*ড়া উদ্ভট গন্ধ নাকে পায়, মিতু বমি করবে অবস্থা, অসুস্থ মিতুর পাশে কেউ নেই । চোখ থেকে মনের অজান্তে পানি ঝরছিল । এমন সময়ে প্রিয় মানুষটাও পাশে নেই।

কে দেখবে ওর কষ্ট।

মিতু বুঝতে পারছিল এটা স্বাভাবিক কিছু না আর ঘরে কিছুর উপস্থিতি থাকলেই মিতুর শরীর ভার হয়ে উঠে। এই দিন টা মিতুর কাছে জাহান্নামের চেও কম ছিল না।


পরে সবুজ আসে , মিতু সবুজকে শুধু একটা কথাই বলে, আজ তোমার এই হাল হলে আমি কি পারতাম তোমাকে তালা মেরে চলে যেতে?

শুধু নিজের বিবেক কে একটু জিজ্ঞেস করো বলে মুখ ফিরিয়ে নেয়।


এদিকে মুন্নার মা পুরোপুরি নিশ্চিত পা*গল মুন্না টাকার লোভে বোন এবং বোনের জামাইয়ের উপর কুফরি কালাম করেছে।


মিতুর মা মিতুকে কল করে, মিতু ধরলে বলে, মারে মনে হয় তোদের উপর কেউ কুফরি কালাম করছে। তোর ভাই তোরে কল দিলে ধরিস না। 

আমি হুজুর থেকে কিছু জিনিস নিছি। আমি আসতেছি তোর বাবাকে নিয়ে। মিতু একটু মনে শান্তি পেলো।


পরদিন সবুজ মিতুর পরিবার আসার কথা শুনে ক্ষেপে গেল এবং পুরানা ইতিহাস তুলে ধরলো। মিতু একটা কথা বলেই চুপ হয়ে গেল তা হলো তারা আমার বাবা মা , আমি এ*ক্সি*ডেন্ট করছি শুনে তারা আসতেছে। আর কিছুই না।


 সবুজ মাথা গরম অবস্থায় বলে তারা কি দলিল নিয়ে আসবে? আমার টাকা লাগবে তুমি তোমার পরিবার কে বলো কিছু টাকা ব্যবস্থা করতে আমি আবার দিয়ে দিব।

মিতু চুপ।

মিতুর পরিবার ২-৩ দিন পর আসে, মেয়ের এই হাল দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পরে। বুঝে উঠতে পারে না তারা কি বলবে কি করবে। মিতুর মা মিতুর সংঙ্গে থেকে গেল।


 মিতুর বাবা একদিন থেকে চলে গেল, তার ব্যবসা আছে। মিতুর মা সবুজকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করলো। তোমরা প্রেম করে বিয়ে করেছো আমার একমাত্র আদরের মেয়ে কে আমার থেকে নিয়ে গিয়েছো , আজকে এত অবহেলা কেন। খাওয়াতে যখন পারবে না তখন বিয়ে করলে কেন? আর তোমার এত বড় সাহস হয় কই থেকে আমার মেয়ের জমি নিয়ে কথা বলার?

 

সবুজ চুপ... কিছুক্ষন পর সবুজ ঘর ছেড়ে বের হয়ে যা্য়। আসলে মিতুর বুজতে দেরি হয়ে গেছে যে সবুজে ভাল মানুষ না।

মিতু তার মা কে বলে আমি মনে হয় মা ভুল করেছি। ওর সংসারে আসার পর থেকে অভাব ছাড়া কিছুই পেলাম না, বাচ্চা যে নিবো সেই ভরসা টাও পেলাম না, তবুও আমি বাচ্চা নিতে চাইছি, কিন্তু ও বলে আগে প্রতিষ্ঠিত হই। এখন তো মা আমার মনই উঠে গেছে ওর উপর, আস্থাই পাই না।


কথায় কথায় মুন্না কে নিয়ে মা বলে , মা*রে তুই যাওয়ার পর থেকে জানি না ছেলেটার কি হলো, ২-৩ দিনের জন্য ঘরের বাইরে চলে যায়, কাউকে কিচ্ছু বলে না, তোর বাবার বয়স হইছে কত বলছে, তার ব্যবসায় সময় দিতে, কিন্তু মুন্না কোন পাত্তাই দেয়নি। 


আর মুন্নার মা বলে আমি নিশ্চিত মুন্না তোদের উপর কু*ফরি কালাম করছে।

মিতু বলে আমার ভাই ও ,ওরে এত আদর করি। ভাই হয়ে বড় বোনের সাথে এমন করবে,ভাবিনি মা।


পরদিন সকাল বেলা মিতুর মা সবুজ কে পাশে বসিয়ে সরল মনে  বলে বাবা আমি তোমার মায়ের মত, মেয়ের এই  অবস্থা দেখে আমার কলিজায় লাগছে, বাবা তোমাকে রাগের মাথায় অনেক ভুলভাল বলে ফেলছি কিছু মনে নিও না বলে মুন্নাকে দোয়া দেয়।


এরই মাঝে মিতুর মা মিতুর সংসার চলে কিভাবে জিজ্ঞেস করে , তখন মিতু বলে ও ছোট একটা চা*কুরি করে আর আমি মাঝে মাঝে সেলাই করে কিছু টাকা পাই। এই দিয়ে কোনরকম চলে। 

সাথে সাথে মিতুর মা বলে মিতু তোর  দাদির জমি তে চাষিদের বর্গা দেওয়া, প্রতি মাসেটাকার  একটা অংশ তোর ভাই পায়।  তোর এখন কষ্টে দিন যাচ্ছে, ওই টাকা টা তুই নে , তোর হক আছে। মিতু রাজি হলো। 


বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর মিতু এখন অনেক টা সুস্থ, স্টিক ব্যবহার করে হাটে, হুজুরের দেওয়া এগুলো ব্যবহার করে হালকা ভাল অনুভব করছে।


মিতু সবুজ কে বললো আমার জমি থেকে কিছু লাভ আসে যা প্রতি মাসে আমি হাতে পাবো , সেটা সংসারের কাজে লেগে যাবে। সবুজ উঠে বললো এত কিছু না করে তোমার পরিবার আমাকে একটা ব্যবসা ধরিয়ে দিলেই তো পারে। মিতু বললো আমার পরিবারের উপর পরে আছো কেন? নিজে আগে কিছু করে দেখাও। এ নিয়ে জগড়া হয়। এসব আবার মিতুর মা শোনে, পরে মিতুর মা বাড়িতে গিয়ে তার বাবাকে সব খুলে বলে , তিনি মিতুর স্বামীকে সহযোগিতা করতে রাজি হয়।


এদিকে


বিপত্তি বাধলো যখন মুন্না এটা জানতে পারলো, যে তার জমি থেকে পাওয়া টাকা এখন মিতু নিবে।সে এটা কখনোই হতে দিবে না। 

রাগে ঘর ভাংচুর করে,  এত বছর সে লাভ খেয়ে আসতেছে আর এখন এটা সে পাবে না মিতু পাবে। এটা সে হতেই দিবে না। 

 মুন্নার কথা তোমরা সব সময় তোমাদের মেয়েকে ভালোবাসছো।..


এরপর মিতুর মা মিতুকে কল দিল, দিয়ে মুন্নার সব কু*কৃর্তি কাদঁতে কাঁদতে বললো।

মিতু সবুজের সাথে বাড়িতে যাওয়ার ব্যাপার্ আলাপ করলো , সবুজ বললো তোমার এই অবস্থায় কিভাবে। সবুজ সাই দিল না।


মিতু বাধ্য করে সবুজ কে নিয়ে মিতুর বাসায় আসলো। সবুজ বাসায় দিয়ে এক মূহুর্ত থাকলো না, চা*কুরী আছে বলে চলে গেল।

এরপর বাসায় এসে মুন্নার সাথে অনেক জগড়া হলো, মিতু এক পর্যায় বলেই দিল তুই কত খা*রাপ হলে আমার জামাইর উপর হা*মলা করিস, একথা শুনে মুন্নার তো মাথা আর গরম হয়ে যায়, মুন্না এমন করেনি বলে অনেক জগড়া করে।

 পরে মিতু চুপ হয়ে যায়।

এদিকে সুযোগ বুঝে মিতুর মা ওই হুজুর কে বাসায় ডেকে আনে, হুজুর মিতুর উপর ঝারফুক করে এবং হুজুর কিছু ব্যাপার শেয়ার তরে, প্রথমত মিতুর উপর খা*রাপ জ্বীন চালিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং এই জ্বীন গুলো সময়ের সাথে সাথে হিং*শ্র এবং আক্র*মনা*ত্বক হয়ে উঠে, কে করেছে বললে হুজুর বলে যেই করেছে সে আপনাদের খুব ভাল করে চিনে তাই শক্ত করেই যাদুটোনা করেছে। 

হুজুর বলে এটা এত সহজে যাবে না তবে আমি কিছু আমল করে দিব এটা নিয়ম মেনে পালন করলে ও আপনাদের ক্ষতি করতে পারবে না। তবে এত সহজে এ যাবে না বলে দিলাম। আর আপনাকে এবং আপনার স্বামীকে সাবধান থাকতে হবে।


মুতুর পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল। নিজ পরিবার লোভে পরে কতবড় বিপদে ফেলল মিতুকে।


মিতু শারিরিক,মানুষিক ও মনের দিক দিয়েও অনেক টা ভে*ঙ্গে পরলো।

বাসায় এসে খা*রাপ মন নিয়ে কল দিল সবুজ কে।

দুটো ভাল কথাশোনার জায়গায় তাকে শুনতে হলো , টাকা পয়সার ব্যাপারে কথা বলছিলা তোমার মা বাবার সাথে?

এবার মিতু আর তার নিজেকে আটকাতে পারলো না।


সে বললো তুমি কি আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করছো নাকি টাকার গাছকে, তোমাকে বিয়ে করার পর থেকে অভাব, অবহেলা , কষ্ট ছাড়া কিছুই পাইনি। 


তাও ভালোবাসি বলে মুখ বুজে সহ্য করেছি। তোমরা সবাই এক, স্বার্থপর বলে মিতু ফোন কে*টে দেয় আর অধর নয়নে কাঁদতে থাকে। 


পরদিন মিতু তার বাবার বাড়ি থেকে একাই ঢাকার উদ্দেশ্যে রউনা দেয়।  বাসায় ফিরে মিতু সরাসরি সবুজের সাথে কথা বলে, বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে, মিতু একটা পর্যায় সবুজ কে শক্ত করে প্রশ্ন করে যে আমার ভাই তোমাকে ধাক্কা দিয়েছিল কিনা, সবুজ বলে হ্যা ও করেছে, মিতু কান্না জড়িত কন্ঠে আর কঠোর ভাবে সবুজ কে নানান ক*সম কাটিয়ে বলে সত্য বলতে একটা সময় সবুজ শিকার করে যে এমন কিছুই মুন্না করেনি। 


সবুজ চায় না মিতুর সাথে তার পরিবারের সম্পর্ক থাকুক।

কেন চাওনি ? এই ভয়ে? যে যদি আমার নামের লেখা জমি তোমার হাতছাড়া হয়ে যায়।

তুমি তো আমাকে বিয়ে করছো ভালোবেসে না । আমার সম্পদের লোভে, যখন দেখছো পরিবারের সাথে সম্পর্ক খা*রাপ হয়ে গেছে তখন তুমি বেকায়দায় পরে গেছো, কিন্তু তোমার সাথে আমার দাদির দেওয়া জমির আলাপ করেছিলাম আমার এখন মনে পরেছে। এসবই তোমার মাথায় ঘুরছিল, তাই আমি এত অবহেলিত।

 না আমি পরিবার পেলাম, না স্বামী।


তোমাদের কাউকে লাগবে না আমার, এই বলে মিতু বাসা ছেড়ে দেয়, বেশ অনেক দিন মিতু তার পরিচিত একজনের বাসায় থাকে, সেখান থেকে সে তার বাড়িতে যায়, এবং সিদ্ধান্ত নেয় সবুজের সাথে বিবাহ বিচ্ছে*দের, এবং পরিবার থেকেও দূরে থাকার। সে একা থাকবে।


এরই মাঝে বেশ কিছু মাস পার হয়ে যায়, মিতু দাদির জমির কিছু অংশ বিক্রি করে ঘর তোলে, সে সবুজ কে সংসার করবে না বলে না করে, তা*লাক দিতে বলে, সবুজ দিতে অসম্মতি জানালে মিতু নিজে দেয়। 


এবং আজ মিতু মুক্ত, যদিও হুজুরের দেওয়া ওষুদের উপর চলতে হয় তাকে, কিন্তু ফেলে আসা কষ্টের জীবনের চেও অনেক ভাল আছে।


এরই মাঝে মিতুর ভাই যদিও অনেক সমস্যা করার চেষ্টা করে কিন্তু মিতু এলাকার গনমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা নিয়ে মুন্নাকে থামাতে সক্ষম হয়। মিতু আর বিয়ে করবে না, ১ বছর গ্যাপ দিয়ে সে পড়াশুনা শেষ করে এখন চা*কুরী করছে, ভাল আছে এখন মেয়েটা।


ঘটনাটি সত্য, কিন্তু ঘটনার মান বজায় রাখতে লেখায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি ফেনির ছাগলনাইয়ার গঠনা।


কিছু কথা.... সবাই মনোযোগ দিয়ে ঘটনাটি পড়লে এ থেকে অনেক কিছু শিখা এবং শিক্ষা পাওয়া যাবে।


সমাজে এমন অহরহ হচ্ছে, বিশ্বাসের ঘর আজ অবিশ্বাসের পাহাড় সমান রূপধারন করেছে। আপনি কাকে বিশ্বাস করবেন?

তাই দুনিয়াতে যে কয়দিন বাঁ*চেন, নিজের জন্য বাঁ*চুন, কিছু করার আগে ভাবুন , অনেক ভাবুন, নিজেকে অনেক সময় দিন, কারন আজ যা হারাবেন কাল তা ফিরে পাবেন না। ধন্যবাদ।


বাস্তব জীবনের গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post