অবহেলার কষ্টের গল্প | অবহেলার কষ্টের স্ট্যাটাস

 কষ্টের ভালোবাসার গল্প

কষ্টের ভালোবাসার গল্প

-রু/ম/ডেট করতে এসেছি আমার প্রেমিকা মিতুর সাথে, একটা হোটেল রুম ভাঁড়া নিয়েছি। 

মিতু কিছুটা ভয় পেয়ে আমাকে বলল, রাকিব আমার কাছের বান্ধবিদের কাছে শুনেছি প্রথমবার নাকি অনেক কষ্ট হয়। তাই বলছি বিয়ের আগে এসব না করলে হয়না।

আমি মিতুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,

- দেখো সোনা তোমার কোনো কষ্ট হবেনা, আমি তোমাকে কষ্ট দিতে পারি।

-- আমরা কবে বিয়ে করছি রাকিব?

- এইতো সোনা আর দুই মাস পর, চাকরির ইন্টারভিউ বেশ কয়েকটা দিলাম, তবে এটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। 

চাকরিটা পেয়ে গেলেই দুই মাসের মধ্যেই আমি তোমাকে বিয়ে করবো। এই বলে আমি মিতুর ঘাড়ে কিস করতেই মিতু কেপে উঠল,

মিতু আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল আমাকে,

- আমি আস্তে আস্তে মিতুর সব কাপড় খুলে ফেলাম, মিতু খুব লজ্জা পেয়ে ওড়না দিয়ে তার শরীর ঢাকার চেষ্টা করছে।

আমি আমার কাপড় খুলে মিতুর শরীর থেকে ওড়নাটা সরিয়ে ফেললাম, অতঃপর মিতুর উপরে ঝাপিয়ে পড়লাম হিং/স্র প/শু/র মতো।

- রাকিব আর কতক্ষন, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।

-- এইতো জান হয়ে গেছে আরেকটু ধৈর্য ধরো।

- আহা রাকিব আমার লাগছে খুব...

.

সবশেষে বিছানায় শুয়ে আছি মিতু আমার বুকের উপর। 

আমি মিতুর বুকে হাত বুলাতে বুলাতে মিতুর ঠোটে একটা কিস করলাম।

মিতু অনেকটা বিরক্ত হয়ে উঠে জামা কাপড় পড়ে নিল, আমিও উঠে কাপর পড়ে নিলাম।

- হোটেল রুম থেকে বের হয়ে মিতুকে একটা রিক্সায় উঠিয়ে দিলাম, মিতুর চোখে পানি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছালো কিন্তু সেদিকে আমার কোন খেয়াল নেই।

-আমি একটা ঢং দোকানে বসে এক কাপ চা আর একটা সিগারেট খাচ্ছি।

মিতুর সাথে রুম ডে/ট করতে পারায় খুশিতে যেন বুকটা চারচার হয়ে আছে।

-আমি রকিব, এইতো সবেমাত্র অনার্সে উঠলাম। আর মিতু ইন্টার ২য় বর্ষের ছাত্রী, ছাত্রী হিসেবে যেমন ভালো দেখতেও খুব সুন্দর।

কলেজের প্রতিটা ছেলেই মিতুর জন্য পাগল, তেমন বড়লোক না মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে মিতু।

অনেক ছেলেই মিতুকে প্রপোজ করেছিল কিন্তু সে কাউকেই পাত্তা দেয়না। 

.

-একদিন বন্ধুদের সাথে চ্যালেন্জ করি মিতুকে পটানোর, এবং আমি চ্যালান্জে জিতে যাই।

মিতু বাইরের গোল চশমা পড়া রাকিবকে ভালোবেসেছে, কিন্তু ভিতরের রাকিব সম্পর্কে মিতুর একটুও ধারনা নেই।

- মিতুর সাথে রুমডেট করার ইচ্ছা ছিলো, আর আজ সেটাও করে ফেললাম,

হটাৎ ফোনের রিংটান বেজে ওঠায় ফোনটা বের করে হাতে নিয়ে দেখি মিতু ফোন করেছে,

মিতু ফোন করায় কেমন যেন বিরক্তবোধ হতে লাগল, তাই ফোন কেটে দিলাম।

আমার যেটা দরকার ছিলো আমি সেটা পেয়ে গেছি, মিতুর থেকে আরো কতো ভালো মেয়ে আমি পাবো।

-এদিকে মিতু বারবার ফোন দিয়েই যাচ্ছে তাই রাগ করে ফোন রিসিভ করলাম,

- দেখতেইতো পাচ্ছ ফোন কেটে দিচ্ছি, তারপরেও বারবার ফোন দিচ্ছো কেন?

-- কি হয়েছে রাকিব তোমার তুমি এরকম করছো কেন?

- কই কিছু হয়নি তো, (মিতুর সাথে আরেকবার রুমডেট করতে হবে তাই ভালোভাবে কথা বলতে হবে।)

-- তহলে তুমি তো এরকম ছিলেনা, যতোই ব্যাস্ত থাকনা কেন একবার কল দিলেই রিসিভ করতা।

- আসলে চাকরির জন্য প্রয়োজনিয় কিছু কাগজ পত্র জমা দিতে গেছিলামতো তাই রিসভ করতে পারিনি, আচ্ছা আর এরকম হবেনা এই যে কান ধরছি। 

-- আচ্ছা ঠিক আছে

- আর সোনো তুমি কি পিল খেয়েছো?

-- হু খেয়েছি

- হু ভালো করেছো, আচ্ছা এখন রাখি পরে কথা বলবো, চাকরির জন্য কিছু কাগজ জগার করতে হবে, বাই।

-- ঠিক আছে, বাই।

.

কিছুদিন পর ফোন দিয়ে আরকেবার রুমডেট করার জন্য মিতুকে বললাম, মিতু কিছুতেই রাজি হচ্ছেনা। 

- প্লীজ মিতু শুধু আর একবার,

-- না রাকিব বিয়ের আগে আর একবারো না, অমার খুব ভয় হয় যদি কেউ দেখে ফেলে তখন কি হবে? 

ঠান্ডা মাথায় মিতুকে অনেক্ষণ থেকে বোঝালাম, শুধু আরেকবার। তাতেও কাজ হলোনা।

মিতুর সাথে রুমডেট করার সময় লুকিয়ে ক্যামেরা সেট করে রিখেছিলাম।

সেই ভিডিওয়াটা মিতুকে মেসেজ করে দিয়ে ভিডিওটা ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্লা/কমেইল করলাম, তাতেই মিতু রাজি হলোনা।

উলটা আমাকে খা/রা/প, শয়/তান, বিশ্বাসঘাতক আরো অনেক কিছু বলে আমার বাবা মাকে তুলে গালি দিল, তাই রাগ করেই ভিডিওটা Facebok, internet এ ভাইরাল করে দিলাম। 

.

আমি আমার বন্ধুদের নিয়ে ভাইরাল করা ভিডিওটি দেখছি আর হাসছি,

নিমিষেই কিছুদিনের মধ্যে যেনা ভিডিওটি সারা বাংলাদেশ ছেয়ে গেলো।

আর এদিকে মিতুর ফেসবুকে মেসেজ আসতে লাগল,

- ডার্লিং তুমিতো সা/নিলি/ওন এর থেকে কম না, তোমার ফিগারটা সেই।

- এই হট বেবি, একরাতের জন্য কত নিবা?

- ভিডিওতে তোমাকে খুলামেলা দেখে আমি একদম পাগল হয়ে গেছি।

- তোমার ঠিকানা দাও, বেশিনা একরাত দিলেই হবে।

আরো অনেক মেসেজ এসেছে এইসব মেসেজের থেকেও বেশি নোং/রা নোং/রা।

মিতু বিছানার একটা কোনে বসে বসে চোখের জল ফেলছে, রাকিব তার বিশ্বাসের এই মূল্য দিবে ভাবতে পারেনি।

কিছুক্ষণ পর মিতুর বাবা ও তার ভাই মিতুর রুমের দরজা ধাক্কাতে লাগল,

মিতু ভাবছে তার এই মুখ কিভাবে তার বাবাকে দেখাবে, বাবার যে অনেক স্বপ্ন ছিলো আমাকে নিয়ে।

আমি এই সমাজেই বা মুখ দেখাবো কি করে, 

দরজা ধাক্কানো আর মিতুকে রাগী সুরে ডাকার আওয়াজ বেড়ে যেতে লাগল....

-আমি এই সমাজেই বা মুখ দেখাবো কি করে, 

দরজা ধাক্কানো আর মিতুকে রাগী সুরে ডাকার আওয়াজ বেড়ে যেতে লাগল।

- মিতু মাথায় হাত দিয়ে এটার সমাধান খুজে বেরাচ্ছি, কি করলে সব ঠিকঠাক করা যাবে।

একটুপর সমাধান খুজে পেয়ে মাথার উপড়ে ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে অট্ট হাসিতে মেতে উঠল। আর বলতে লাগলো, হ্যা এই ফ্যানই আমার সবকিছুর সমাধান। 

-একটা ওড়না ফ্যানের সাথে বেধে দিয়ে ওড়নার

ফা/স'টা গলার সাথে সেট করে ফেলল মিতু।

মিতুর গ/ঙ্গা/নোর আওয়াজ পেয়ে মিতুর বাবা জোরে জোরে দরজা ধাক্কিয়ে ভে/ঙ্গে ফেলল।

দরজা ভে/ঙ্গে ভিতরে ঢুকে দেখে মিতু গলায় ওড়না পেচিয়ে আ/ত্নহ/ত্যা করেছে।

- রাকিবের কাছে মিতুর মৃত্যুর খবর পৌছালো এবং রাকিব খবর পেয়ে একটুও কষ্ট পেলনা, 

কারন রাকিবতো এখন আরেকটা নতুন মিতুকে খুজাতেই ব্যস্ত,

.

-প্রায় বছর খানিক পর রাকিব কে বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে।

রাকিবের বন্ধুরাও মেয়ে দেখার কাজে ব্যাস্ত।

- মোনালিসা নামের একটি মেয়েকে সবার খুব পছন্দ হল, মেয়েটি দেখতে খুব সুন্দর রাকিবেরও পছন্দ হয়েছে খুব।

বিয়ের কথা পাকা করা হল, ছেলে এবং মেয়ের মতামতেই বিয়েটা দেওয়া হয়েছে।

-বাসর ঢুকেই রাকিব একটু হতভম্ব হয়ে গেল, কারন মেয়েটি কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছিলো।

রাকিব তাকে জিজ্ঞাসা করলে বলে তার একটা বান্ধবীর সাথে কথা বলতেছিল।

কিছুদিনের মধ্যেই রাকিব মেয়েটিকে খুব ভালোবাসে ফেলে, মেয়েটি রাকিবকে খুব ভালোবাসে।

এভাবে ভালোই দিনকাল চলতে থাকে রাকিবের...

.

দুই বছর পর...

রাকিবের বউ মোনালিসা প্রেগনেন্ট, রাকিব বাবা হতে চলেছে।

মোনালিসাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিছুক্ষন পর রাকিবের কোলে একটি ফুটফুটে কন্যা শন্তান দেখা যায়, হ্যা মোনালিসার কন্যা শন্তান জন্ম হয়েছে।

- রাকিব তার মেয়ের নাম রেখেছে টুশি, টুশি এখন ৩য় শ্রেনীতে পড়ে। 

রাকিবের বউ মোনালিসা প্রতিদিন টুশিকে স্কুলে দিয়ে আসে এবং নিয়ে আসে।

প্রতিদিনের মতো আজকেও মোনালিসা টুশিকে স্কুলে ঠিকি দিতে গেছে কিন্তু আর ফিরেনি আসেনি।

-পরে জানতে পারা যায় মোনালিসার একটি ছেলের সাথে পর/কি/য়া ছিল, মোনালিসা তার সাথেই পালিয়ে গেছে।

.

এদিকে রাকিবও প্রায় ভুলেগেছে মোনালিসাকে। টুশির কথা ভেবে রাকিব আর বিয়ে করেনি।

- টুশি এখন ক্লাস ১০ এ পড়ে, কিছুদিনপর টুশির S.S.C পরিক্ষা।

তাই রাকিব একমাসের জন্য অফিস ছুটি নিয়েছে,

টুশিকে রাত জেগে পড়ানো, টুশির খাওয়ার ব্যাবস্হা সব রাকিব করছে, টুশিকে কোন কাজই করতে দেয়না।

টুশিও মন দিয়ে পড়ালেখা করছে।

-আজ টুশির প্রথম পরিক্ষা, তাই রাকিব টুশিকে স্কুলে দিতে গেছে,

টুশি দেখতে অনেক সুন্দর, টুশির দিকে কয়েকটা ছেলে কেমন ভাবে তাকাচ্ছিলো,

এভাবে তাকাতে দেখে রাকিবের কেমন খারাপ লাগলো, তাই রাকিব স্কুলের বাইরে দাড়িয়ে আছে টুশির পরিক্ষা শেষ হওয়ার অপেক্ষায়।

টুশি ছাড়া তো রাকিবের আর কেউ নেই, তাই টুশিকে খুব ভালোবাসে রাকিব।

-রাকিবের সাদা-কালো চুল আর চোখে একটা পুরোনো চশমা।

রাকিব ছেলেদের দিকে তাকাচ্ছে আর ভাবছে সেও একসময় এই ছেলেদের মতোই খুব মডেলিং ছিলো।

কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে এসব মডেলিং আর ভালো লাগেনা।

রাকিবের বড়লোক বন্ধুরাও আর রাকিবের খবর নেয়না।

খুব জানতে ইচ্ছে করছে আমার বড়লোক বন্ধুরা কেমন আছে তাদের দেখতেও ইচ্ছে করছে খুব।

পাশ থেকে কেউ একজন বলে উঠলো,

- কিরে রাকিব কেমন আছিস?

-- আরে বন্ধু রনি তুই, তুই এতোদিন কোথায় ছিলি?

- আমিতো দেশের বাইরে থাকি, আর তুই এখানে কি করছিস, তোর এই অবস্থা কেনো? কলেজের সবথেকে স্মার্ট ছেলেটার এই অবস্থা হবে ভাবতে পারিনি।

-- আমার মেয়ে টুশি পরিক্ষা দিচ্ছে তাই আরকি বসে আছি।

- ও আচ্ছা ঠিক আছে, থাক আমাকে বাসায় যেতে হবে, আর ভালো থাকিস।

-- আচ্ছা যা।

রনি গাড়িতে উঠে চলে গেল। আমি সেখানে বসে ভাবছি,

কলেজে সাইকেল না নিয়ে আসতে পাড়া, প্রতিদিন পুরাতন একটা ময়লা শার্ট পড়ে আসা ছেলেটা আজ গাড়িতে করে যাচ্ছে, চোখের কোনে পানি জমে এলো।

.

টুশির পরিক্ষা শেষ টুশিকে নিয়ে বাসায় এলাম।

এভাবে প্রতিদিন টুশিকে নিয়ে যাওয়া আসা করি, টুশির S.S.C পরিক্ষা শেষ হয়ে গেলো,

তাই টুশিকে বিয়ে দেওয়ার জন্য একটা ভালো ছেলে খুজছি, 

কিছুদিন পর...

- অফিসে বসে বসে মোবাইল চালচ্ছিলাম, কেউ একজন ভি/ডিও মেসেজ দেওয়ায়, মেসেজটা অপেন দেখেই যেন হাত পা কাপতে শুরু করলো।

নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতে পারছিনা, আমার মেয়ে টুশির ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

-চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়তে লাগলো, টুশি কোন ছেলের সাথে লুকিয়ে সে** ভিডিও বের করবে ভাবতে পারিনি।

তারাতারি করে বাসায় এসে টুশির রুমে ঢুকে দেখি টুশি বিষ খেয়ে আ/ত্নহ/ত্যা করেছে।

বিছানার পাশে একটা চিরকুট পেয়ে পড়তে শুরু করলাম,

"আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা, আমি একটা ছেলেকে ভালোবাসতাম, আর ভালোবাসার প্রমাণ দিতে গিয়ে আমাকে এতোটা নিচে নামতে হয়েছে। আমি ভাবিনি ছেলেটা আমার ভি/ডিও ফাস করে দিবে, আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা"

.

টুশিকে মাটি দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করে ফাকা রাস্তা দিয়ে হাটছি, কিছুক্ষণ পর একটা পুকুরপাড়ে এসে বসলাম।

- আজ মিতুকে খুব মনে পড়ছে,

আমি চোখ থেকে দাগ পড়া চশমাটা খুলে রাখলাম, একটা সিগারেট ধরিয়ে টানছি।

কিছুক্ষণপর ভেজা ভেজা চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি, আজ চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে,

-ফিরে এসেছে, হ্যা ফিরে এসেছে তবে মিতু নয়, মিতুর সাথে করা আমার অন্যায় আমার পাঁপ।

( সমাপ্ত )

প্রকৃতির নিয়ম বড়ই অদ্ভুদ, আপনি আজ অন্যকে ঠকাবেন। তো কাল হোক কি পরশু হোক বা কোনো একদিন ঠিক প্রকৃতি অপনাকে সেটা উপহাড় সরুপ ফিরিয়ে দিবে।।


বাস্তব আরও গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post