স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা কেমন হওয়া উচিত | স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

  •  স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক

স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক

বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী কাঁদছে।বললাম " কি হয়েছে? কাঁদছো কেন? "


অশ্রুসিক্ত চোখে তাকিয়ে স্ত্রী বললো " গত এক মাস হয়ে গেলো।তুমি আমায় এক ঘন্টা সময় ও দাও নি "


হেসে বললাম " দামী চাকরি দেখে বিয়ে করেছিলে।এখন হঠাৎ সময় চাও কেন? "


স্ত্রী নির্বিকার।পরেরদিন ঘুম ভেঙ্গে দেখলাম পাশে স্ত্রী নেই।টেবিলে একটা চিঠি।সেখানে লেখা 


" মা তোমার ছবি যখন আমায় দেখিয়েছিলো আমি একটিবারের জন্যও জানতে চাইনি ছেলে বড়লোক না গরীব।আমি খুব সাধারণ একটা মেয়ে।ভেবেছিলাম বাবা মা পছন্দ করে যার সাথে বিয়ে দিবে তাকেই বিয়ে করবো।মনের যত ভালোবাসা আছে, সব উজার করে দিবো।পাগলের মতো তোমায় ভালোবাসলাম,আর বিয়ের দু'বছর পর তুমি বলছো দামী চাকরি দেখে তোমায় বিয়ে করেছি! বড্ড কষ্ট পেয়েছি।আমায় আর খুঁজো না তুমি।আমি শুধু ভালোবাসা চেয়েছি,টাকাকে নয় "

 

চিঠিটা পড়ে বাকরুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।ভুল বুঝতে পেরে শ্বশুর বাড়িতে গেলাম।ওর পা স্পর্শ করে ক্ষমা চাইলাম।মেয়েটা চোখের জল মুছে বললো 


" ক্ষমা তো করে দিবো।কিন্তু এই দাগ, সারাজীবন মনের ভেতর গেঁথে থাকবে।সেটা দূর করবো কিভাবে বলতে পারো? "


" আমি দূর করবো।ভালোবাসা দিয়ে।নতুন করে,নতুন ভাবে "


গল্প নির্বিকার

লেখক জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • ভালোবাসার গল্প

প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে টিন শেডের একটা ঘরে উঠলাম।সন্ধায় শুরু হলো প্রচন্ড বৃষ্টি! 


দেখতে দেখতেই ঘরের মেঝে ভর্তি জল উঠে গেলো।সঙ্কোচ ভরা চোখে প্রেমিকার দিকে তাকালাম।তার চোখ চকচক করছে।বললো 


" ওয়াও! ঘরের মধ্যে সুইমিং পুল! "


তার ব্যঙ্গ করা কথাটা আমায় ভিষণ ব্যথিত করলো।মেয়েটা অতি স্বচ্ছল পরিবারের।আমি মধ্যেবিত্ত।মায়ের গয়না চুরি করে পালানোর জন্য ৪ হাজার টাকার যোগাড় করেছি।টাকা বাঁচাতে এই টিনশেডের ঘর নিয়েছিলাম।মেয়েটা আমায় অবাক করে দিয়ে বললো 


" একটা সার্ফএক্সেল নিয়ে আসো তো "


ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললাম " কি করবে? "


" মেঝেতে ঢেলে দিবো।তারপর পিচ্ছিল মেঝেতে দু'জনে আছাড় খেয়ে পড়বো "


ওর কথায় হতভম্ব হয়ে বৃষ্টির রাতে দোকান থেকে সার্ফএক্সেল নিয়ে আসলাম।ও তীব্র কৌতুহলী হয়ে মেঝেতে পাউডার ঢাললো।তারপর পা দিয়ে সেই জল ছড়িয়ে দিলো পুরো মেঝেতে।মুহুর্তেই ফ্যানা দিয়ে ভরে গেলো মেঝে।


তারপর মেঝেতে ধপ করে বসে বললো " আমার হাত ধরো।পুরো মেঝেতে আমায় টেনে নিয়ে বেড়াবা।এখন তুমি ঘোরা,আর আমি সাদী "


মেয়েটির আনন্দে জ্বলজ্বল করতে থাকা চোখ দেখে কিছু বলার সাহস হলো না।ওর হাত ধরে সারা ঘরের মেঝেতে টেনে নিয়ে বেড়াতে লাগলাম।


বৃষ্টি থেমে গেলো।ও আগ্রহী হয়ে বললো " ইশশ,বৃষ্টি থেমে গেলো! এখনো তো ভেজাই হলো না "


" সুপ্তা তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?এতো ভিজলে তো জ্বর হবে।বাড়তি খরচ।জামা পাল্টে গা মুছে নাও "


এটা বলে ব্যাগ থেকে গামছা বেড় করে ওর দিকে এগিয়ে দিলাম।মনে মনে ভাবতে লাগলাম কী চমৎকার একটা মেয়ে!এখানে অন্য মেয়ে হলে কতক্ষণ আগেই চলে যেতো।এখনো ঠিক বুঝতে পারিনা,রুপবতী এই মেয়েটা কি দেখে আমার প্রেমে পড়লো! 


সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলো।মেয়েটির তীব্র জেদ সহ্য করে টানা আধাঘন্টা বৃষ্টিতে ভিজছি এরমধ্যে ওকে বললাম 


" তোমার অনুশোচনা হচ্ছে না? এমন এক ছেলের সাথে পালালে, যার একটা ভালো রুম নেবার সামর্থ্যও নেই!মেঝে ভর্তি বৃষ্টির জল উঠে "


মেয়েটা হেসে বললো " আমায় ভালোবাসার সামর্থ্য আছে? "


ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বললাম " হ্যা "


মেয়েটা জড়িয়ে ধরে বললো " এতেই চলবে "


গল্প সামর্থ্য

লেখক জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • স্বামী স্ত্রীর আদর ভালোবাসা

স্বামীর সাথে ঝগড়ার পর ইচ্ছে করেই রান্নায় লবণ, হলুদ বেশি করে দিলাম।যেন খেতে না পারে।বুঝবে বৌয়ের সাথে ঝগড়া করার ফল।


স্বামী রাত এগারোটায় ফিরলো ক্লান্ত শরীরে।গা চিপচিপে ঘাম।ক্লান্ত স্বরে বললো 


" স্বস্তিকা,চোখ বন্ধ করো "


চোখ বন্ধ করতেই চুলে কিছু একটার স্পর্শ অনুভব করলাম।চোখ মেলে দেখি গোলাপ ফুলের মালা।স্বামী বিষাদে বললো


" সারাদিন অফিসে একটুও মন বসেনি।আমার ছোট্ট পাখিটাকে বকা দিয়েছি,ভুল করেছি।নিজের কাছে খুব অপরাধী লাগছিলো।তোমার পছন্দের ফুল নিয়ে এসছি।রাগ কমেছে? "


এতোদিনের চেনা পরিচয়েও আজ যেন নতুন করে স্বামীর প্রেমে পড়ে গেলাম।অশ্রুসিক্ত হয়ে বললাম


" হু রাগ কমেছে।তুমি হাত মুখ ধুয়ে আসো।আমি রান্না করি "


স্বামী ভ্রু কুঁচকে বললো " কেন রান্না করোনি?" 


প্রতিত্তোরে শুধু মাথা নাড়ালাম।কি আশ্চর্য! উনি বিষয়টা বুঝতে পেরে বললেন


" আচ্ছা ঠিক আছে, নতুন করে আর রান্না করতে হবে না।তরকারিতে বাড়তি একটু জল দিলেই তো লবণ কমে যাবে।ব্যাপার না,মেসে থাকতে কত এভাবে খেয়েছি "


রেগে বললাম " তখন তোমার বউ ছিলোনা তাই খেয়েছো।এখন বউ আছে।ফ্রীজে মাংস আছে,পোলাও রান্না করি? "


" আচ্ছা ঠিক আছে।আমি হাত মুখ ধুয়ে পেঁয়াজ কে'টে দিচ্ছি।তুমি কা"টতে যেয়ো না,হাত কে'টে ফেলবে "


লোকটার এই এক সমস্যা।আমার রাগ কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয় না।এতোটা কেন?একটু কম ভালোবাসলেও তো কোনো ক্ষতি ছিলো না।


গল্প অভিমান

লেখক জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা

" স্যার আমার ছুটি লাগবে "


কর্মচারী রুস্তম সাহেবের কথায় ভ্রু কুঁচকে বললাম 


" কালকেই তো শুক্রবারের ছুটি পেলেন,আজ আবার ছুটি কেন? "


" স্যার আমার স্ত্রী অসুস্থ।ডেলিভারি হবে "


রুস্তম সাহেবের কথাটা শুনে বু"কে ধাক্কার মতো লাগলো।১২ বছর সংসারে নিঃসন্তান আমি ব্যস্ত হয়ে মানিব্যাগ থেকে হাজার টাকার নোট এগিয়ে দিয়ে বললাম 


" এই টাকাটা রাখুন।ছোট সাহেব আর মায়ের জন্য নতুন জামা কিনে নিয়েন "


রুস্তম সাহেবের চোখে জল,মুখে তৃপ্তির হাসি।টাকাটা নিয়ে উনি পরম আনন্দে চলে গেলেন।


বিষাদময় চোখ থেকে মোটা ফ্রেমের চশমাটা খুলে টেবিলে রাখলাম।দীর্ঘক্ষন চোখের জল বিসর্জন দিতে হবে।তার মতো এমন একটা ছুটির আবদার আমি কেন করতে পারি না?


গল্প আবদার

লেখক জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • স্বামী স্ত্রী নিয়ে স্ট্যাটাস

নব বিবাহিতা স্ত্রী বললো " বাবার বাড়ি যাবো।রেখে আসো "


হকচকিয়ে বললাম " আমি তো যেতে পারবো না, ছুটি দিবে না "


" আচ্ছা,তোমার যেতে হবে না।শুধু আমায় রেখে আসো "


আমি নিশ্চুপ।তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে স্ত্রী আবারে বললো 


" কি হলো? মুখ শুকিয়ে এতটুকু হয়ে গেলো যে? "


" তোমায় ছাড়া থাকবো কিভাবে? "


" ইশশশ,ঢং! বিয়ের আগে যেভাবে থাকতে সেভাবেই থাকবে "


ছেড়ে থাকার ব্যথা সহ্য করতে না পেরে তবেই তো বিয়ে করেছি,কিন্তু অবুঝ মেয়েটাকে সেটা কি করে বোঝাই! বললাম 


" আচ্ছা "


" আমি ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছি,অফিস যাওয়ার পথে বাসে তুলে দিও।বাবা বাস স্টপেজে দাঁড়িয়ে থাকবে।সমস্যা হবে না "


" আচ্ছা "


মনে হতে লাগলো বু"কের ভেতর কেউ যেন হাতুড়ি পে"টাচ্ছে।মেয়েটা কি বুঝতে পারে না? ওকে ছাড়া আমার দিন কতটা বিষাদে কাটবে?


অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাসে তুলে দিলাম।বাস ছেড়ে দিলো।নাহ!সম্ভব না।দৌড়ে বাসে উঠলাম।আমায় দেখে ওর ঠোঁ"টে চাপা হাসি,সঙ্গে বিষ্ময়।কি সুন্দর! এই হাসিটা আমার বড্ড প্রিয়।


পাশে বসতেই ও আমার কাঁধে মাথা রেখে বললো 


" আমি জানতাম তুমি আসবে।পাগল ছেলে একটা "


" সব বুঝে কেন কষ্ট দাও? "


" এইযে তুমি আমার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠো,এটা দেখতে কি যে ভালোলাগে! নিজেকে তখন রাজকন্যা মনে হয়,আর তোমাকে রাজপুত্র "


গল্প সংসার

লেখক জয়ন্ত_কুমার_জয়


স্বামী স্ত্রীর ভালবাসার গল্প পড়ুন।

Previous Post Next Post