বাস্তব জীবন নিয়ে স্ট্যাটাস | কিছু বাস্তব কথা ২০২৪

  •  জীবনের কিছু বাস্তব কথা

জীবনের কিছু বাস্তব কথা

বাসরঘরের দরজা লাগিয়ে যৌতুকের টাকা গুনছি।বিছানার উপর টাকার ছোটখাটো ৬-৭ টা বিল্ডিং তৈরী হয়েছে।


রাত ১ টা বাজে।স্বামী এখনো ফিরেনি।কল করে বললাম 


" কই তুমি? "


" শ্বশুরের দেওয়া নতুন বাইক নিয়ে চম্পট দিচ্ছি "


" আর কতক্ষণ ঘুরবা? "


" ঘন্টাখানেক।তোমার যৌতুকের টাকা গোনা শেষ? "


" হু "


" খেতে এসে গ্রামবাসীরা যে টাকা দিয়েছে,ওগুলা গুনছো? "


" না।ওগুলা এখন গোনা শুরু করবো "


" আচ্ছা।আমি সোনার দাম শুনেছি।ভরি এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা "


" না থাক।গহনা বেঁচবো না।দাম আরো বারুক "


" আচ্ছা।এখন রাখি।বাইকটা জোস,কাল তোমায় নিয়ে ঘুরতে বেড় হবো "


" আচ্ছা "


কল কে'টে দিলাম।গুনগুন করে গান গাচ্ছি আর টাকা গুনছি।আহা! যে কিপ্টা বাপ কলেজ যাওয়ার সময় ১০ টাকা দিতে দশবার ভাবতো সে যৌতুক দিয়েছে ৮ লাখ টাকা।এখন আমি বড়লোক,লাখ লাখ টাকার সুখী পরিবার।আমারে এখন কে আটকায়? 


তার ঠিক আধাঘন্টা পর স্বামী ফিরলো।দুজন মিলে টাকাগুলো দিয়ে কোথায় কোথায় ঘুরবো তার লিস্ট করলাম।ঠিক তখনি দরজায় টক টক শব্দ।


দরজা খুলতেই আট দশজন হুমড়ি খেয়ে ঘরে ঢুকলো।সবার হাতে পি"স্তল,ছু"রি,রামদা।মুখ কালো পট্টিতে বাঁধা।


কষা স্বরে বললো " চিল্লাচিল্লি করলে গ"লায় কো"প বসাবো।টাকা সোনা গয়না যা আছে বেড় কর "


গল্প-কালনেমির_লঙ্কাভাগ

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • বাস্তব কিছু কথা

বাসরঘরে উৎফুল্ল এবং শিহরিত হয়ে বসে আছে অপরুপা।সে মনের মতো স্বামী পেয়েছে।সহজসরল,বোকা বোকা মুখ,সুদর্শন ছেলে।


অপরুপা মনে মনে পণ করলো স্বামীকে নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসবে,আগলে রাখবে।


রাতে স্বামী এসে বললো " আমি আপনার অপছন্দের কিছু কথা বলতে চাই "


অপরুপা হকচকিয়ে বললো " কি? "


অপরুপার স্বামী বললো " আপনি নিঃসন্দেহে দেখতে প্রচন্ড রুপবতী "


অপরুপা লজ্জা পেলো।ছেলেটা বললো 


" তবে কি জানেন! আমার কাছে শ্যামবর্ণের,মুখে ব্রণের দাগ,এলোমেলো স্বভাবের চন্দ্রিমাকেই বেশি সুন্দর লাগে "


অপরুমার বু"ক ধক করে উঠলো।বললো " চন্দ্রিমা কি আপনার প্রেমিকা? "


" হ্যা।সে প্রথম হেরেছে রুপের কাছে।দ্বিতীয়বার আমার পরিবার তাকে হারিয়ে দিয়েছে।তার গাত্রবর্ণ পরিবার মেনে নিতে পারেনি "


অপরুপা হেসে বললো " ও আচ্ছা "


হেসে কথা বললেও অপরুপার ভেতরটা ভেঙ্গে চুড়ে একাকার হয়ে যেতে লাগলো।


কে'টে গেলো দুইটা বছর।অপরুপা মুগ্ধ এবং হতাশ।মুগ্ধ হবার কারণ হলো লোকটা অসাধারণ।প্রেম এতো প্রখর হতে পারে লোকটাকে না দেখলে বলা সম্ভব না।সেই সঙ্গে হতাশ হওয়ার কারণ হলো অপরুপা তার প্রথম প্রেমিকা না।


সেই শ্যামবর্ণের,এলোমেলো স্বভাবের চন্দ্রিমা নামের মেয়েটির জন্য অপরুপার মাঝেমাঝে দুঃখবোধ হয়।এতো অসাধারণ একটা মানুষের জীবনের প্রথম প্রেম ছিলো সেই মেয়েটি।


দ্বিতীয় প্রেম যদি এতোটা শুদ্ধ এবং পবিত্র হয়,তাহলে প্রথম প্রেম কতই না আবেগঘন এবং স্পর্শকাতর হতো, সেটা ভেবে অপরুপা ক্ষনে ক্ষনে শিউরে ওঠে।আর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,আমি যদি ওনার প্রথম প্রেমিকা হতে পারতাম! 

 প্রথম_প্রেম_দ্বিতীয়_ভালোবাসার_আগে

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • বাস্তব জীবনের গল্প

সকাল হতেই আমার চোখ আনন্দে ছলছল করে উঠলো।বোনের আজ বিয়ে,চলে যাবে।তারপর আমি স্বাধীন! যা ইচ্ছে তাই করবো।


এখন পুরো ঘর আমার।যখন যা ইচ্ছে করবো,কেউ বকা দিবে না।বলবে না, এটা করিস না,ওটা করিস না। ভেজা গামছা বিছানায় রাখার জন্য কেউ কানমলাও দিবে না।


সিগারেট খেয়ে ফিরলে এখন আর ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।রাতে প্রেমিকার সাথে কথা বললেও বোন এসে হা"না দিতে পারবে না।স্বর্গীয় সুখ অনুভব করলাম। 


কিন্তু সন্ধায় কনে সাজে বোনের হাস্যজ্বল হাসি দেখে বু"কে র"ক্তক্ষরণ শুরু হলো।কেন জানিনা বু"ক ফেটে কান্না আসছে।বোন এখন আর আমার সাথে বকাবকি করবে না!হাসিঠাট্টা করবে না! আমার ঘরে এসে বলবে না " ঘর এলোমেলো কেন? বাইরে যা আমি গুছায়ে দিচ্ছি "


বুঝতে পারলাম মেয়েটা একাই যাচ্ছে না,আমার ভালোথাকা,ভালো থাকার মুহুর্তগুলিকেও সাথে নিয়ে যাচ্ছে।


সারাদিন মনে এতো এতো আনন্দ,স্বাধীনতার যে সুখ অনুভব করেছিলাম সেটা মুহুর্তেই ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো।বোনের দিকে দ্বিতীয়বার তাকাতে পর্যন্ত পারলাম না।তাকালেই তো চোখের জল বোনকে জানান দিয়ে দিবে তাকে ছাড়া তার ভাইয়ের থাকতে ভিষণ কষ্ট হবে! 


গল্প-বিয়ে

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • কষ্টের কিছু বাস্তব কথা

কাজের মেয়েটার বয়স ১৬।এই ঠান্ডাতেও পাতলা কাপড়ের জামা পায়জামা পড়ে থাকে।জিগ্যেস করলে বলে


" আমার শীত লাগে না "


দেখে ভিষণ মায়া হলো।নিজের পরণের চাঁদরটা খুলে মেয়েটাকে পড়িয়ে দিলাম।চাঁদর পেয়ে মেয়েটার চোখ অশ্রুসিক্ত।


পরেরদিন আবারো সেই পাতলা জামা পড়ে হাজির।বললাম " কাল চাঁদর দিলাম সেটা কই?পড়ে আসোনি কেন? "


মেয়েটা মিষ্টি হেসে বললো " দাদা,চাঁদরটা ছোট বোনকে দিছি।ও ঠান্ডায় কষ্ট পায়।আমার ঠান্ডা লাগে না "


দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।এইটুকু বয়সেই মেয়েটা দায়িত্ব কি বুঝে গেছে।


গল্প-দায়িত্ব

লেখক-জয়ন্ত_কুমার_জয়

  • জীবনের কিছু বাস্তব কথা স্ট্যাটাস

রান্নাঘরের মেঝেতে তেল ফেলার অপরাধে তিন বছরের বাচ্চা মেয়ের পি"ঠে প্রহার করে তুর্ণা বললো


" সারাদিন আর কত জ্বালাবি?জীবনটা শেষ করে দিচ্ছে "


তিন বছরের ছোট্ট মেয়েটা তখন প্রচন্ড চিৎকারে কান্না করতে লাগলো।তূর্ণার রাগ এতেও যেন কমলো না।রেগে বললো 


" সারাদিন অকাম করতেই আছে।একটা দন্ড চুপ করে থাকবে না।এতো অকাম সহ্য হয়?জীবনের উপর উঠে গেছে আমার "


ছোট্ট মেয়েটা কান্না করতে করতেই বেড়িয়ে গেলো।তুর্ণা তখন ডালে সমবার দিচ্ছিলো।কিছুক্ষণ বাদে তূর্ণার রাগ চলে গেলে সে মৃদু স্বরে ডাকলো 


" তুলতুল, এই তুলতুল "


কোনো জবাব এলো না।তুলতুলকে বকা দিলে অনেক্ক্ষণ সে কারো সাথে কথা বলে না।বিছানার এক কোনে চুপচাপ বসে থাকে।তূর্ণা আবারো ডাকলো 


" তুলতুল মা,কই তুমি।মা আর বকা দিবে না।এই দেখো তোমার জন্য নুডলস বানিয়েছি।না আসলে কিন্তু আমিই খেয়ে ফেলবো "


এবারেও তুলতুলের কোনো সাড়া পাওয়া গেলো না।তূর্ণার বু"ক ধক করে উঠলো।রান্না ফেলে দ্রুত ছুটে গেলো ঘরে।ঘরের সব কোণ খুঁজেও তুলতুলকে খুঁজে না পেয়ে তূর্ণা ঘাবড়ে গেলো।দেখলো ওয়াসরুমের দরজা খোলা।


ওয়াসরুমে ঢুকে তূর্ণা দেখলো জল ভর্তি বালতির ভেতরে তুলতুলের পুরো শরীর আর উপরে শুধু ফর্সা পা দুটো ভেসে আছে! 


-অসাবধানতা 

-জয়ন্ত_কুমার_জয়


বাছাইকৃত সেরা গল্পের সমাহার।

Previous Post Next Post