- স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক
ঝগড়া করে স্বামী রাতে না খেয়েই শুয়ে পড়লো।মা বললো " বৌমা,ওর লুচিটা প্লেটে করে ঘরে নিয়ে যাও।খিদে পেলে খাবে "
ওনার খাবার নিয়ে যেতেই শ্বাশুড়ি বললো " তুমি খাবে না?আগে বসে খাও।তারপর নিয়ে যেও "
" আমি খাবো না মা "
" তোমাদের নিয়ে আর পারিনা,দুইদিন পর পর কি যে শুরু করো না "
এটা বলে মা প্লেটে আরো লুচি তুলে দিয়ে বললো " এখানে দু'জনার লুচি দিলাম।খেয়ে নিও "
স্বামী খায়নি জন্য নিজের মধ্যে অপরাধবোধ হচ্ছে।না লুচিগুলো টেবিলে রেখে শুয়ে পড়লাম।স্বামী না খেলে আমি কখনো খাইনি।মাঝরাতে স্বামীর মৃদু স্বর
" এই,শুনো,একটু উঠো "
ঘুমজরিত স্বরে বললাম " খিদে পেয়েছে?"
স্বামী মাথা দুলিয়ে বললো " হু "
উঠে ঘরের লাইট জ্বালালাম।লুচির প্লেট এগিয়ে দিলাম।স্বামীর চোখ চকচক করে উঠলো।লোকটার বড্ড খিদে পেয়েছিলো বোধহয়।ব্যস্ত ভঙ্গিতে লুচি খাচ্ছে।প্লেটে আর একটা লুচি,জিগ্যেস করলাম
" আরো নিবে? "
" না,পে'ট ভরে গেছে।তুমি খাইছো? "
" হু "
" মিথ্যা বললে কেন?আমি না খেলে তো তুমি খাও না "
" আজ খেয়েছি।রেগে ছিলাম তো,তাই খেয়ে ফেলছি "
" সত্যি তো? "
" হু সত্যি "
" আর ঝগড়া করবো না,সরি "
বাকিরাতটুকু আমায় জড়িয়ে ধরে ঘুমালো।সকালে মা বললো " রাতে দুজনার খাবার দিলাম খাইছো? "
আঙ্গিনায় স্বামী দাঁড়িয়ে মুখ ধুচ্ছিলো।কথাটা শুনতে পেরেছে কিনা বুঝতে পারলাম না।মাকে নীচু স্বরে বললাম " খেয়েছি মা "।
অফিস যাওয়ার সময় স্বামী ডাকলো।ঘরে গেলাম।ও দরজা লাগিয়ে দিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো
" কাল রাতে ওখানে দু'জনার জন্য লুচি দিয়েছিলো,তুমি না খেয়েই কেন বললে খেয়েছো? "
" আমার খিদে ছিলো না তো "
" আমি বুঝি কেন খাওনি।আর আমিও কত বোকা! তোমায় বিশ্বাস ও করেছি।সারারাত না খেতে ছিলে! কত কষ্ট পেয়েছো "
" ধুর, কিসের কষ্ট? তোমার তৃপ্তি নিয়ে খেতে দেখে পে'ট ভরে গেছে "
" পুরোটা ভরেনি।যেটুকু বাকি আছে ওটা আমি ভরাবো "
কথাটা বলে স্বামী আমার খুব কাছে টেনে নিলো।লজ্জায় চোখ বন্ধ করে রইলাম।ঠোঁ"টে নরম স্পর্শ!
গল্প -পরিতৃপ্তি
লেখক -জয়ন্ত_কুমার_জয়
- স্বামী স্ত্রীর আদর ভালোবাসা
সামান্য ঝগড়ায় স্বামী রেগে বললো " কি পারো তুমি?কোন কাজটা হয় তোমার দারা? "
স্ত্রী চুপচাপ,মুখে একটা কথা নেই,শান্ত দৃষ্টি।স্বামী আরো কিছুক্ষণ কথা শোনালো।
স্ত্রীর মুখ এখনো বিষণ্ণ।স্বামীর বিকৃত চিৎকার " কিছু বললে চুপ করে থাকো কেন? কথার জবাব দাও? "
স্ত্রী মুচকি হেসে বললো " এখন রেগে আছো।কথা বললে ঝগড়া আরো বাড়বে।একটু পর রাগ কমলে নিজেই এসে ভাব জমাবে "
স্ত্রীর কথায় স্বামীর মুখ প্যাচার মতো বিকৃত হয়ে গেলো।খানিক্ষন যেতেই স্বামীর রাগ গলে জল হয়ে গেলো।স্ত্রীর আঁচলে নখ প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে বললো
" তুমি আমার সাথে তর্ক কেন করো না? "
" মাকে দেখেছি,বাবা রেগে গেলে মা চুপ থাকতো "
" তাই বলে এতোটা চুপ থাকবে? একটু তর্ক তো করতেই পারো! "
" হৃদয়জয়ী আমি,তর্কজয়ী হয়ে কি করবো?তাছাড়া একটু আধটু শাসনে থাকতে ভালোই লাগে।তখন মনে হয় আমার খেয়াল রাখার জন্য,ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য একজন তো আছেই।নিজেকে সুরক্ষিত মনে হয় "
-গল্প -হৃদয়জয়ী
- স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা
স্বামী ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল " আর কত সুন্দর করে সাজবা?এগারোটায় ট্রেন! দেরি হলে তো ধরতে পারবো না "
স্ত্রী ঠোঁ"টে লিপস্টিক দিতে দিতে বললো " এইতো হয়ে গেছে,আর একটু দাঁড়াও "
স্বামী ইতস্তত করে বারবার ঘড়ি দেখছে।মিনিট পনেরো পর স্ত্রী শাড়ির কুঁচি ঠিক করতে করতে এসে বললো " কুঁচিটা ধরো তো,বারবার খুলে যাচ্ছে "
" এখনো শাড়ির কুঁচি ঠিক করোনি! "
কথাটা বলে স্বামী শাড়ির কুঁচি ধরলো,স্ত্রী স্তরেস্তরে সাজালো।
স্টেশনে আসতেই স্ত্রীর বায়না, তরমুজ খাবে।দ্রুত এক ফালি তরমুজ কিনে স্ত্রীর হাতে দিয়ে স্বামী গেলো টিকিট কাউন্টারের ঘরে।হাঁপাতে হাঁপাতে বললো
" দাদা ১১ টার ট্রেনটা কি এসছে? "
" ১০ মিনিট আগে চলে গেছে "
মুখ ভার করে ফিরলো স্বামী।স্ত্রীর মুখ হাসি হাসি।বললো
" তরমুজটা ভিষণ মিষ্টি,খাবে? আসো খাইয়ে দিই,ট্রেন কখন আসবে? "
স্ত্রীর খারাপ লাগা যেন তৈরী নাহয় সেদিকে খেয়াল রেখে স্বামী বললো " ট্রেনে যেতে ইচ্ছে করছে না গো।চলো না বাসে করে যাই! "
" বাসে আমার বমি পায় তো "
" পাবে না,জানালার কাছে বসবে।আমার কাঁধে মাথা রাখবে "
১৬ বছরের সংসার জীবন।স্ত্রী ভুল,ভালো যাই করুক,স্বামী এভাবেই সবসময় মানিয়ে নেয়।ভালোবেসে বিয়ে তাদের।বাসররাতে স্বামী প্রতিজ্ঞা করেছিলো, স্ত্রীর উপর কখনো রাগ করবে না।এতবছরেও সেই কথার খেলাপ হয়নি।
গল্প -মানিয়ে_নেওয়া
লেখক -শূন্য_চিঠি
- স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসার পোস্ট
সকাল থেকে স্ত্রীর মুখ হাসি হাসি।মনে ভয় ঢুকে গেলো,ব্যাপার কি?অন্যয় কিছু করে ফেললাম নাকি!
খেতে বসে স্ত্রী একটু বেশিই যত্ন করতে লাগলো।নিজেই হাত ধোঁয়ার জল এগিয়ে দিলো।এখন চোখে চোখ রেখে মিটিমিটি হাসছে।
অস্বস্তিবোধ আরো প্রবল হলো।জিগ্যেস করলাম " কি হইছে তোমার?"
স্ত্রী হেসে বললো " কি আবার হবে? "
" না মানে একটু অন্যরকম লাগছে "
" অন্যরকমটা আবার কেমন? "
" বউ বউ ভাবটা প্রবল হয়ে উঠেছে "
" বিয়ে করেছি,বউয়ের মতোই তো আচরণ করতে হবে,তাই না! "
মনে মনে ভিষণ আনন্দিত হলাম।এতোদিন বৌ আমায় দাবিয়ে রাখতো।ভিষণ রাগী এবং জেদী।তাহলে কি ও পাল্টে গেলো?তবে তো বেশ হয়!
অফিসে যাওয়ার সময় স্ত্রী আমার হাত জড়িয়ে ধরে বললো " শুনোনা,তোমার মানিব্যাগ থেকে পনেরো শো টাকা নিয়েছি "।বুঝলাম এতক্ষণের যত্নের কারণটা!
গল্প -কারণ
লেখক -জয়ন্ত_কুমার_জয়
- স্বামী স্ত্রীর রোমান্টিক কথা
--রাত বাজে ২ টা এমন সময় আমার স্বামী শারীরিক সম্পর্কের জন্যে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
--প্লিজজজ আমি অসুস্থ আজকে অত্যন্ত এই সব করিওনা।
--কিইই বললি তুই। আমার মুখের উপরে কথা বলিশ। তোকে আজকেই ডিভোর্স দিবো আমি।
--প্রতিদিন এমন নেশা করে মাতলামো করো। আমার ভালো লাগেনা বলে দিলাম হাসিব।
--এইইই আমি নেশা করি আমার টাকায়। তোর টাকায় নেশা করিনা মা*****?
--শোন আমি কিন্তু গর্ভবতী বতর্মান। একটু তো মানুষিক শান্তি দাও।
হাসিব : কেনো রে এই পৃথিবীতে আর কোন গর্ভবতী মহিলা নেই নাকি।
--তুমি আমাকে যেভাবে নির্যাতন করো। এইভাবে কোন স্বামী তার স্ত্রী কে নির্যাতন করেনা বুজছো।
হাসিব : আমি তোকে নির্যাতন করি।
"কথাটি বলেই হাসিব জুথির চুলের মুঠি ধরে ২টি থাপ্পড় দিয়ে জুথিকে একটি ধাক্কা মারে?
জুথি : এইটার বেশি তোর কাছে আমি কিচ্ছু আশা করিনা। কেনো পাপের সাজা যে আল্লাহ্ আমাকে দিচ্ছে বুঝতেছিনা।
হাসিব : চুপ কর।
জুথি : কেনো লজ্জা লাগতেছে। আরে তুইতো একটা কাপুরুষ সারা দিন নেশা করে। রাতে বাড়িতে ফিরে বউকে নির্যাতন করিশ। আমি তোকে নারী নির্যাতনের কেস দিবো।
"এই কথাটি শুনা মাত্রই হাসিব আরো রেগে যায়। আর সঙ্গে সঙ্গে জুথির পেঠে লাত্থি মারে। যার কারনে জুথি চিৎকার করে উঠে।
"সঙ্গে সঙ্গে হাসিবের বাবা মা বাহিরে এসে দেখে জুথি অঙ্গান হয়ে আছে। যা দেখে ভয়ে জুথিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
"ডাক্টার ভালো করে দেখার পরে বলে আপনাদের একটি দুঃখের সংবাদ আছে। সেইটা হলো আপনাদের বউমার পেটে যে সন্তানটি ছিলো সেটা মারা গিয়েছে।
"যা শুনে হাসিব সহো ওর বাবা মা নিস্তব্ধ হয়ে যায়। তখন হাসিবের মা বলে।
--তোকে কতো বার বলছিলাম পেটে সন্তান আছে জুথিকে মার পিট করিশনা। তুই শুনিশনাই আমার কথা। এখন দেখ কি থেকে কি হলো। (হাসিবের মা)
হাসিব : মা আমি বুঝতে পারিনাই আমি নেশার ঘোরে ছিলাম প্লিজজজ আমাকে মাপ করে দাও।
--মাপ চাইলে জুথির কাছেই গিয়ে চা। আমার কাছে না।বেয়াদব ছেলে কোথাকার। দুর হয়ে যা আমার চোখের সামনে থাকে।
"আসলেই বতর্মান আমাদের সমাজে গর্ভধারণকালীন সময় মেয়েদের যত্ন নেয়া হয়না। তাদের দারায় অতিরিক্ত কঠিন কাজ করানো হয়। তাদের মার ধর করা হয়। যার প্রভাব পেটের সন্তানের উপরে পরে। আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুন আল্লাহ্।
অনু_গল্প : গর্ভধারনী_মা_
কাহিনী ও লেখনীতে : মি_হাসিব