- বাস্তব জীবনের কিছু গল্প
" ইশশশ,নিজের একটা মেয়ে থাকলে আমায় এতো খাটতে হতো না।কি সুন্দর হাতে হাতে কাজ করে দিতো "
মায়ের কথায় তখন রসিকতা করে বলতাম " আমি মেয়ে নিয়ে আসবো? "
মা তখন মুখ ভেঙ্গচি দিয়ে বলে " সময় হোক,তখন নিয়ে আসিস "
" নিয়ে আসলে কি কি কাজ করায় নিবে?সারাদিন খাটাবে নাকি? "
" খাটাবোই তো,সব কাজ করিয়ে নিবো।তখন পায়ের উপর পা তুলে বসে থাকবো,আর বৌমাকে বলবো বাড়ির সব কাজ করো,পা টিপে দাও "
সেই সময়টা আসলো।বিয়ে করলাম।স্ত্রীর একটা অভ্যাস আছে,রাতে মায়ের হাতে ভাত না খেলে তার নাকি ঘুম হয় না।
মায়ের কাজ আগের থেকে আরো বেড়ে গেলো,শ্বাশুড়ি মায়ের দায়িত্ব এখন আমার মা পালন করে,বেশ আগ্রহ নিয়েই করে।প্রতিরাতে মা নিজ হাতে স্ত্রীকে খাইয়ে দেয়।
খাওয়া শেষে মা মেয়ে একসাথে মিষ্টি জর্দা দিয়ে পান খায়,গল্প করে,হো হো করে হাসে।কখনো কখনো গল্প করতে করতে মায়ের সাথেই স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়ে,মা যতক্ষণ জেগে থাকে স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।আমি দূর থেকে তাদের দেখে তৃপ্তির নিশ্বাস ফেলি।অবশেষে মায়ের একটা মেয়ের শখ পূর্ণ হলো!
গল্প -শখ
লেখক -জয়ন্ত_কুমার_জয়
- মানুষের জীবনের কিছু বাস্তব কথা
"মেয়েটা কে যেনো সময় মতো পাই।"
আরে ভাই আপনি এতো টেনশনে করছেন কেনো! এর আগে কতবার এই কাজ করেছি বলুন তো! কখনো কথার খেলাপ হয়েছে? ঠিক সময় মতো পাখি পেয়ে যাবেন। আমি কলেজের পেছন সাইডে দাঁড়িয়ে আছি। বের হলেই তুলে নিবো।
পরী আজকে প্রথম বোরকা পড়েছে। এখন থেকে সে পর্দার সাথে চলবে বলে ঠিক করেছে। প্রথম প্রথম জন্য একটু হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। হঠাৎ একটা বাচ্চা ছেলে তাকে এসে বলল,
"আপু আপনার একটা বান্ধবী আপনার জন্য কলেজ এর পিছনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।"
বলেই এক দৌড়ে অনেক দূরে চলে গেলো। পরী মনে মনে ভাবলো এটা হয়তো পৃথার কাজ। মেয়েটা আজকেও বোধহয় ঘুরার প্ল্যান করেছে। ভাবতে ভাবতেই সেদিকে গেলো। কিন্তু কাউকে দেখতে না পেয়ে ডাকতে থাকলো,
"পৃথা কোথায় তুই? আমি চলে এসেছি।"
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ তার মুখ চেপে ধরে। অনেক বার চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করেও পারে না পরী । টেনে হিঁ'চড়ে কেউ তাকে গাড়িতে তুলে। মুখ বেঁধেই নিয়ে যেতে থাকে। হঠাৎ লোকটার ফোন বেজে উঠে রিসিভ করে বলে,
"ভাই কাজ হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ এর মধ্যে আপনাদের গাড়ি পেয়ে যাবো। চলে এসেছি প্রায় পাখি নিয়ে। আরেকটু অপেক্ষা করুন।"
চেনা পরিচিত কন্ঠ শুনে চমকে যায় পরী। মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলে। তার যে আর কিছুই বলার নেই। কার গলা শুনছে সে।"
দশলাখ টাকা নিয়ে খুশিতে আত্মহারা হয়ে বাড়ি ফেরে রাফশান। কালকে বোন কে শপিং করাতে নিয়ে যাবে। আদরের বোনটার যা যা লাগবে সব কিনে দিবে। আজকে শুধু বাড়ি আসার আগে চকলেট নিয়ে এসেছে। বাড়ি ফিরেই ডাকতে থাকে,
"পরী কোথায় তুই বোন। তাড়াতাড়ি আয় দেখ কি এনেছি। মা পরী কে ডাকো তো।"
পরীর মা কাঁদতে কাঁদতে বের হয়ে বললেন,
"পরী কলেজ থেকে আজকে বাড়ি ফিরেনি। কতবার ফোন দিয়েছি তোকে ধরিস নি কেনো। বড্ড টেনশন হচ্ছে আমার। যেখান থেকে পারিস তাকে খুঁজে এনে দে।"
রাফসান চেঁচিয়ে উঠে,
"কিহ বলছো মা!! আমি এখনই দেখছি।
বলে দৌড়ে বের হওয়ার সময় পেছন থেকে তার মা ডাক দিয়ে বলে, "দাঁড়া পরী কিন্তু আজকে বোরকা পরে গেছে। তুই তাকে চিনতে পারবি ?
রাফসান থেমে যায়। হটাৎ তার মনে ভয় বাসা বাঁধে। না না এমন হতেই পারে না। তবুও মন বলতে থাকে,
"তুই যা ভাবছিস তাই নয়তো!!"
সমাপ্ত
-দশলাখ (মূল্য)
-Mishka_Moon
|| অপরের জন্য খাল কাটলে একদিন সেখানে নিজেকেও পড়তে হয়।🙂||
- বাস্তব জীবন বড়ই কঠিন
বয়ফ্রেন্ডের সাথে বিয়ে দিবে না বলে ঋতু তার মা'কে বালিশ চাপা দিয়ে মে'রে ফেলেছিল।
অথচ ঋতুর মা এই ঋতুর জন্য কতই না লড়াই করে ছিলেন! এমনকি সংসারও ছেড়ে ছিলেন কন্যাসন্তান জন্ম দিতে চাওয়ার অপরাধে। তবুও মহিলা হার মানেননি। কত কথা, ক্ষোভ, রাগ সহ্য করে ঋতুকে জন্ম দিলেন! অথচ সেই ঋতুই কি-না মা'কে মেরে ফেলল ভালোবাসার মানুষটিকে পাওয়ার লোভে!
অথচ কী হলো শেষমেশ? টানা ছাব্বিশ দিনে চারটি ছেলের অমানবিক নির্যাতনের পর আজ ঋতু চিরতরে চোখ বুঝলো। তার আত্মা পৃথিবী ত্যাগ করল। কী হলো ভালোবেসে? যেমন করে মা ঠকেছিল তেমন করেই তো সে ঠকলো তাই না? প্রকৃতি ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে কী দেয় আদৌ? একদম না।
গল্প: -প্রকৃতির_প্রতিশোধ
কলমে: মম সাহা