- বউ শাশুড়ি
বৃদ্ধাশ্রম থেকে শাশুড়িমাকে চিঠি....
পূজনীয় মা,
এই "মা" কথাটা আমি কোনদিন আপনাকে মন থেকে বলিনি। আজ আপনাকে খুব ইচ্ছে হল একটা চিঠি লেখার। তাই খোলা আকাশের নিচে বসে আপনাকে চিঠি লেখা শুরু করলাম। জানিনা এই চিঠি আপনার কাছে পৌঁছাবে কিনা! আমি সেই বৃদ্ধাশ্রমের আছি যে বৃদ্ধাশ্রমের আপনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। ভাগ্যক্রমে আপনি যে রুমটিতে থাকতেন আমি এখন সেই রুমে। তাই হয়তো আজ আপনাকে আমার খুব মনে পড়ছে। ক্ষমা চাইবার অধিকার আমি হারিয়ে ফেলেছি। তাও এই চিঠি লিখছি যদি আপনি ক্ষমা করে দেন।
বিয়ে হয়ে আসার পর থেকে আমি দেখেছিলাম আপনি সংসারটাকে নিজের হাতে রেখেছিলেন। এটা আমার সহ্য হতো না, মনে হতো যেন আমি বন্দি হয়ে আছি কিন্তু এটা বুঝতাম না মাথার উপর একজন অভিভাবক থাকা কতটা প্রয়োজন। আপনি যখন বলতেন-"বৌমা যতটা খাবে ততটা নাও, লোকসান করো না"এই কথাটা যেন আমার অসহ্য লাগত কিন্তু আমি এখন বুঝতে পারি আপনি কোন খারাপ কথা বলেননি তো!
আপনি তো আমাকে না খেয়ে থাকতে বলেন নি। , লোকসান করতে মানা করছিলেন। আপনার হাতে যখন আপনার ছেলে মাসিক বেতন তুলে দিত তখন আমার খুব অসহ্য লাগতো, মনে মনে ভাবতাম কি করে আপনার কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়! আপনার কাছ থেকে মুক্তি পাবার জন্য আপনার ছেলের কাছে আমি বায়না করি আমি তার সাথেই যাবো তার কর্মস্থলে। আপনার ছেলের প্রথমে অনুমতি না দিলেও পরে ঠিক মানিয়ে নিই কান্নাকাটি করে। বেশ ভালোই ছিলাম দুজনে, কিন্তু যখন আমি অন্তঃসত্ত্বা হই , ডাক্তার আমাকে বেড রেস্ট নিতে বলে। তখন আপনার ছেলে আপনাকে নিয়ে আসে আমাদের ভাড়া বাড়িতে। আপনি বাড়ির সব কাজ করতেন, আমাকে সেবা করতেন, তাও যেন আপনাকে আমার অসহ্য লাগত। আমারও একটি পুত্র সন্তান হয়। আমার সন্তান আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। সব সময় ঠাম্মা ঠাম্মা করতে থাকে, আমার এই ঠাম্মা শব্দটা শুনে অসহ্য লাগত। আমার ছেলেকে আমি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করি। কিন্তু আপনি বাংলা মিডিয়ামের যত কবিতা, গল্প শোনাতে থাকেন। ছেলে জেদ করে বসে সে বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়বে। এই ব্যাপারটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলাম না। আমাদের ভাড়া বাড়িতে দুটি রুম ছিল, একটাতে আমি আর আপনার ছেলে থাকতাম, অপরটিতে আমার ছেলেও আপনি। ছেলে বড় হচ্ছে তাই আরেকটা রুমের প্রয়োজন ছিল। আমি আর আপনার ছেলে যুক্তি করলাম দেশের বাড়ি ও জমি বিক্রি করে এখানে নিজেদের বাড়ি তৈরি করব। আপনি কিছুতেই সই করছিলেন না, এটা বলে ওটা আপনার শ্বশুরের ভিটা, ওখানে আপনার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত আপনি সই করলেন। আপনার সাথে আমার কোনমতেই বনিবনা হতো না। তাই স্থির করি আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর। তখন আমার ছেলে হোস্টেলে পড়ে, তাই আপনার ব্যাপারে কিছুই জানতে পারেনি।
আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে বেশ কয়েকটা বছর ভালোই ছিলাম। একদিন ফোনে খবর পেলাম আপনি আর নেই, আমি মনে মনে বললাম যাক বাঁচা গেছে। এরপর ছেলে বড় হল, বিয়ে দিলাম। প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম আমিতো আর আপনার মতন গেঁয়ো ভূত নই, তাই আমার সাথে আমার বউ মার বেশ মিল হবে। কিন্তু তা হয়নি, আমার সাথে যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছিল, যে যে বিষয়ে আপনার সাথে আমার তর্ক হতো ঠিক সেই বিষয়ে আমার সাথে আমার বউমার হত। হঠাৎ করে আপনার ছেলে স্ট্রোক হয়, আর সে আমাকে ছেড়ে চলে যায় চিরতরে। আপনার ছেলের বানানো বাড়ি তাদের পছন্দ হচ্ছিল না , আমার বউমা থাকতে চাই ফ্ল্যাটে। তাই বাড়ি ভেঙ্গে ফ্ল্যাট বানানোর পরিকল্পনা করে। আমাকে আমার ছেলে ও বৌমা বোঝায় যে ফ্লাট বানালে তারা দুটো ফ্ল্যাট নেবে বাদবাকি ভাড়া দিবে, তাতে অনেক টাকা আসবে। আপনার মতই আমি কিছুতেই সই করতে চাইনি। কিন্তু আমার ছেলে কান্নাকাটি করে শেষ পর্যন্ত সই নিয়েছিল। বাড়ি ভেঙে তৈরি হলো বিশাল বড় ফ্ল্যাট। সেই ফ্লাটে ছিল দুটো রুম, আর একটা কিচেন। আমি আমার ছেলেকে বললাম- কিরে আমার রুম কোথায়? ছেলে বলল-মা তোমার রুমের কি দরকার? তুমি আমাদের মেয়ের সাথে মেয়ের রুমে থাকবে। নাতনির সাথে নাতনির রুমেই থাকছিলাম, নাতনি যত বড় হতে থাকে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে, আসলে ওর চাই একটা নিজস্ব রুম। তাই আমার ছেলে ও বৌমা স্থির করে আমাকে বৃদ্ধাশ্রমের রাখার।
আমি আজ বৃদ্ধাশ্রমে, যে বৃদ্ধাশ্রমের আপনি ছিলেন। ভাগ্যের কি পরিহাস, আমি কোনদিনই ভাবিনি আমার সাথে এইরকম ঘটনা ঘটবে, রক্তের গরম , টাকার গরম, আর যৌবনের গরমে আমরা সবকিছু ভুলে যাই। ভুলে যাই পৃথিবীতে কোন কিছুই স্থায়ী নয়। যদি এটা আমি আগে বুঝতাম তাহলে হয়তো এইদিন আমাকে দেখতে হতো না। আমি আকাশের দিকে মিট মিট করে জ্বলে ওঠা তারাদের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলছি-"মা পারলে আমায় ক্ষমা করে দেন"।
ইতি আপনার
-নির্লজ্জ_বৌমা
-অনুগল্প -সমাপ্ত
- বউ শাশুড়ির সম্পর্ক
আমার মা একটা চোর! আমি একটা ছ্যা'ছ'ড়া চোরের মেয়ে। বৃদ্ধ বয়সে কেউ চুরি করে, করেনা নিশ্চয়ই! কিন্তু, আমার মা করে। আমি বাপের বাড়ি আসলেই আমার মা খাবার চুরি করে। আজ মেজো ভাবি হাতেনাতে ধরেছে, রান্না ঘর থেকে আমার মা চুপিচুপি চাল চুরি করছিলো।
আমার স্বামীর ক্যান্সার হয়েছে,লোকটা ভীষণ রকমের অসুস্থ। স্বামীর আয়-রোজগার নেই, উল্টো সবটুকু জমানো অর্থ দিয়ে তার চিকিৎসা করাচ্ছি। হুমায়ুন অসুস্থ হওয়ার পর আমি গার্মেন্টসে চাকরি করে সংসার সামলাই। আমার ছোট্ট দুইটা বাচ্চা ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসার।
এই মাসের জন্য ঘরে যতটুকু চাল ছিলো সব শেষ হয়ে গিয়েছে। বাচ্চা দু’টোকে এক মুঠো ভাত দেওয়ার মতো পয়সা আমার নেই। বেতন পেতে এখনো চারদিন বাকি।ছেলেদের শুকনো মুখ!
তা দেখে আমার অসুস্থ স্বামী মলিন কণ্ঠে শুধালো,
"বেলা, তুমি ছেলে দু'টো নিয়ে দু'দিন বাপের বাড়ি থেকে ঘুরে এসো। ছেলেদের এই মলিন মুখ আর সহ্য করতে পারছি না আমি।"
"কিন্তু, আমি গেলে তোমার দেখাশোনা কে করবে হুমায়ুন? তুমি এমনিতেই অসুস্থ।"
"আমি ঠিক সামলাতে পারবো। তুমি চিন্তা করো না বেলা। আল্লাহ কেন যে, গরীবের এতো বড় রোগ দেয়! তোমাদের কষ্ট আমি নিতে পারছি না বেলা। আমার দ'ম আঁটকে আসছে।"
বলতে বলতে গামছায় চোখ মুছলো হুমায়ুন। আজ শুক্রবার ছিলো, বাধ্য হয়ে ছেলেদের নিয়ে বাপের বাড়ি এসেছি। আমার বাবা নেই, ম'রে গিয়েছে অনেক আগেই। আমার চার ভাই, সবার আলাদা আলাদা সংসার। বাবা চলে যাওয়ার পর আমার বৃদ্ধা মা'কে ভাগাভাগি করে খেতে হয়। একেক ঘরে সপ্তাহ অন্তর খায়। আজ মেজো ভাইয়ের ঘরে খাওয়ার তারিখ ছিলো তার, তার মধ্যে মায়ের সাথে জুটেছি আমরা। আমাদের দেখে চোখ মুখে আন্ধার নেমেছে ভাবির। আমি দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে গেলাম। মা আমাদের শুকনো মুখ দেখে ঠিকই ধরেছে, আমরা আজ উপাস।
মা ভয়ে ভয়ে ভাবিকে বললো,
"ঘরে ভাত আছে বউম, ওদের একটু খেতে দেও না! মনে হচ্ছে তো কিছু খায়নি। "
"ভাত কি ঘরে জন্ম হয়? বেলা এগারোটা, এখন ভাত কই পাবো? মেয়ে, মেয়ের নাতিদের জন্য দরদ উতলে পড়ছে।"
মা মাথা নিচু করে নিলো। আমি ভাবির কথা শুনে মুখে হাসি টেনে বললাম, " আহ, মা থামো না! খেয়ে আসছি আমরা। ভাবি তুমি রাগ করো না!"
শত খোঁটার পরও পেটের দায়ে দুপুরে পেট ভরে ভাত খেলাম আমরা মা-ছেলে। বিকেলে রুমে বসে চুপিচুপি আমার ভাতিজিকে বার্গার খাওয়াচ্ছে ভাবি। এমন সময় আমার ছোট ছেলেটা তাদের রুমে ঢুকে পড়লো, বোনকে খেতে দেখে আমার বাচ্চাটার ও বার্গার খাওয়ার লোভ জাগলো। মামির কাছে গিয়ে বললো,
"ওগুলো কি মামি? আমাকে একটু খেতে দেও!"
ভাবি আমার ছেলেটাকে ধাক্কা দিয়ে কটমট করে বললো, "শয়তানের বাচ্চা! যা এখান থেকে সারাদিন শুধু খাই খাই, না জানি আমার মেয়েটার পেট খারাপ করে! তোর বাপকে গিয়ে বল কিনে দিতে, চৌদ্দ গোষ্ঠী সহ উঠেছে এখানে।"
আমার বাচ্চাটা ধা'ক্কা সামলাতে না পেরে দরজায় লেগে কপাল কেটে যায়। এদিকেই ওকে খুঁজতে আসছিলাম আমি, ভাবির কথা গুলো যেন র'ক্তা'ক্ত করছে আমার ভিতরটা। রাগের দুঃখে ছেলেটাকে দু'টো চড় বসিয়ে দিয়ে বললাম,
"শয়তানের বাচ্চা! জানো না তোর বাপ গরীব, অসুস্থ! তার ছেলে হয়ে তুই সারাদিন খাই খাই করো কেন? ম'র'তে পারিস না!
ভাবি মুখ বাঁকিয়ে বললো, "পেটে জুটে না ভাত, তেজ কত!"
পরক্ষণে আমাদের মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিলো। এতো অপমান সহ্য করতে না পেরে ছেলেকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললাম আমি। বিয়ের পর মেয়েদের বাপের বাড়ির আদর-যত্ন ডিজার্ভ করে স্বামীর টাকার উপর। আমার স্বামী আজ অসহায় দেখে অপমানের খামতি নেই আমার!
ভাইয়ের ঘরে লাঞ্ছণা-বঞ্চনা শুনে খাওয়ার চেয়ে স্বামীর ঘরে না খেয়ে থাকলেও শান্তি। আমি বিনা বাক্যে ছেলেদের নিয়ে রওয়ানা দিলাম। মা থাকতে বললো,মা জানে আমার ঘরে চাল নেই। আমি থাকলাম না। মা দিশেহারা হয়ে পড়লো, নাতি দু'টো না খেয়ে থাকবে তার।
ভাবি রুমে আছেন। এই সুযোগে মা রান্না ঘর গিয়ে, ভাবির রাখা চাল থেকে কিছু চাল চুপিচুপি পলিব্যাগে ভরছিলো। এরিমধ্যে ভাবি এসে পড়লো, আম্মাকে হাতে নাতে ধরলো। ভাইকে বিচার দিয়ে বললো,
"তোমার মা একটা চোর! চাল চোর! আমার সংসারে খাচ্ছে আবার চুরিও করছে। চুরি করে মেয়েকে দেওয়া হচ্ছে, না জানি এভাবে কতকিছু দিয়েছে আমার অগোচরে। এই চোরকে আমি আর খাওয়াতে পারবো না। "
অপমানে আমার বৃদ্ধা মায়ের চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে নোনা জল। আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে বললো,
"আমি ইচ্ছে করে চুরি করিনি বউ। আমার মেয়েটা না খেয়ে থাকছে, মা হয়ে এই ভাত কেমনে খাই কও? তোমাকে বললে তো, রাগ হইতা, কথা শুনাইয়া দিতা, এই ভয়ে আর বলিনি। আজ আমারে চোর বললা বউ? এটাতো আমারই ছেলের সংসার, মা হয়ে এইটুকু অধিকার কি আমার নেই?"
ভাবি আমাদের মা-মেয়েকে আরো কথা শুনিয়ে গজগজ করতে করতে জায়গা ত্যাগ করলো। আমি মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম,
"এমনটা আর করতে যেও না মা। আল্লাহ আমাদের রিজিকে খাবার রাখলে, একটা ব্যাবস্হা হবেই। চিন্তা করো না, তুমি ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়ার করো মা। আসছি আমি।"
ওইদিন ভাইয়ের ঘর ছাড়লাম। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, ম'রে গেলেও আর এখানে আসবো না।
সেদিন দোকান থেকে বাকিতে কিছু শুকনো পাউরুটি নিলাম, স্বামী সন্তানদের নিয়ে এটা দিয়ে দুইদিন কাটিয়ে দিলাম। পরদিন দেখি আমার মা কিছু চাল, ডাল নিয়ে হাজির। বড় ভাই ঔষধ খাওয়ার জন্য কিছু টাকা দিয়েছিলো, নিজে ঔষধ না কিনে এগুলো নিয়ে আসছে। পরমুহূর্তে দেখলাম, নিজের পোটলার ভিতর থেকে কিছু শুকনো টোস্ট, বিস্কুট বের করে নাতিদের খেতে দিচ্ছে। এই দু'দিন নিজের ভাগের টুকু না খেয়ে নাতিদের জন্য জমিয়েছে মা। আজ ওদের খাওয়াতে পেরে চোখে মুখে তৃপ্তির ছাপ তার। আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে ছলছল চোখে হেসে বললাম,
"মা তোমার লজ্জা নেই, তুমি আসলেই একটা চোর! খাবার চোর! আবার চুরি করেছো তুমি?"
মা মৃদু হেসে বললো," হ্যাঁ, আমি চোর! খাবার চোর! এতে আমার মোটেও লজ্জা লাগছে না। চুরি করে হলেও, সন্তানকে খাওয়াতে পারলে তবেই শান্তি লাগে। এ তুই বুঝবি না।"
(সমাপ্ত)
অণুগল্প -খাবার_চোর
লেখনীতে -শূন্য_চিঠি
- বউ শাশুড়ির ভালোবাসা
বিয়ের পরেরদিনেই আমার পি'রিয়ড শুরু হলো।অসহ্য পে'ট ব্যা'থায় সারা শরীর কাঁপছে
দরজায় দাড়িয়ে আমার শ্বাশুড়ি বললো " লোকজন তোমাকে দেখতে এসছে আর তুমি শুয়ে আছো? "
আমি কিছু না বলে বিছানায় উঠে বসলাম।শাশুড়ি মা বললেন " বাইরে আসো।জায়ানের চাচারা তোমাকে দেখতে এসছে "
এটা বলেই শাশুড়ি মা চলে গেলেন।আমি যে দাঁড়াবো সে শক্তিটুকু নেই।পে'ট চেপে ধরে উঠে দাড়ালাম।সবার সাথে হাসিমুখেই কথা বললাম।কথার মাঝে শাশুড়ি মা বললেন " বউমা,গুরুজনদের চা খাওয়াতে হবে না? "
" এক্ষুনি আনছি মা "
একথা বলে রান্নাঘরে গিয়ে চা বসিয়ে দিলাম।একেই তো পে'টের ব্যাথা তার ওপর রান্নাঘরে আগুনের তাপে আমার বেজায় অবস্থা।ট্রে তে করে চা নিয়ে একপা ফেলতেই আমার মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো।গরম চা হাতেই ঠা'স করে মেঝেতে পড়ে গেলাম।
জ্ঞান ফিরে দেখলাম আমার ঘরের বিছানায় শুয়ে আছি।শাশুড়ি মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।আমি উঠতে চাইলে শাশুড়ি মা বললো
" পড়ে গেলে কীভাবে?তুমি কি অসুস্থ? "
ওনাকে সত্যিটা বলতে ইতস্তত হতে লাগলো।অবশেষে বললাম " মা আমার পি'রিয়ড চলছে।রান্নাঘরের গরমে হঠাৎ মাথাটা চক্কর দিয়েছিলো "
শাশুড়ি মা বললেন " তো সেটা আগে বললেই হয়ে যেতো "
আমি ইতস্তত করে বললাম " আসলে মা বলতে লজ্জা করছিলো,তাই..."
শাশুড়ি মা রেগে বললেন " গালে চ'ড় বসিয়ে দিলে লজ্জা চলে যাবে পাজি মেয়ে "
ওনার কথায় আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম।এতোদিন জানতাম শাশুড়ি মায়ের মতো হয়।আমি মাথা ঘুরে পড়ে গেছি জেনেও উনি আমাকে এভাবে বলতে পারলেন? মনে মনে শাশুড়ি জাতির ওপর একরাশ লাঞ্ছনা ঢেলে দিলাম।
কিছুক্ষন পর আমার স্বামী জায়ান ফোন করে বললো
" তোমার কি খেতে ইচ্ছে করছে? "
" হঠাৎ এমন প্রশ্ন? "
" আহা বলোই না,আচার খাবে? না ফুসকা? আইসক্রিম নিয়ে যাই? দোকানে নতুন একটা আইসক্রিম তুলেছে "
" আচ্ছা "
কিছুক্ষণ পর জায়ান দুইহাত ভর্তি খাবার নিয়ে এলো।আমার পাশে বসে বললো
" কি হয়েছে তোমার? "
" আমার আবার কি হবে? "
" না মানে হঠাৎ মা ফোন করে বললো বউমার যা যা খেতে মন চাচ্ছে সেসব শুনে ওগুলো কিনে আন এক্ষুনি "
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম " মা এসব বলেছে? "
" হ্যা।আসতে একটু দেরি হয়েছে বলে মা ফোন করে সে কি রাগ! "
আমি শুধু মুচকি হেসে বললাম " ওইটা ভালোবাসার রাগ ছিলো।কে বলেছে শাশুড়ি মায়ের মতো হয় না? "
জায়ান মাথা চুলকে বললো " কিছুই তো বুঝতে পারছি না "
বিছানা ছেড়ে উঠে জায়ানের গা'লে একটা চু'মু দিয়ে মায়ের ঘরে এলাম।উনি টিভিতে সিরিয়াল দেখছেন।মায়ের পাশে কিছুক্ষণ বসে থেকে মাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।মা বললেন
" ও মাগো,এতো জোরে জড়িয়ে করছো কেন? ম'রে যাবো তো "
আমি মায়ের গা'লে চু'মু দিয়ে বললাম " না ছাড়বো না।সারাজীবন এভাবেই জড়িয়ে ধরে থাকবো।অন্য কাউকে তো ধরিনি,নিজের মাকেই জরিয়ে ধরেছি।কেন ছাড়বো হ্যা? "
" হয়েছে হয়েছে আর ঢং করতে হবে না "
" তখন শুধু শুধু কথা শোনালে কেন?ভেতরে ভেতরে তো এত্তো এত্তো ভালোবাসো,যত্ন করো "
মা অভিমানী স্বরে বললো " অসুস্থতার কথা লুকিয়েছো এজন্য।আমার থেকে কিছু লুকালে এভাবেই বকা দিবো "
" যথা আজ্ঞা রাজমাতা।এই বান্দা আর কোনোদিন কিছু লুকাবে না "
মা আমার গা'লে আদর করে বললো " পাগলি মেয়ে একটা "
" পাগলি হই আর যাই হই, তোমার'ই তো মেয়ে।আই লাভ ইউ শাশুড়ি মা।উপপস সরি,শুধু মা।কে বলছে তুমি আমার শাশুড়ি? তুমি তো আমার নিজের মা "
-গল্প আদর্শ_শাশুড়ি_মা