স্বাধীনতার সুখ কবিতা
আমি হব
-কাজী নুল ইসলাম
আমি হব সকাল বেলার পাখি
সবার আগে কুসুমবাগে
উঠব আমি ডাকি।
সূয্যি মামা জাগার আগে
উঠব আমি জেগে,
হয় নি সকাল, ঘুমো এখন,
মা বলবেন রেগে।
বলব আমি _আলসে মেয়ে
ঘুমিয়ে তুমি থাক,
হয় নি সকাল, তাই বলে কি
সকাল হবে না ক ?
আমরা যদি না জাগি মা
কেমনে সকাল হবে?
তােমার ছেলে উঠলে গাে মা
রাত পােহাবে তবে।
স্বাধীনতার সুখ
স্বাধীনতার সুখ
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই
"কুঁড়ে ঘরে থাকি কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহা সুখে অট্টালিকার পরে
তুমি কত কষ্ট পাও রােদ, বৃষ্টি ঝড়ে"
বাবুই হাসিয়া কহে, "সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হােক, তবু ভাই, পরের ও বাসা
নিজ হাতে গড়া মাের কাঁচা ঘর, খাসা"
কবিতা স্বাধীনতার সুখ
কবিতা নােটন নােটন পায়রাগুলি
নােটন নােটন পায়রাগুলি
ঝােটন বেঁধেছে,
ওপারেতে ছেলেমেয়ে
নাইতে নেমেছে।
দুই ধারে দুই রুই কাতলা
ভেসে উঠেছে,
কে দেখেছে কে দেখেছে
দাদা দেখেছে।
দাদার হাতে কলম ছিল
ছুড়ে মেরেছে,
উঃ বড্ড লেগেছে।
স্বাধীনতার সুখ কবিতা আবৃত্তি
কাজের আনন্দ
-নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য
মৌমাছি, মৌমাছি
কোথা যাও নাচি নাচি
দাড়াও না একবার ভাই।
ওই ফুল ফোটে বনে
যাই মধু আহরণে
দাঁড়াবার সময় তাে নাই।
ছােট পাখি, ছোট পাখি
কিচিমিচি ডাকি ডাকি
কোথা যাও, বলে যাও শুনি।
এখন না কব কথা
আনিয়াছি তৃণলতা
আপনার বাসা আগে বুনি।
স্বাধীনতার সুখ কবিতার প্রশ্ন উত্তর
আমাদের গ্রাম
-বন্দে আলী মিঞা
আমাদের ছােট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর
থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।
পাড়ার সকল ছেলে মােরা ভাই ভাই
একসাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।
হিংসা ও মারামারি কভু নাহি করি,
পিতা-মাতা গুরুজনে সদা মোরা ডরি।
আমাদের ছাট গ্রাম মায়ের সমান,
আলাে দিয়ে বায়ু দিয়ে বাঁচাইছে প্রাণ।
মাঠভরা ধান আর জলভরা দিঘি,
চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি।
আমগাছ জামগাছ বাঁশ ঝাড় যেন,
মিলে মিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন।
সকালে সােনার রবি পূব দিকে ওঠে
পাখি ডাকে, বায়ু বয়, নানা ফুল ফোটে।
স্বাধীনতার সুখ কবিতার মূলভাব
আমার পণ
-মদনমোহন তর্কালংকার
সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি,
সারা দিন আমি যেন ভালাে হয়ে চলি।
আদেশ করেন যাহা মাের গুরুজনে,
আমি যেন সেই কাজ করি ভালাে মনে।
ভাইবােন সকলেরে যেন ভালােবাসি,
একসাথে থাকি যেন সবে মিলেমিশি।
ভালাে ছেলেদের সাথে মিশে করি থেলা,
পাঠের সময় যেন নাহি করি হেলা।
সুখী যেন নাহি হই আর কারাে দুখে,
মিছে কথা কভু যেন নাহি আসে মুখে।
সাবধানে যেন লােভ সামলিয়ে থাকি,
কিছুতে কাহারে যেন নাহি দিই ফাঁকি।
ঝগড়া না করি যেন কভু কোরো সনে,
সকালে উঠিয়া এই বলি মনে মনে।
স্বাধীনতার সুখ ছড়া
মােদের গরব, মােদের আশা
মােদের গরব, মােদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা।
তােমার কোলে, তােমার বােলে, কতই শান্তি ভালবাসা।
কি যাদু বাংলা গানে- গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে,
এমন কোথা আর আছে গাে৷
গেয়ে গান নাচে বাউল, গান গেয়ে ধান কাটে চাষা।।
ঐ ভাষাতেই নিতাই গােরা, আনল দেশে ভক্তি-ধারা,
মরি হায়, হায় রে!
আছে কই এমন ভাষা, এমন দুঃখ-শ্রান্তি-নাশা।
বিদ্যাপতি, চপ্তী, গোবিন, হেম, মধু, বক্ষিম, নবীন-
আরও কত মধুপ গাে!
ঐ ফুলেরি মধুর রসে, বাঁধলো সুখে মধুর বাসা।।
বাজিয়ে রবি তােমার বীণে, আনলাে মালা জগৎ জিনে-
গরব কোথায় রাখি গো!
তােমার চরণ-তীর্থে আজি, জগৎ করে যাওয়া-আসা
ওই ভাষাতেই প্রথম বোলে, ডাকনু মায়ের "মা", "মা" বলে;
ওই ভাষাতেই বলবাে হরি, সাঙ্গ হলে কাঁদা-হাসা।।
স্বাধীনতার সুখ কবিতাটি কার লেখা
ট্রেন
-শামসুর রাহমান
ঝক ঝক ঝক ট্রেন চলেছে
রাত দুপুরে অই।
ট্রেন চলেছে, ট্রেন চলেছে
ট্রেনের বাড়ি কই?
একটু জিরােয়, ফের ছুটে যায়
মাঠ পেরুলেই বন।
পুলের ওপর বাজনা বাজে
ঝন ঝনাঝন ঝন।
দেশ বিদেশে বেড়ায় ঘুরে
নেইকো ঘােরার শেষ।
ইচ্ছে হলেই বাজায় বাঁশি,
দিন কেটে যায় বেশ।
থামবে হঠাৎ মজার গাড়ি
একটু কেশে খক।
আমায় নিয়ে ছুটবে আবার
ঝক ঝকাঝক ঝক।