পুরুষ নিয়ে উক্তি
একটা সময় আসে পুরুষ মানুষের জীবনে, যখন চারপাশের শব্দগুলো একটু বেশিই কানে বাজে—"কি করছো এখন?", "কি করবা সামনে?", "জীবনে দাঁড়াতে হবে না?" এই সময়টা ঠিক একরকম না বলা চাপের মতো।
এই সময় সে দাঁড়িয়ে থাকে এক দ্বিধার মোহনায়—একপাশে ক্যারিয়ারের স্বপ্ন, অন্য পাশে ভালোবাসা, সময়, আনন্দ আর জীবনের ছোট ছোট ইচ্ছেগুলো।
ছোটবেলায় যার সঙ্গে খেলেছে, কলেজে যার জন্য অপেক্ষায় থেকেছে, আর যার জন্য মনের কোণে আবেগ জমা হয়েছে—তার কাছে সময় দিতে ইচ্ছা করে। একসাথে সিনেমা দেখা, রিকশা করে ঘোরা, কফি শপে বসে ভবিষ্যতের স্বপ্ন বোনা—সবচাইতে সুন্দর লাগে।
কিন্তু ঠিক তখনই মাথার মধ্যে গর্জে ওঠে বাস্তবতার কণ্ঠস্বর।
"জীবনে টাকা না থাকলে ভালোবাসা টেকে না।"
"স্বপ্ন পূরণ করতে হলে আগে নিজের একটা অবস্থান তৈরি করতে হবে।"
"বেকার ছেলেদের কেউ দাম দেয় না।"
এই সময়টা বড়ই সংকটের। কারণ, একজন পুরুষ জানে—ভালোবাসা দিতে চাইলে আগে নিজের হাতে কিছু থাকতে হয়। প্রেমে শুধু আবেগ দিয়ে সংসার চলে না। তাই যে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। বন্ধুরা ডেকে বলে, “চল ঘুরতে যাই”, সে না করে দেয়। প্রেমিকা বলে, “তোমার সময় কই?”, সে চুপ করে থাকে।
সে রাত জেগে পড়াশোনা করে, চাকরির প্রস্তুতি নেয়, নিজের স্কিল শিখে। কেউ তাকে বাহবা দেয় না, কেউ বোঝে না তার আত্মত্যাগ। সবাই শুধু চায়—একজন সফল পুরুষ। কিন্তু সেই সাফল্যের পেছনে যে কতশত ত্যাগ আর নিঃসঙ্গ রাত, সেটা কেউ জানে না।
সে তার ভালোবাসার মানুষকে হয়তো দূরে ঠেলে দেয়, কিন্তু সেটা ঘৃণার জন্য না, বরং ভালোবাসার গভীরতা থেকেই। কারণ সে চায়, যখন তোমাকে পাশে রাখবে, তখন তোমার জন্য কিছু করতে পারুক, মাথা উঁচু করে বলতে পারুক, “এই আমি, তোমার জন্য তৈরি হয়ে এসেছি।”
এই সময়টাই একজন পুরুষকে সত্যিকারের মানুষ করে তোলে। সে শিখে যায় কিভাবে স্বপ্নকে সময়ের কাছে সঁপে দিতে হয়, কিভাবে হাসি মুখে কষ্ট সহ্য করতে হয়, আর কিভাবে একা হেঁটে গিয়ে একদিন নিজের জায়গা তৈরি করতে হয়।
এই সময়টা খুব নীরব, কিন্তু ভয়ংকর শক্তিশালী।
তাই যদি কোনো পুরুষকে দেখো যে একা, চুপচাপ, তার কাছে যাও—সে হয়তো ঠিক এই সময়টা পার করছে। ভালোবাসা চায়, কিন্তু বাস্তবতা বোঝে।
আর একদিন ঠিক সে ফিরে আসবে—হয় একজন সফল মানুষ হয়ে, নয়তো একজন থেমে যাওয়া প্রেমিক হয়ে।
তুমি কি তখনো পাশে থাকবে? নাকি আমরাও সবাই টাকার পেছনে ছুটে হারিয়ে ফেলবো একটা মানুষের নীরব আত্মত্যাগ?