গর্ভবতী নারী
গর্ভবতী নারী হচ্ছেন সেই নারী, যার শরীরে একটি নতুন প্রাণ বেড়ে উঠছে। এই সময়টি শুধুই একজন নারীর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ নয়, বরং একটি নতুন জীবনের শুরু। গর্ভাবস্থায় নারীর শরীরে নানা হরমোন পরিবর্তন হয়, যার কারণে তার মনের আচরণ, রুচি, শরীরের গঠন ও অনুভূতিতে ভিন্নতা দেখা যায়। এই সময় মায়েরা সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন, হালকা থেকে মাঝারি বমিভাব, ঘুমে ব্যাঘাত কিংবা অতিরিক্ত আবেগপ্রবণতা—এসব স্বাভাবিক বিষয়। একজন গর্ভবতী নারীকে সবসময় ভালোবাসা, যত্ন ও মানসিক শান্তি দেওয়া খুব প্রয়োজন।
গর্ভবতী নারীর ঘুমানোর নিয়ম
গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর সময় শরীরের ভঙ্গি খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি মায়ের আরাম ও শিশুর নিরাপত্তার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। ডাক্তাররা সাধারণত পরামর্শ দেন, গর্ভবতী নারীরা বাম পাশে শুয়ে ঘুমান। বাম পাশে ঘুমালে গর্ভফুলের রক্ত প্রবাহ ভালো হয় এবং বাচ্চার বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয়। ডান পাশে বা পিঠের উপর শোয়া বেশি সময় ধরে হলে পেটে চাপ পড়ে এবং রক্ত চলাচল ব্যাহত হতে পারে। তাই মাঝেমধ্যে পাশ পরিবর্তন করা গেলেও মূলত বাম পাশে শোয়া শ্রেয়।
গর্ভবতী নারীর পেটের বাম পার্শ্বে ব্যথা
গর্ভকালীন সময়ে অনেক নারী পেটের একপাশে বিশেষ করে বাম পাশে ব্যথা অনুভব করেন। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। অনেক সময় এটি গ্যাসের কারণে হতে পারে, আবার জরায়ু প্রসারণ বা শরীরের ভিতরের লিগামেন্ট টানেও এমনটা হয়। ব্যথা যদি হালকা হয় এবং সময়ের সাথে কমে যায়, তবে তা সাধারণত চিন্তার কিছু নয়। তবে ব্যথা যদি হঠাৎ বেশি হয়, কাঁপুনি বা রক্তপাতের মতো উপসর্গ থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গর্ভবতী নারীরা স্বপ্নে সাপ দেখলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় মহিলারা অনেক সময় অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেন—এমনকি ভয়ংকর সাপের স্বপ্নও। এটি সাধারণত মানসিক উদ্বেগ, চাপ বা হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে হতে পারে। বাস্তবে এই ধরনের স্বপ্নের সাথে কোনো অশুভ বিষয় জড়িত নেই। বরং এটি মায়ের চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন হতে পারে। এমন স্বপ্ন দেখলে ভয় না পেয়ে মনকে শান্ত রাখা, নিয়মিত নামাজ বা প্রার্থনা করা এবং স্বজনদের সাথে মনের কথা ভাগ করে নেওয়া উচিত।
গর্ভবতী নারীর খাবার ও পুষ্টি
এই সময়ে একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারে থাকতে হবে পর্যাপ্ত ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন ও ফাইবার। সকালে উঠে হালকা কিছু খাওয়া ভালো, যেমন – ফলমূল, দুধ বা বাদাম। দুপুরে ভাত, মাছ বা মুরগির মাংস, শাকসবজি, ডাল খাওয়া উচিত। রাতে হালকা খাবার খেলে ঘুম ভালো হয়। অতিরিক্ত ঝাল, ভাজা বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। এছাড়া প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।