সৌদি প্রবাসীদের
আলম মিয়া বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার দিন মায়ের চোখে পানি, বাবার মুখে আশীর্বাদ—“ভালো থাকিস বাবা।” সৌদি পৌঁছে প্রথম রাতেই সে বুঝে ফেলে, জীবনটা আর আগের মতো থাকছে না। চারতলা বিল্ডিংয়ের ছাদে কাজ, নিচে তাকালেই ভয়। কিন্তু ভয় পেলে চলবে না—বাড়ির ঋণটা তো আর মাফ হবে না। প্রতিদিন শরীরের ঘাম ফেলে যে টাকা রোজগার হয়, সেটা গেলেই শুরু হয় বাড়ির খরচ মেটানোর যুদ্ধ।
---
সৌদি প্রবাসী খবর
নিউজে আসে—এক বাংলাদেশি শ্রমিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করে স্ট্রোক করে মারা গেছে। কেউ জানে না, তার নাম ছিল আসিফ। পাঁচ বছর ধরে এক ছেলের মুখ দেখতে পায়নি। দেশে ফোন করে শুধু শুনতো, “বাবা, কবে আসবা?”—এই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে সে হারিয়ে যায় একদিন। খবর হয়ে ফিরে আসে তার শেষ পরিচয়।
---
সৌদি প্রবাসী নিউজ
সৌদি আরবে দুর্ঘটনায় আহত বাংলাদেশি কামাল হোসেন হাসপাতালে। হাতটা কেটে ফেলতে হয়েছে। পরিবারের কেউ জানে না—সবাই ধরে নিচ্ছে, সে নিশ্চয় ভালো আছে। সে বিছানায় শুয়ে শুধু ভাবছে, “আর কী দিয়ে চলবে সংসার? আমি তো হাত হারালাম, তাদের স্বপ্নও হারালাম!”
---
সৌদি প্রবাসীর বউ
রিনা প্রতিদিন রাতে দরজা বন্ধ করে চুপচাপ স্বামীর ছবি দেখে। সাত বছর হলো রফিক দেশে আসেনি। আগে প্রতিদিন ফোন করতো, এখন মাসে একবার। মন খারাপ হলে রিনা শুধু বলে—“তুই কী আমায় ভুলে গেছিস?” কিন্তু জবাব আসে না। ফোনের ওপারে একটা চুপচাপ, কর্মব্যস্ত, অবহেলায় পুড়ে যাওয়া মানুষ।
---
সৌদি প্রবাসী
মাহবুবের দিন শুরু হয় ফজরের আগে। ঘুম ভাঙে শ্রমিকদের চিৎকারে। নাস্তা—একটা শুকনো রুটি আর দুধ ছাড়া চা। সকাল থেকে রাত অবধি কাজ, ঘুম—শুধু কয়েক ঘণ্টা। জীবন যেন একটা লাইনচিহ্ন—শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই রকম কষ্ট। কিন্তু তবুও সে বলে, “আমার ভাইয়ের পড়ালেখা যেন থেমে না যায়।”
---
সৌদি প্রবাসীর বেতন ২৫০০ রিয়াল
২৫০০ রিয়াল বেতন শুনে আত্মীয়রা ভাবে, “বাহ, তোকে তো কোটিপতি বানাইছে!” কিন্তু শামীম জানে, বাসাভাড়া, ভিসার টাকা, খাওয়া, ঋণের কিস্তি—সব মিটিয়ে হাতে থাকে ১০০ রিয়াল। সেই টাকা দিয়েই মাস চলে, নিজের জন্য এক বোতল পানি কিনতেও দু’বার ভাবতে হয়। কিন্তু কাউকে কষ্টটা বোঝাতে পারে না।
---
কষ্টের বাস্তব জীবনের গল্প
সুলতানা সৌদিতে গৃহকর্মী। প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা কাজ, কোনো ছুটি নেই। ফোন করার সময় নেই, ঘুমানোর সময় নেই। মালিক যদি একটু গলা উঁচু করে, চোখের পানি লুকিয়ে ফেলে দেয় ঘরের কোণায়। দেশে ছেলেটা অসুস্থ, কিন্তু টাকা না পাঠালে চলবে কীভাবে? একদিন একা রুমে বসে বলে—“আমি কি মানুষ নই?”